সুওয়াল: মাসিক মদীনা পত্রিকা জুন/২০১১ ঈসায়ী সংখ্যায় প্রশ্নোত্তর বিভাগে লিখেছে যে, “কা’বা শরীফ এবং মসজিদে নববী শরীফ উনাদের নকশা বা ছবিযুক্ত জায়নামাযে দাড়ালে কা’বা শরীফ এবং মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের অবমাননা হবে না কারণ তা নকশা বা ছবি ব্যতিত কিছুই না, এমনকি মুল কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদের উপরে উঠলে বা দাড়ালেও নাকি কা’বা শরীফ-উনাদের অবমাননা হবে না।”
এখন আমার সুওয়াল হলো- মাসিক মদীনা পত্রিকার উক্ত বক্তব্য কতটুকু কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস সম্মত। দলীলভিত্তিক জাওয়াব দিয়ে বাধিত করবেন।
জাওয়াব: মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীনের উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা দুটি বিষয় স্পষ্ট হলো। যথা- ১. “কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায পড়া জায়িয। কারণ তা নকশা বা ছবি। আর নকশা বা ছবির উপর দাঁড়ালে বা পা দিয়ে মাড়ালে অবমাননা হয় না।
২. সরাসরি কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে উঠলে বা দাঁড়ালেও কা’বা শরীফ-উনাদের অবমাননা হয় না।
তার প্রথম বক্তব্যের প্রথম অংশের জাওয়াবে বলতে হয় যে, “কা’বা শরীফ এবং মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিতে পা দিয়ে মাড়ালে অবমাননা হবে না তার এ বক্তব্যের দলীল কোথায়?
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন-
هاتوا برهانكم ان كنتم صدقين
অর্থ: “তোমরা যদি সত্যবাদী হয়ে থাক, তবে দলীল পেশ কর” (সূরা বাক্বারা: আয়াত শরীফ ১১১)
কাজেই মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীনকে তার উক্ত বক্তব্যের স্বপক্ষে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস থেকে দলীল পেশ করতে হবে। যেহেতু সে তার এ বক্তব্যের স্বপক্ষে কোন দলীল পেশ করেনি বা করতে পারেনি তাই তার উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণই পরিত্যাজ্য।
মাসিক মাদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীন সাহেব তার প্রথম বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশে বলেছে, “আর নকশা বা ছবির উপর দাঁড়ালে বা পা দিয়ে মাড়ালে অবমাননা হয় না।”
তার প্রথম বক্তব্যের দ্বিতীয় অংশের জাওয়াবে বলতে হয় যে, মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীন সাহেবের বক্তব্য মুতাবিক “কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিতে পা দিয়ে মাড়ালে যদি অবমাননা না হয়, তাহলে মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীন সাহেবের মতে কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবির উপর দাঁড়ালে বা পা দিয়ে মাড়ালেও কুরআন শরীফ-উনাদের অবমাননা হবে না। নাউযুবিল্লাহ! কারণ তা কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবি। নাউযুবিল্লাহ্্
এখন মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীন সাহেব কি কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবির উপর দাঁড়ানোকে বা কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবির উপর পা দিয়ে মাড়ানোকে জায়িয ফতওয়া দিবে? কারণ তা তো কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবি।
সুতরাং প্রমানিত হলে যে, কুরআন শরীফ-উনাদের সম্মানের কারনে বা কুরআন শরীফ-উনাদের তা’যীম তাকরীমের কারনে যদি কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবির উপর দাঁড়ালে বা কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবির উপর পা দিয়ে মাড়ালে যদি কুরআন শরীফ-উনাদের অবমাননা হয়। তাহলে “কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিতেও পা দিয়ে মাড়ালে অবশ্যই তা অবমাননা হবে। কারণ “কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিও কুরআন শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবির মতোই সম্মানিত। কাজেই নকশা বা ছবি বলে এগুলোকে হেয়প্রতিপন্ন করলে সে কাট্টা কাফির ও চিরজাহান্নামী হবে।
