পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে উনার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ তথা ঈদ পালন করা ফরজ, এ বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার দলীল।

পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ তথা ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উপলক্ষে উনার জন্য খুশি মুবারক প্রকাশ করা তথা ঈদ পালন করা ফরজ।

সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, শাফেউল মুজনেবীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি হচ্ছেন সমস্ত কায়িনাত বা সৃষ্টি জগতের মূল উৎস। তিনি মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার সকল নিয়ামত মুবারক উনার উৎস। উনার সন্তুষ্টি মুবারক ব্যতিত মহান আল্লাহ পাক উনার সন্তুষ্টি মুবারক কখনোই পাওয়া সম্ভব নয়। উনাকে যে ব্যক্তি মুহব্বত মুবারক করে মহান আল্লাহ পাকে তাকে মুহব্বত করেন। আর উনাকে মুহব্বত মুবারক না করে কারো পক্ষে মু’মিন হওয়া কষ্মিনকালেও সম্ভব নয়।

এই বিষয়ে পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন-
 
لاَ يُؤْمِنُ أَحَدُكُمْ حَتَّى أَكُونَ أَحَبَّ إِلَيْهِ مِنْ وَلَدِهِ وَوَالِدِهِ وَالنَّاسِ أَجْمَعِينَ وفي رواية من ماله و نفسه

অর্থ: “কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত সে তার পিতা-মাতা, সন্তান সন্তুতি, এবং সমস্ত মানুষ অপেক্ষা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বেশি মুহব্বত না করবে। অন্য বর্ননায় এসেছে, তার ধন সম্পদ এবং জীবনের চাইতে বেশি মুহব্বত না করবে।”
(বুখারী শরীফ ১/৭-কিতাবুল ঈমান- হাদীস নম্বর ১৪ এবং ১৫)

এই পবিত্র সহীহ হাদীস শরীফ থেকেই বুঝা গেলো, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সবকিছুর চাইতে বেশি মুহব্বত করাই হচ্ছে ঈমান। আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মুহব্বতে উনার আগমন উপলক্ষে খুশি মুবারক প্রকাশ করাটাই হচ্ছে ঈমানদাগণ উনাদের বৈশিষ্ট্য। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন উপলক্ষে খুশি মুবারক প্রকাশ করেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই, খুশি প্রকাশ করেন সকল ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনারা, এক কথায় সমস্ত সৃষ্টি জগৎ।

হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ উনার দিন সব চাইতে বেশি কষ্ট পেয়েছিলো কে জানেন? সব চাইতে বেশি কষ্ট পেয়েছিলো ইবলিশ শয়তান । সে এতোটাই কষ্ট পেয়েছিল যে, কষ্টে সে রীতিমত কান্না করছে।

حكى السهيلي عن تفسير بقي بن مخلد الحافظ : أن إبليس رن أربع رنات; حين لعن ، وحين أهبط ، وحين ولد رسول الله صلى الله عليه وسلم ، وحين أنزلت الفاتحة
“শয়তান চার বার উচ্চস্বরে কেঁদেছিল ,প্রথম বার যখন মহান আল্লাহ তায়ালা তাকে অভিশপ্ত আখ্যা দেন; দ্বিতীয়বার যখন তাকে বেহেস্ত থেকে বের করে দেয়া হয়। তৃতীয়বার, যখন হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেলাদত(আগমণ) শরীফ হয়। এবং চতুর্থবার যখন সূরা ফাতেহা শরীফ নাযেল হয়।”
(দলীল: আল-বেদায়া ওয়ান নেহায়া-২য় খণ্ড ২৬৬, ২৬৭,পৃষ্ঠা লেখক: আবুল ফিদা হাফিজ ইবনে কাছির আদ দামেষ্কী রহমতুল্লাহি আলাইহি। প্রকাশনা: মাকতাবাতুল মা’রেফা, বয়রুত লেবানন।)

‘ঈদ’(عيد) অর্থ খুশি বা আনন্দ প্রকাশ করা। আর ‘মীলাদ’(ميلاد) অর্থ জন্মের সময় বা দিন। ‘আন নাবিইয়্য’(النبى) শব্দ দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বুঝানো হয়। কাজেই আভিধানিক অর্থে ‘ঈদু মীলাদিন নাবিইয়ি’(عيد ميلاد النبى) বলতে নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ-উনার সম্মানার্থে বেলাদত শরীফ উপলক্ষে খুশি মুবারক প্রকাশ করাকেই বুঝায়।

