মসজিদে নববী বা রওযা শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায পড়া হারাম ও নাজায়িয। আর আমভাবে কা’বা শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী এবং খাছভাবে হারাম ও নাজায়িয। অতঃপর আমভাবে নকশা খচিত জায়নামাযে নামায পড়া সুন্নতের খেলাফ বা মাকরূহ এবং হুযূরী বিনষ্ট হওয়ার কারণ।
জাওয়াব: মসজিদে নববী ও রওযা শরীফ ও কা’বা শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত এবং নকশা খচিত জায়নামাযে নামায পড়া সম্পর্কে “মাসিক আল বাইয়্যিনাত”-এ যা বলা হয়েছে তাই গ্রহণযোগ্য, সঠিক ও দলীলভিত্তিক।
কারণ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ এবং বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার শেয়ার বা নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেকের জন্যই ফরয এবং অশেষ কল্যাণের কারণও বটে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক বলেন-
ومن يعظم شعائر الله فانها من تقوى القلوب
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, নিশ্চয়ই তা তার জন্য অন্তরের তাক্বওয়া বা পবিত্রতারই নিদর্শন।” (সূরা হজ্জ-৩২)
মহান আল্লাহ পাক অন্যত্র আরো বলেন-
ومن يعظم حرمت الله فهو خير له عند ربه
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক যে সকল বস্তুকে সম্মানিত করেছেন, তাকে যে ব্যক্তি সম্মান করলো, এটা তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কল্যাণ বা ভালাইয়ের কারণ হবে।” (সূরা হজ্জ-৩০)
উপরোক্ত আয়াত শরীফসমূহ দ্বারা এটাই ছাবিত হলো যে, মহান মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা সকলের জন্যই ফরয। আর সেগুলোর অবমাননা করা সম্পূর্ণই হারাম ও নাজায়িয।
কাজেই, “পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ, বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ” যেহেতু মহান মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু উক্ত নিদর্শনসমূহকে পায়ের নিচে রাখা বা সেগুলোকে পদদলিত করা মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহকে অবমাননা করার শামিল। যা শুধু আদবের খেলাফই নয় বরং স্থান ও ক্ষেত্র বিশেষে নাজায়িয, হারাম ও কুফরী। তাই মহান মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-
يايها الذين امنوا لا تحلوا شعائر الله
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের অবমাননা করো না।” (সূরা মায়িদা-২)
উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে যেমন, ছবি তোলা হারাম। উনাদেরপরেও যদি কোন ব্যক্তি তার পিতার ছবি তোলে, সেই ছবি যদি তৃতীয় কোন ব্যক্তি পা দিয়ে মাড়ায় তাহলে যার পিতার ছবি মাড়ানো হলো সে ব্যক্তি কি সেটা সম্মানজনক হিসেবে মেনে নিবে? কখনই সেটা সম্মাজনক হিসেবে গ্রহণ করবে না। বরং যার পিতার ছবি সে ঐ ব্যক্তির উপর গোস্বা করবে, যে তার পিতার ছবিকে মাড়িয়েছে। কারণ তার পিতার ছবিকে পা দিয়ে মাড়ানোর কারণে তার পিতাকে ইহানতই করা হয়েছে। ইজ্জত, সম্মান করা হয়নি।
উল্লেখ্য, কারো পিতার ছবি যদি পা দিয়ে মাড়ানোর কারণে ইহানত হয় তাহলে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মদীনা শরীফ ও বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ যা মহান আল্লাহ পাক উনার শেয়ার, সেসবের ছবিকে পা দিয়ে মাড়ালে কি পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মদীনা শরীফ ও বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ-উনাদের ইহানত হবে না? অবশ্যই হবে।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
الكفر ملة واحدة
অর্থ: “সমস্ত কাফিররা, বিধর্মীরা মিলে এক দল।”