মূলত ইসলামী শরীয়তের দলীলভিত্তিক ফায়সালা হলো কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিতে পা দিয়ে মাড়ালে অবশ্যই অবমাননা হবে। কেননা কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফকে যেভাবে সম্মান প্রদর্শন করা, তা’যীম-তাকরীম করা সকল মুসলমানদের জন্য ফরয। ঠিক একইভাবে কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিকেও সম্মান প্রদর্শন করা, তা’যীম-তাকরীম করা সকল মুসলমানদের জন্য ফরয।
কারণ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ এবং বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক-উনার শেয়ার বা নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেকের জন্যই ফরয এবং অশেষ কল্যাণের কারণও বটে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন-
ومن يعظم شعائر الله فانها من تقوى القلوب
অর্থ: “যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক-উনার নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে, নিশ্চয়ই তা তার জন্য অন্তরের তাক্বওয়া বা পবিত্রতারই নিদর্শন।” (সূরা হজ্জ-৩২)
মহান আল্লাহ পাক তিনি অন্যত্র আরো ইরশাদ করেন-
ومن يعظم حرمت الله فهو خير له عند ربه
অর্থ: “মহান আল্লাহ পাক তিনি যে সকল বস্তুকে সম্মানিত করেছেন, তাকে যে ব্যক্তি সম্মান করলো, এটা তার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কল্যাণ বা ভালাইয়ের কারণ হবে।” (সূরা হজ্জ: আয়াত শরীফ ৩০)
উক্ত আয়াত শরীফ-উনাদের তাফসীরে “তাফসীরে মাযহারী” কিতাব-উনাদের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ২৩৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
الحرمات هاهنا البلد الحرام والبيت الحرام والشهر الحرام
অর্থ: এখানে হুরুমাতিল্লাহ-উনাদের অর্থ সম্মানিত শহর এবং সম্মানিত গৃহ এবং সম্মানিত মাস অর্থাৎ মক্কা শরীফ, কা’বা শরীফ এবং ওই সকল মাস যেগুলোতে যুদ্ধবিগ্রহ নিষিদ্ধ।
উপরোক্ত আয়াত শরীফসমূহ দ্বারা এটাই ছাবিত হলো যে, মহান মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা সকলের জন্যই ফরয। আর সেগুলোর অবমাননা করা সম্পূর্ণই হারাম ও নাজায়িয। চাই তা নকশা বা ছবি হোক অথবা মুল কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ হোক উভয়ের একই হুকুম। অর্থাৎ নকশা বা ছবিও সম্মানিত।
কাজেই, “পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ, বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ” যেহেতু মহান মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত, সেহেতু উক্ত নিদর্শনসমূহকে বা উক্ত নিদর্শনসমূহের নকশা বা ছবিকে পায়ের নিচে রাখা বা সেগুলোকে পদদলিত করা মহান আল্লাহ পাক-উনার নিদর্শনসমূহকে অবমাননা করার শামিল। যা শুধু আদবের খিলাফই নয় বরং স্থান ও ক্ষেত্র বিশেষে নাজায়িয, হারাম ও কুফরী। তাই মহান মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন-
يايها الذين امنوا لا تحلوا شعائر الله
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার নিদর্শনসমূহের অবমাননা করো না।” (সূরা মায়িদা-২)
দ্বিতীয়তঃ মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীন সাহেব বলেছে, “সরাসরি কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে উঠলে বা দাঁড়ালেও কা’বা শরীফ-উনাদের অবমাননা হয় না।”
তার দ্বিতীয় বক্তব্যের জাওয়াবে বলতে হয় যে, মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীন সাহেব যে বলেছে, “সরাসরি কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে উঠলে বা দাঁড়ালেও কা’বা শরীফ-উনাদের অবমাননা হয় না।” তার এ বক্তব্যের দলীল কোথায়?