আর পারিভাষিক অর্থে ‘ঈদে মীলাদুন নবী’ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিলাদত শরীফ দিবস উপলক্ষে খুশি মুবারক প্রকাশ করা, উনার ছানা-ছিফত, ফাযায়িল-ফযীলত, শান-মান মুবারক বর্ণনা করা, উনার প্রতি ছলাত-সালাম ও তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করা, উনার পূত পবিত্রতম জীবনী মুবারক-উনার সামগ্রিক বিষয়ের আলোচনা মুবারক কে বুঝায়।

এবার দেখুন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন প্রসঙ্গে মু’মিন মুসলমানদের কি আদেশ মুবারক করেছেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْـمَتِهٖ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ

অর্থ : হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ! আপনি উম্মাহকে বলে দিন , মহান আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ ও রহমত( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মুবারক উনার সজন্য তারা যেন খুশি প্রকাশ করে। এ খুশি প্রকাশ করাটা সবচাইতে উত্তম, যা তারা সঞ্চয় করে রাখে !” (পবিত্র সূরা ইউনূছ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮)

উক্ত আয়াত শরীফ উনার তাফসিরে বিখ্যাত মুফাসসির, সমগ্র মাদ্রাসায় যিনার তাফসীর পড়ানো হয়, হাফিযে হাদীস, আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়ূতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন–

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ فِي الْاٰيَةِ فَضْلِ اللهِ اَلْعِلْمُ وَ رَحْـمَتِه مُـحَمَّدٌ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللهُ تَعَالٰي وَمَا اَرْسَلْنَاكَ اِلَّا رَحْـمَةً لّلْعٰلَمِيْنَ

অর্থ : হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, এ আয়াত শরীফের তাফসিরে এখানে আল্লাহ পাক উনার অনুগ্রহ বলতে ‘ইলিম’ বুঝানো হয়েছে। আর রহমত দ্বারা বুঝানো হয়েছে ‘হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম’ উনাকে। যেমন, আল্লাহ পাক বলেন, আমিতো আপনাকে তামাম আলমের জন্য রহমত স্বরূপ প্রেরন করেছি।”
দলীল-
√তাফসীরে দূররুল মানছুর –১০নংসূরা–১১পারা- সূরা ইউনূছ ৫৮আয়াত।
√তাফসীরে রুহুল মা’য়ানী।
√তাফসীরে কবীর।

তাফসীরে রূহুল মায়ানী ৬ষ্ঠ খন্ড ১৪১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ্য রয়েছে,

اخرج ابو الشيخ عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما ان الفضل العلم و الرحمة محمد صلى الله عليه و سلم

অর্থ: হযরত আবুশ শায়েখ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত “নিশ্চয়ই “ফদ্বল” দ্বারা উদ্দেশ্য ইলম, আর ‘রহমত’ দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”।

তাহলে দেখা যাচ্ছে ঈদ পালন করাটা মহান আল্লাহ পাক উনারই আদেশ। আর আদেশ সূচক বাক্য দ্বারা ফরজ এবং ওয়াজিব সাব্যস্ত হয়।

এই বিষয়ে ঊছুলে ফিক্বাহ উনার সমস্ত কিতাবেই উল্লেখ আছে যে,
الامر للوجوب
অর্থাৎ আদেশসূচক বাক্য দ্বারা সাধারণত ফরয-ওয়জিব সাব্যস্ত হয়ে থাকে। যেমন উছুলুশ শাশী কিতাবের ‘কিতাবুল্লাহ’ অধ্যায়ের ‘আমর’ পরিচ্ছেদে বর্ণিত আছে,
والصحيح من المذهب ان موجبه الوجوب

অর্থ: “ আমাদের হানাফী মাযহাবের বিশুদ্ধ মত হলো- নিশ্চয় কুরআন শরীফ- এর আমর বা নিদর্শনগুলো পালন করা ফরজ বা ওয়াজিব। যেমন পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,

اقيموا الصلوة
অর্থাৎ “তোমরা নামায আদায় করো।” পবিত্র কুরআন শরীফ উনার এ নির্দেশসূচক বাক্য দ্বারাই পবিত্র নামায ফরয সাব্যস্ত হয়েছে।