ক্রুসেডের যুদ্ধে পরাজিতের পর তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ইহুদী-খ্রিস্টানরা মরিয়া হয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের উপর একের পর এক হিংসাত্মক, মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক আঘাত হেনে চলেছে। তারা সম্মিলিত চক্রান্ত বা কূটকৌশলের মাধ্যমে মুসলমানদের পবিত্র ও সম্মানিত ও সম্মানিত স্থান-পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ ও রওজা শরীফ সংলগ্ন মসজিদে নববী শরীফ এবং বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ-উনাদের ছবি সম্বলিত অধিকাংশ জায়নামায তৈরি করে মুসলমানদের সম্মানিত জিনিসগুলোকে মুসলমানদের পায়ের নিচে ঠেলে দিয়ে মুসলমানদের দ্বারাই ইসলামের অবমাননা করিয়ে নিচ্ছে। মূলতঃ মুসলমানদের ঈমান হরণ করে নিচ্ছে।
উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে সাব্যস্ত হলো যে, সাধারণভাবে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ ও বাইতুল মুকাদ্দাসের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী ও আদবের খিলাফ। আর খাছভাবে হারাম ও নাজায়িয। আর মসজিদে নববীর ছবি যদি রওযা শরীফসহ হয়, তবে তাতে নাময পড়া সম্পূর্ণই হারাম ও নাজায়িয। কারণ এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার শেয়ার বা নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর এগুলোকে তা’যীম-তাকরীম করা সকলের উপরই অপরিহার্য কর্তব্য। তাছাড়া আমভাবে সকলের মতেই মসজিদের ছবিযুক্ত বা নকশা খচিত জায়নামাযে নামায পড়া সুন্নতের খিলাফ বা মাকরূহ এবং হুযূরী বিনষ্ট হওয়ার কারণ। এটাই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসসম্মত, ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য মত।
খারেজী মৌলভীদের ক্বিয়াস খন্ডন
প্রথমত: হাটহাজারী মৌলভী ছাহেবরা বলেছে, সরাসরি কা’বা শরীফ ও রওযা শরীফ-উনাদের ভিতরে দাঁড়িয়ে নামায পড়ায় যখন দোষ নেই ….।
উনাদের জবাবে প্রথমতঃ বলতে হয় যে, হাটহাজারী মৌলভী ছাহেবরা তাদের জিহালত বা অজ্ঞতার কারণেই পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের সঙ্গে পবিত্র ও সম্মানিত রওযা শরীফকে মিলিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। অথচ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ভিতরে যেভাবে নামায পড়া হয়, পবিত্র ও সম্মানিত রওযা শরীফ-উনাদের ভিতরে সেভাবে নামায পড়া হয় না।
দ্বিতীয়তঃ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ভিতরে নামায পড়া আর পবিত্র ও সম্মানিত রওযা শরীফ-উনাদের উপর নামায পড়া কখনোই এক কথা নয়। কারণ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ভিতরে নামায পড়া নিষেধ নেই। কিন্তু কবরের উপর নামায পড়া নিষেধ। সুতরাং কবরের উপর নামায পড়া নিষেধ হলে পবিত্র ও সম্মানিত রওযা শরীফ-উনাদের উপর নামায পড়া জায়িয হবে কি? কখনোই নয়।
তৃতীয়তঃ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ভিতরে দাঁড়াতে নিষেধ নেই। কিন্তু সরাসরি কবরের উপর দাঁড়ানো নিষেধ মাইয়্যিতের তা’যীমের কারণে। সুতরাং মাইয়্যিতের তা’যীমের কারণে নামায পড়া দূরের কথা যদি কবরের উপর দাঁড়ানোই নিষেধ হয়, তাহলে পবিত্র ও সম্মানিত রওযা শরীফ-উনাদের উপর দাঁড়ানো জায়িয হবে কি? কখনোই পবিত্র ও সম্মানিত রওযা শরীফ-উনাদের উপর দাঁড়ানো জায়িয হবে না। কারণ পবিত্র ও সম্মানিত রওযা শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রয়েছেন।
চতুর্থতঃ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের তা’যীম-উনাদের কারণে কা’বা শরীফ-উনাদের দিকে মুখ পিঠ করে ইস্তিঞ্জা করা, পেশাব-পায়খানা করা নিষেধ। শুধু তাই নয় পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের তা’যীম-উনাদের কারণে কা’বা শরীফ-উনাদের দিকে পা দেয়াও নিষেধ। সুতরাং পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের তা’যীম-উনাদের কারণে কা’বা শরীফ-উনাদের দিকে পা দেয়া যদি নিষেধ হয়, তাহলে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছবি সম্বলিত জায়নামায হওয়ায় দেয়ালসহ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদের উপর নামায পড়া জায়িয হয় কি করে?