সুতরাং মাহিউদ্দীন সাহেবের দলীলবিহীন বক্তব্য মোটেই গ্রহনযোগ্য নয়।
কারণ, কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদের উপরে উঠলে, দাঁড়ালে বা নামায পড়লে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের অবমাননা হয় ও বেয়াদবী হয়। তাই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্বয়ং হাদীছ শরীফ-এ পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে নামায পড়তে সরাসরি নিষেধ করেছেন।
যেমন, “ইবনে মাজাহ শরীফ”-উনাদের ৫৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
عن حضرت ابن عمر رضى الله تعالى عنهما قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم ان يصلى فى سبع مواطن فى المزبلة والمجزرة والمقبرة وقارعة الطريق والحمام ومعاطن الابل وفوق الكعبة.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি সাত জায়গায় নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। যথা: ১. আবর্জনা ফেলার স্থানে ২. যবেহখানায়, ৩. কবর স্থানে, ৪. রাস্তার মধ্যে, ৫. গোসলখানায়, ৬. উটের আস্তাবলে এবং ৭. কা’বা শরীফ-উনাদের উপরে অর্থাৎ কা’বা শরীফ বা বাইতুল্লাহ শরীফ-উনাদের ছাদে।
“ইবনে মাজাহ শরীফ”-উনাদের ৫৪ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে-
عن حضرت ابن عمر رضى الله تعالى عنهما عن عمر بن الخطاب رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال سبع مواطن لا تجوز فيها الصلوة ظاهر بيت الله والمقبرة والمزبلة والمجزرة والحمام وعطن الابل ومحجة الطريق.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত আছে, তিনি হযরত উমর বিন খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণনা করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “সাত জায়গায় নামায পড়া জায়িয নেই। যথা;- ১. বাইতুল্লাহ শরীফ বা কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে, ২. কবর স্থানে, ৩. আবর্জনা ফেলার স্থানে, ৪. যবেহখানায়, ৫. গোসলখানায়, ৬. উটের আস্তাবলে ৭. রাস্তার মধ্যে ।
“তিরমিযী শরীফ”-উনাদের প্রথম খণ্ডের ৮১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
عن حضرت ابن عمر رضى الله تعالى عنهما ان النبى صلى الله عليه وسلم نهى ان يصلى فى سبعة مواطن فى المزبلة والمجزرة والمقبرة وقارعة الطريق وفى الحمام ومعاطن الابل وفوق ظهر بيت.
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনি সাত জায়গায় নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। যথা- ১.আবর্জনা ফেলার স্থানে ২. যবেহখানায়, ৩. কবর স্থানে, ৪. রাস্তার মধ্যে, ৫. গোসলখানায়, ৬. উটের আস্তাবলে এবং ৭. বাইতুল্লাহ শরীফ-উনাদের ছাদে।”
“মিশকাত শরীফ”-উনাদের ৭১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
عن حضرت ابن عمر رضى الله تعالى عنهما قال نهى رسول الله صلى الله عليه وسلم ان يصلى فى سبعة مواطن فى المزبلة والمجزرة والمقبرة وقارعة الطريق وفى الحمام ومعاطن الابل وفوق ظهر بيت الله. (رواه الترمذى وابن ماجه)
অর্থ: হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা উনার থেকে বর্ণিত আছে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাত জায়গায় নামায পড়তে নিষেধ করেছেন। ১.আবর্জনা ফেলার স্থানে ২. যবেহখানায়, ৩. কবর স্থানে, ৪. রাস্তার মধ্যে, ৫. গোসলখানায়, ৬. উটের আস্তাবলে এবং ৭. বাইতুল্লাহ শরীফ-উনাদের ছাদে। (তিরমিযী শরীফ ও ইবনু মাযাহ্্ শরীফ)
উল্লিখিত হাদীছ শরীফ-উনাদের ব্যাখ্যায় “ইবনে মাজাহ শরীফ”-উনাদের ৫৪ পৃষ্ঠার ৯ নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,
لا يجوز فيها اى بلا كراهة
অর্থ: কারাহাত ছাড়াই বাইতুল্লাহ শরীফ বা কা’বা শরীফ উনাদের ছাদে নামায পড়া জায়িয নেই।
“ইবনে মাজাহ শরীফ”-উনাদের ৫৪ পৃষ্ঠার ১০নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
اذ نفس الارتفاء الى سطح الكعبة مكروه لاستعلائه عليه المنافى للادب.