অনুরূপ পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে,
واعفوا للحى
অর্থাৎ “তোমরা (পুরুষরা) দাড়ি লম্বা করো।” পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার এ নির্দেশসূচক বাক্য দ্বারাই কমপক্ষে এক মুষ্ঠি পরিমাণ দাড়ি রাখা ফরয সাব্যস্ত হয়েছে।

তদ্রুপ সূরা ইউনূছ শরীফ উনার ৫৮নং আয়াত শরীফ উনার فليفرحوا বা খুশি মুবারক প্রকাশ করা বা ঈদ পালন করো এটা আদেশ সূচক বাক্য। এ আদেশ মুবারক এর দ্বারাই খুশি মুবারক প্রকাশ করা বা ঈদ পালন করা ফরজ ও ওয়াজিব প্রমানিত হয়। সুবহানাল্লাহ্ !

এছাড়াও পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অনেক জায়গায় মহান আল্লাহ পাক ঈদ পালন করতে বলেছেন, উনার প্রদত্ত নিয়ামতক মুবারক স্মরন করতে বলেছেন। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন,

اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ

অর্থ :“তোমাদের যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে, তোমরা সে নিয়ামতকে স্মরন কর।” (সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র  আয়াত  শরীফ ১০৩)

প্রশ্ন হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার সবচাইতে বড় নিয়ামত কি ?
এ ব্যাপারে সমস্ত জগৎবাসী একমত যে, মহান আল্লাহ পাক উনার সবচাইতে বড় নিয়মত হচ্ছেন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি” শুধু তাই নয় সমস্ত জাহানের সকল নিয়মাত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকেই হাদীয়া মুবারক করা হয়েছে। আর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন “আননি’মাতিল কুবরা আলাল আলাম”। অর্থাৎ, সমস্ত কায়িনাতের সবচাইতে বড় নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ্ !

মহান আল্লাহ পাক সূরা আল ইমরান শরীফ উনার ১০৩ নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে সেটাই বলছেন, তোমাদের যে নিয়ামত ( হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দেয়া হয়েছে, তোমরা সে নিয়ামত উনার যিকির করো, স্বরন করো, আলোচনা করো, খুশি প্রকাশ করো। সুবহানাল্লাহ্ !

সূতরাং উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমেই বুঝা যাচ্ছে, সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে উনার স্বরনে খুশি মুবারক প্রকাশ করা মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ মুবারক।

আর বিশেষ নিয়ামত প্রাপ্তির দিন যে ঈদের দিন সেটা স্পষ্ট কুরআন শরীফ উনার মধ্যেই আছে। মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ মুবারক করেন,

اللَّهُمَّ رَبَّنَا أَنزِلْ عَلَيْنَا مَائِدَةً مِّنَ السَّمَاءِ تَكُونُ لَنَا عِيدًا لِّأَوَّلِنَا وَآخِرِنَا وَآيَةً مِّنكَ ۖ وَارْزُقْنَا وَأَنتَ خَيْرُ الرَّازِقِينَ

অর্থ: “আয় আমাদের রব আল্লাহ পাক! আমাদের জন্য আপনি আসমান হতে (বেহেশতী খাদ্যের) খাদ্যসহ একটি খাঞ্চা নাযিল করুন। খাঞ্চা নাযিলের উপলক্ষটি অর্থাৎ খাদ্যসহ খাঞ্চাটি যেদিন নাযিল হবে সেদিনটি আমাদের জন্য, আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ (খুশি) স্বরূপ হবে এবং আপনার পক্ষ হতে একটি নিদর্শন হবে। আমাদেরকে রিযিক দান করুন। নিশ্চয় আপনিই উত্তম রিযিকদাতা।( পবিত্র  সূরা মায়িদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ১১৪)

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে উল্লিখিত হয়েছে, হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি উনার উম্মতের জন্য আসমান থেকে একটি খাঞ্চা ভর্তি খাবার চাইলেন, এবং এই নিয়ামত পূর্ন খাবার নাযিল হওয়ার দিনটা উনার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সকলের জন্য ঈদ স্বরুপ হবে বললেন। এই খাদ্য সহ খাঞ্চা নাযিল হওয়ার দিন যদি ঈদের দিন হয়, তাহলে সমগ্র জগৎ এর নিয়ামত, সকল নিয়ামতের মূল,হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন এর দিন মুবারক কি ঈদ হবেনা? এই দিনে কি খুশি করা যাবে না ??