পঞ্চমতঃ হাটহাজারীর মৌলভীরা পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদের উপর নামায পড়ার প্রসঙ্গটি কূটকৌশলে বাদ দিয়ে কা’বা শরীফ-উনাদের ভিতরে নামায পড়ার প্রসঙ্গটি এনে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে। অথচ কা’বা শরীফ-উনাদের ভিতরে নামায পড়তে নিষেধ করেনি। বরং পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদের উপর নামায পড়া নিষেধ। আর পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামায হওয়ায় দেয়ালসহ ছাদের উপরেই নামায পড়া হয়। যা সম্পূর্ণই নিষেধ তথা মাকরূহে তাহরীমী। শুধু তাই নয় পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামায হওয়ায় দেয়ালসহ ছাদের উপরেই পা দিয়ে মাড়ানো হয়, পদদলিত করা হয় যা সম্পূর্ণই ইহানত হওয়ায় কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
ষষ্ঠতঃ হাটহাজারী মৌলভীরা বলেছে, সরাসরি কা’বা শরীফ-উনাদের … ভিতরে দাঁড়িয়ে নামায পড়ায় যখন দোষ নেই, তখন তার চিত্রের উপর নামায পড়ায় দোষের অবকাশ কোথায়?
জবাবে বলতে হয় যে, হাটহাজারী মৌলভীদের দেয়া উদাহরণ অনুযায়ী কেবল মসজিদের ভিতরের অর্থাৎ মেঝের নকশা বিশিষ্ট জায়নামাজের উপর নামায পড়া জায়িয হতে পারতো। কিন্তু মসজিদের মেঝে আর পুরো সম্মানিত মসজিদ কখনই এক কথা নয়। সুতরাং পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ, বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফসহ ইত্যাদি মসজিদের ভিতরে নামায পড়া আর উল্লিখিত সম্মানিত মসজিদসমূহের ছবিযুক্ত জায়নামাযের উপর নাময পড়া, বসা, পা রাখা সমান নয়। কারণ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ভিতরে নামায পড়তে নিষেধ করা হয়নি। কিন্তু পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে নামায পড়া নিষেধ তথা মাকরূহ তাহরীমী বলা হয়েছে।
কেননা, পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে নামায পড়লে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের তা’যীম বা সম্মান রক্ষা করা হয় না। বরং পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ইহানতই করা হয়।
এ প্রসঙ্গে “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খ-ের ১০৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
وتكره الصلاة على سطح الكعبة لما فيه من ترك التعظيم
অর্থ: “কা’বা ঘরের ছাদের উপর নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা কা’বা ঘরের ছাদে নামায পড়লে কা’বা ঘরের ইহানত করা হয়।”
আর “বেয়াদব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে বঞ্চিত।” যেমন, কিতাবে আছে,
بے ادب محروم گشت از لطف رب
অর্থ: “বেয়াদব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে বঞ্চিত। আর “বেয়াদব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে বঞ্চিত হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার আযাব-গযবে পতিত হবে।”
কিতাবে আরো উল্লেখ আছে, বিনা জরুরতে সাধারণ মসজিদের ছাদে উঠাও মাকরূহ। আর ছবিযুক্ত হওয়ার কারণেই উক্ত সম্মানিত মসজিদসমূহের দেয়ালে বা ছাদে পা রাখা হয় যা মাকরূহের অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং মসজিদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায পড়া মাকরূহ।
আরো বলতে হয়ে যে, “জাতীয় পতাকার কাছে পা রাখলে যদি অবমাননার মামলা হয়, তবে মহান আল্লাহ পাক উনার শিয়ার কা’বা শরীফ, রওযা শরীফসহ মসজিদে নববী শরীফ, বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ-উনাদের ছবি সম্বলিত জায়নামাযে পা রাখলে তা ইসলামের দৃষ্টিতে কত মারাত্মক অবমাননাকর কাজ বলে গণ্য হতে পারে এবং তার জন্য কত কঠিন শাস্তি নির্ধারিত হতে পারে?”
০৯.০১.২০০৮ ঈসায়ী তারিখে দৈনিক আল ইহসান পত্রিকায় প্রকাশ অস্ট্রেলিয়ায় হপম্যান কাপ টুর্নামেন্ট একটি ম্যাচ দেখার সময় কুখ্যাত সানিয়া মির্জার পা ভারতের জাতীয় পতাকার সামনে থাকায় এবং সে ছবি টিভিতে দেখে ভারতের মধ্য প্রদেশের রাজকুমার দুবে নামে একজন আইনজীবী সানিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। ভারতীয় আইনজীবী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছে, “সানিয়া এমন বেখেয়ালীভাবে ম্যাচটি দেখছিলেন যে তার পা কোথায় সে বোধ তখন তার ছিল না। তিনি কি ভুলে গেছেন ভারতীয়দের কাছে তিন রং (জাতীয় পতাকা) উনাদের মূল্য কতটুকু। তার অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।”
সুতরাং বেখেয়ালীভাবে পা পতাকার কাছে গেলেই যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা উঠে, তাহলে ইচ্ছাকৃতভাবে কা’বা শরীফ-উনাদের ছবি বা নকশা খচিত জায়নামাযে যদি কেউ পা রাখে, তাহলে কা’বা শরীফ বা বায়তুল্লাহ শরীফ-উনাদের কত বড় জঘন্য অবমাননাকারী বলে গণ্য হবে এবং মহান আল্লাহ পাক তাকে কত কঠোর শাস্তি দিবেন। (নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক)
তাই ভারতীয় জাতীয় পতাকার অবমাননার কথিত এই ঘটনা থেকে মুসলমানদের অনেক নছীহতের অবকাশ রয়েছে। ইসলাম ও ইসলামের শিয়ারের অবমাননাকারীদের চিহ্নিত করার বিষয় রয়েছে।
আর নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও আখিরী রসূল। উনাকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ পাক কিছুই সৃষ্টি করতেন না। আর এটা ইজমা হয়ে গেছে যে, রওযা শরীফে যেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রয়েছে, সেখানে উনার অজুদ মুবারকের সাথে যে মাটি মুবারক স্পর্শ করে আছে তার মর্যাদা মহান আল্লাহ পাক উনার আরশে পাক উনার চেয়েও বেশি। সেখানে সে মহা সম্মানিত রওযা শরীফ-উনাদের ছবি যদি কেউ জায়নামাযে রাখে বা রওযা শরীফ-উনাদের ছবি সম্বলিত জায়নামায ব্যবহার করে, তাতে পা রাখে (নাঊযুবিল্লাহ) তাহলে সে কত নিকৃষ্ট ও নাফরমান ও বেয়াদব হিসেবে গণ্য হবে। কত বড় জাহান্নামী সে হবে? কত কঠিন তার শাস্তি হবে? (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক)
অতএব, হাটহাজারী মৌলভী ছাহেবদের ক্বিয়াসও ভুল, বাতিল প্রমাণিত হলো। কেননা, পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ, বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফসহ ইত্যাদি মসজিদের ভিতরে নামায পড়া আর উল্লিখিত সম্মানিত মসজিদসমূহের ছবিযুক্ত জায়নামাযের উপর নামায পড়া, বসা, পা রাখা সমান নয়। কারণ, উল্লিখিত সম্মানিত মসজিদসমূহের ছবিযুক্ত জায়নামায হওয়ার কারণেই দেয়ালে বা ছাদেই পা রাখা, বসা ও নামায পড়া হয়। যা মাকরূহ তাহরীমী, হারাম ও ক্ষেত্র বিশেষে কুফরী।
হাটহাজারী মৌলভীদের দলীল খন্ডন:
হাটহাজারী মৌলভী ছাহেবরা তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে দলীল হিসেবে যেসকল কিতাবের নাম উল্লেখ করেছে, উক্ত কিতাবে তাদের উল্লিখিত পৃষ্ঠায় পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায আদায় করার কোন বর্ণনাই উল্লেখ নেই। সুতরাং প্রমাণিত হলো হাটহাজারীর মৌলভী ছাহেবরা তাদের বক্তব্যের স্বপক্ষে দলীল হিসেবে কিতাবের নাম ব্যবহার করে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দিয়েছে।
আর মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায যে কারণে পড়তে নিষেধ করা হয় তা প্রাণীর ছবি হিসেবে নয়। বরং পবিত্র ও সম্মানিত মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ-উনাদের তা’যীম বা সম্মানার্থে।