অবশ্যই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের দিন ঈদ হবে, শুধু তাই না বরং কুল কায়িনাতের সর্বশ্রেষ্ঠ ঈদ তথা ‘সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ’ হবে। সুবহানাল্লাহ্ !!

পবিত্র কুরআন শরীফ উনার অসংখ্য স্থানে নূরে মুজাসসাম,হাবীবুল্লাহ,সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন মুবারক উনার সুসংবাদ দেয়া হয়েছে এবং উনার আগমন মুবারক উপলক্ষে শুকরিয়া আদায় এবং ঈদ পালন করার কথা স্পষ্ট বর্ননা করা হয়েছে !

মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার প্রিয়তম হাবীব, হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন সম্পর্কে অনেক আয়াত শরীফ নাজিল করেছেন। যেমন,

إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا ◌ لِّتُؤْمِنُوا بِاللَّهِ وَرَسُولِهِ وَتُعَزِّرُوهُ وَتُوَقِّرُوهُ وَتُسَبِّحُوهُ بُكْرَةً وَأَصِيلًا

অর্থ : “হে আমার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে প্রেরণ করেছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারীরূপে। অতএব, তোমরা (উম্মতরা) মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি ঈমান আনো এবং তোমরা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক করো, সম্মান মুবারক করো ও সকাল-সন্ধ্যা অর্থাৎ সদা-সর্বদা উনার ছানা-ছিফত মুবারক করো।” (পবিত্র সূরা ফাতহ শরীফ :পবিত্র আয়াত শরীফ ৮-৯)

لَقَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَّحِيمٌ
অর্থ : তোমাদের কাছে তোমাদের জন্য একজন রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এসেছেন, তোমাদের দুঃখ-কষ্ট উনার কাছে বেদনাদায়ক, তিনি তোমাদের ভালাই চান,মু’মিনদের প্রতি স্নেহশীলএবং দয়ালু।” (পবিত্র  সূরা তাওবা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১২৮)

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ
অর্থ :“হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি আপনাকে সমস্ত কায়িনাতের জন্য রহমত হিসাবে পাঠিয়েছি।” (পবিত্র সূরা আম্বিয়া শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৭)

لَقَدْ مَنَّ اللَّهُ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ إِذْ بَعَثَ فِيهِمْ رَسُولًا مِّنْ أَنفُسِهِمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ

অর্থ :“নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক মু’মিনদের প্রতি ইহসান করেছেন যে, তিনি তাদের মাঝে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাঠিয়েছেন, যিনি তাদেরকে আল্লাহ পাক উনার আয়াত শরীফ সমূহ তিলাওয়াত করে শোনান এবং তাদের অন্তর সমূহকে পরিশুদ্ধ করেন এবং তাদের কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেন” (পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৬৪)

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا◌ وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُّنِيرًا

অর্থ : “হে আমার হবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! নিশ্চয়ই আমি আপনাকে সাক্ষীদাতা, সুসংবাদ দাতা, ভয় প্রদর্শনকারী এবং আমার নির্দেশে আমার দিকে আহ্বানকারী ও নূরানী প্রদীপ রুপে প্রেরন করেছিঅ” ( পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ :পবিত্র আয়াত শরীফ ৪৫,৪৬ )

قَدْ جَاءَكُم مِّنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُّبِينٌ

অর্থ :“নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এক মহান নূর ( হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এসেছেন।” (পবিত্র সূরা মায়েদা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫)

وَإِذْ أَخَذَ اللَّهُ مِيثَاقَ النَّبِيِّينَ لَمَا آتَيْتُكُم مِّن كِتَابٍ وَحِكْمَةٍ ثُمَّ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مُّصَدِّقٌ لِّمَا مَعَكُمْ لَتُؤْمِنُنَّ بِهِ وَلَتَنصُرُنَّهُ ۚ قَالَ أَأَقْرَرْتُمْ وَأَخَذْتُمْ عَلَىٰ ذَٰلِكُمْ إِصْرِي ۖ قَالُوا أَقْرَرْنَا ۚ قَالَ فَاشْهَدُوا وَأَنَا مَعَكُم مِّنَ الشَّاهِدِينَ

অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত নবী- রসূল আলাইহিমুস সালামগন উনাদের থেকে এ মর্মে ওয়াদা নিলেন যে, আমি আপনাদের কিতাব ও হিকমত হাদিয়া করবো। অতঃপর আপনাদের প্রদত্ত কিতাবের সত্য প্রতিপাদনকারী হিসাবে একজন রসূল (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আগমন করবেন ! আপনারা অবশ্যই উনার প্রতি ঈমান আনবেন এবং উনাকে পেলে খিদমত করবেন ! মহান আল্লাহ পাক বললেন, আপনারা কি আমার এ ওয়াদা স্বীকার ও গ্রহণ করলেন ? উনারা বললেন, হ্যাঁ, আমরা স্বীকার করে নিলাম। তখন আল্লাহ পাক বললেন, তাহলে আপনারা সাক্ষী থাকুন এবং আমিও আপনাদের সাথে সাক্ষী রইলাম”
(পবিত্র সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৮১)

উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ ছাড়াও আরো অনেক আয়াত শরীফে রহমাতুল্লিল আলামীন, হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমনের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে ! আর উনার আগমন উপলক্ষে ঈদ পালন করার কথা স্পষ্ট ভাবে কুরআন শরীফে ঘোষণা করে দিয়েছেন —

يَا اَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مّن رَّبّكُمْ وَشِفَاءٌ لّمَا فِي الصُّدُورِ وَهُدًى وَرَحْـمَةٌ لّلْمُؤْمِنِيْنَ ◌ قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْـمَتِه فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مّـمَّا يَـجْمَعُوْنَ

অর্থ: “হে মানবজাতি! অবশ্যই তোমাদের মধ্যে মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এসেছেন মহান নছীহতকারী, তোমাদের অন্তরের সকল ব্যাধিসমূহ দূরকারী, মহান হিদায়েত ও ঈমানদারদের জন্য মহান রহমত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি বলে দিন, তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার দয়া, ইহসান ও রহমত (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পেয়ে) উনার জন্য ঈদ উদযাপন তথা খুশি প্রকাশ করো। তোমরা যতো কিছুই করোনা কেনো তিনিই হচ্ছেন সমগ্র কায়িনাতের জন্য সবচেয়ে বড় ও সর্বোত্তম নিয়ামত।” (পবিত্র  সূরা ইউনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭- ৫৮)

তাফসীরে রূহুল মায়ানী ৬ষ্ঠ খন্ড ১৪১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ্য রয়েছে,

اخرج ابو الشيخ عن حضرت ابن عباس رضى الله تعالى عنهما ان الفضل العلم و الرحمة محمد صلى الله عليه و سلم

অর্থ: হযরত আবুশ শায়েখ রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত “নিশ্চয়ই “ফদ্বল” দ্বারা উদ্দেশ্য ইলম, আর ‘রহমত’ দ্বারা নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।”।

এ আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় হাফিজে হাদীস, ইমামুল মুফাসসিরিন জালালুদ্দীন সূয়ুতী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার বরাত দিয়ে বলেন-

عَنْ حَضْرَتْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ فِي الْاٰيَةِ فَضْلِ اللهِ اَلْعِلْمُ وَ رَحْـمَتِهٖ مُـحَمَّدٌ صَلَّي اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ اللهُ تَعَالٰي وَمَا اَرْسَلْنَاكَ اِلَّا رَحْـمَةً لّلْعٰلَمِيْنَ

অর্থ : উক্ত আয়াত শরীফে অনুগ্রহ বলতে ইলমকে বুঝানো হয়েছে এবং রহমত দ্বারা বুঝানো হয়েছে হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ! যেমন, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, আমিতো আপনাকে তামাম আলমের জন্য রহমত হিসাবে পাঠিয়েছি !””
দলীল-
√তাফসীরে দূররে মানছুর
√তাফসীরে রুহুল মায়ানী !
√তাফসীরে কবীর।

কুরআন শরীফ উনার সরাসরি পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দলীল দ্বারাই ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রমান হলো! কারন মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন মুবারক উনার ঘোষণা দিয়েছেন এবং সেই আগমন উপলক্ষে ঈদ পালন করতে বলেছেন সুবহানআল্লাহ !!

শুধু তাই নয় স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মীলাদ শরীফের সু সংবাদ পূর্ববর্তী নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের মাধ্যমে দান করেছেন !

কুরআন শরীফে ইরশাদ হয়-

وَإِذْ قَالَ عِيسَى ابْنُ مَرْيَمَ يَا بَنِي إِسْرَائِيلَ إِنِّي رَسُولُ اللَّهِ إِلَيْكُم مُّصَدِّقًا لِّمَا بَيْنَ يَدَيَّ مِنَ التَّوْرَاةِ وَمُبَشِّرًا بِرَسُولٍ يَأْتِي مِن بَعْدِي اسْمُهُ أَحْمَدُ ۖ فَلَمَّا جَاءَهُم بِالْبَيِّنَاتِ قَالُوا هَٰذَا سِحْرٌ مُّبِينٌ

অর্থ :“হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, হে বনী ইসরাঈল ! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের নিকট মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল হিসাবে প্রেরিত হয়েছি ! আমার পূর্ববর্তী তাওরাত শরীফে আমি সত্যায়নকারী এবং আমি এমন একজন রসূল উনার সুসংবাদ দানকারী যিনি আমার পরে আগমন করবেন, উনার নাম মুবারক হচ্ছে আহমদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।” (পবিত্র সূরা ছফ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)

এ আয়াত শরীফ উনার পরিপ্রেক্ষিতে স্বয়ং হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজের মীলদ শরীফ সম্পর্কে বলেন–
“আমি তোমাদের আমার পূর্বের কিছু কথা জানাবো! তা হলো- আমি হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম উনার দোয়া আমি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার সুসংবাদ ও আমার মাতার সুস্বপ্ন ! আমার বিলাদতের সময় আমার মাতা দেখতে পান যে, একখানা নূর মোবারক বের হয়ে শাম দেশের রাজ প্রসাদ সমূহ আলোকিত করে ফেলেছে।”
দলীল-
√মুসনাদে আহমদ ৪র্থ খন্ড ২৭ পৃষ্ঠা !
√মুস্তদরেকে হাকিম ২য় খন্ড ৬০১ পৃষ্ঠা !
√মিশকাত শরীফ ৫১৩ পৃষ্ঠা !

উপরোক্ত আয়াত শরীফ থেকে আমরা দেখতে পেলাম স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ঈসা আলাইহিস সালাম উনার মাধ্যমে পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সুসংবাদ দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজের মীলাদ শরীফ উনার বর্ননা দিলেন।সুবহানাল্লাহ্ !!
মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন –

اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ
অর্থ : “তোমাদেরকে যে নিয়ামত দেয়া হয়েছে, তোমরা সে নিয়ামতকে স্বরন করো।” (পবিত্র  সূরা আল ইমরান শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১০৩)

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-

وَأَمَّا بِنِعْمَةِ رَبِّكَ فَحَدِّثْ
অর্থ : “আপনার রব উনার নিয়ামতের কথা প্রকাশ করুন।”( পবিত্র  সূরা আদ্ব দ্বুহা শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ১১)

উক্ত নিয়ামত সমূহের ব্যাখ্যায় পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ রয়েছে-
“আল্লাহ পাক উনার কসম ! তারা ( যারা নবীজী উনার বিরোধীতা করেছিলো) কুরায়িশ কাফির আর হযরত সাইয়্যিদুনা মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত !” (বুখারী শরীফ ১/২২১)

আর নিয়ামত পূর্ন দিন সমূহ স্বরন করা বা আলোচনা করার বিষয়ে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরোদ মুবারক হয়েছে–

وَذَكِّرْهُم بِأَيَّامِ اللَّهِ ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّكُلِّ صَبَّارٍ شَكُورٍ

অর্থ : “আল্লাহ পাক উনার বিশেষ দিন সমূহ স্বরন করান। নিশ্চয়ই এতে প্রত্যেক ধৈর্যশীল শোকরগুযার বান্দাদের জন্য নিদর্শনাবলী রয়েছে।”
(পবিত্র সূরা ইব্রাহীম শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)

উপরোক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার দ্বারা বিশেষ দিন সমূহ স্বরন করা এবং এ দিবসে খুশি প্রকাশ করার কথা সরাসরি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার থেকে প্রমান হলো।

সুতরাং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আগমন দিবসে ঈদ পালন করা, উনার আলোচনা মুবারক করা,পবিত্র কুরআন শরীফ থেকে অকাট্যভাবে প্রমানিত হলো।
সুবহানাল্লাহ্।