অর্থ: কোন ব্যক্তি যদি কা’বা শরীফের ছাদে উঠে (নামায পড়ে) তাহলে তা মাকরূহ্্ তাহ্্রীমী হবে। কেননা কা’বা শরীফের সুউচ্চ মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে আদব রক্ষার্থে কা’বা শরীফের ছাদে উঠতে, নামায পড়তে নিষেধ করা হয়েছে।
“মিরকাত শরীফ”-উনাদের ২য় খণ্ডের ২১৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
اذ نفس الارتفاء الى سطح الكعبة مكروه لاستعلائه عليه المنافى للادب.
অর্থ: কোন ব্যক্তি যদি কা’বা শরীফের ছাদে উঠে (নামায পড়ে) তাহলে তা মাকরূহ্্ তাহ্্রীমী হবে। কেননা কা’বা শরীফের সুউচ্চ মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে আদব রক্ষার্থে কা’বা শরীফের ছাদে উঠতে, নামায পড়তে নিষেধ করা হয়েছে।
তাছাড়া পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের তা’যীম-উনাদের কারণে কা’বা শরীফ-উনাদের দিকে মুখ পিঠ করে ইস্তিঞ্জা করা, পেশাব-পায়খানা করা নিষেধ। শুধু তাই নয় পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের তা’যীম-উনাদের কারণে কা’বা শরীফ-উনাদের দিকে পা দেয়াও নিষেধ।
যেমন, “ফতওয়ায়ে আলমগীরী”- কিতাবের ৫ম খণ্ডের ৩১৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
ويكره مد الرجلين الى الكعبة فى النوم وغيره عمدا
অর্থ: ঘুমে এবং ঘুম ব্যতীত অন্যান্য সময় ইচ্ছাকৃত ভাবে কা’বা শরীফের দিকে পা প্রসারিত করা বা কা’বা শরীফের দিকে পা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ।
“ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া” কিতাবের ৯ম খণ্ডের ২৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
اورخواب و غیرہ کی حالت مین عمدا قبلہ کی طرف پائوں پھیلانا مکروہ ہی.
অর্থ: ঘুমে এবং ঘুম ব্যতীত অন্যান্য সময় ইচ্ছাকৃতভাবে কা’বা শরীফের দিকে পা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ।
সুতরাং পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের তা’যীম-উনাদের কারণে কা’বা শরীফ-উনাদের দিকে পা দেয়া যদি নিষেধ হয়, তাহলে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিকে পা দিয়ে মাড়ানো জায়িয হয় কি করে?
এ প্রসঙ্গে “ফতওয়ায়ে আলমগীরী” কিতাবের ১ম খণ্ডের ১০৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
وتكره الصلاة على سطح الكعبة لما فيه من ترك التعظيم
অর্থ: “কা’বা শরীফের ছাদের উপর নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়লে কা’বা শরীফের অবমাননা হয়।”
“জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ্্” কিতাবের ১৪৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
انه يكره لما فيه من ترك التعظيم وقد ورد النهى عنه
অর্থ: “কা’বা শরীফের ছাদের উপর নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়লে কা’বা শরীফের অবমাননা হয়। আর কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়ার ব্যাপারে নিষেধ বাণী বর্ণিত রয়েছে।”
“আল-লুবাব লিল-মায়দানী ” কিতাবে উল্লেখ আছে-
انه يكره لما فيه من ترك التعظيم و لورود النهى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم
অর্থ: “কা’বা শরীফের ছাদের উপর নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়লে কা’বা শরীফের অবমাননা হয়। আর কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়ার ব্যাপারে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নিষেধ বাণী বর্ণিত রয়েছে।”
“হিদায়া” কিতাবের ১ম খণ্ডের ১৬৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
انه يكره لما فيه من ترك التعظيم وقد ورد النهى عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم
অর্থ: “কা’বা শরীফের ছাদের উপর নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়লে কা’বা শরীফের অবমাননা হয়। আর কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়ার ব্যাপারে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নিষেধ বাণী বর্ণিত রয়েছে।”
“দিরায়া” কিতাবে উল্লেখ আছে-
انه يكره وقد ورد النهى عن النبى صلى الله عليه وسلم
অর্থ: “কা’বা শরীফের ছাদের উপর নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী। কেননা কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়ার ব্যাপারে নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে নিষেধ বাণী বর্ণিত রয়েছে।”
“মাআরিফে মাদানিয়া” কিতাবের ৬ষ্ঠ খণ্ডের ৮১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
بیت اللہ کی چھت پر احترام کعبہ کے خلاف ھونے کی وجہ سے ھے
অর্থ: “কা’বা শরীফের অবমাননা হওয়ার কারণে কা’বা শরীফের ছাদে নামায পড়া নিষেধ।
“মা’রিফুস সুনান” কিতাব-উনাদের ৩য় খণ্ডের ৩৮৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
وفوق ظهر بيت الله ذكر علمائنا الحنفية وجهه بأن فيه ترك التعظيم وسوء الأدب
অর্থ: বাইতুল্লাহ শরীফ বা কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে নামায পড়া নিষেধ সম্পর্কে আমাদের হানাফী মাযহাবের উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা তার কারণ উল্লেখ করে বলেন যে, বাইতুল্লাহ শরীফ বা কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে নামায পড়লে কা’বা শরীফ-উনাদের অবমাননা হয় এবং বেয়াদবী হয় তাই কা’বা শরীফ-উনাদের ছাদে নামায পড়া নিষেধ।
আর “বেয়াদব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে বঞ্চিত।” যেমন, কিতাবে আছে-
بے ادب محروم گشت از لطف رب
অর্থ: “বেয়াদব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে বঞ্চিত। আর “বেয়াদব মহান আল্লাহ পাক উনার রহমত থেকে বঞ্চিত হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার আযাব-গযবে পতিত হবে।”
কিতাবে আরো উল্লেখ আছে, বিনা জরুরতে সাধারণ মসজিদের ছাদে উঠাও মাকরূহ।
যেমন “ফতওয়ায়ে আলমগীরী কিতাবের ৫ম খণ্ডের ৩২২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
الصعود علي سطح كل مسجد مكروه
অর্থ: সাধারণত: সকল সম্মানিত মসজিদ-উনাদের ছাদে উঠা মাকরূহ তাহরীমী।
“ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া” কিতাবের ৯ম খণ্ডের ৩০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
اور ہر مسجد کی چھت پر چڑھنا مکروہ ہی
অর্থ: সকল সম্মানিত মসজিদ-উনাদের ছাদে উঠা মাকরূহ্ তাহরীমী।
“মা’রিফুস সুনান” কিতাব-উনাদের ৩য় খণ্ডের ৩৮৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
كراهة الصعود على سطح المسجد
অর্থ: সাধারণত: সকল সম্মানিত মসজিদ-উনাদের ছাদে উঠা মাকরূহ তাহ্্রীমী।
উল্লেখ্য, মসজিদের ছাদে উঠা মাকরূহ হওয়ার কারণ হচ্ছে তাতে মসজিদের তা’যীম ক্ষুণœ হয়। যদি সাধারণ মসজিদের ছাদে উঠলেই মসজিদের তা’যীম নষ্ট হয় তাহলে কা’বা শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের ছবি পা দিয়ে মাড়ালে কি এগুলোর তা’যীম নষ্ট হবে না? অবশ্যই হবে।
উদাহরণ স্বরূপ বলা যেতে পারে যেমন, ছবি তোলা হারাম। উনাদেরপরেও যদি কোন ব্যক্তি তার পিতার ছবি তোলে, সেই ছবি যদি তৃতীয় কোন ব্যক্তি পা দিয়ে মাড়ায় তাহলে যার পিতার ছবি মাড়ানো হলো সে ব্যক্তি কি সেটা সম্মানজনক হিসেবে মেনে নিবে? কখনই সেটা সম্মাজনক হিসেবে গ্রহণ করবে না। বরং যার পিতার ছবি সে ঐ ব্যক্তির উপর গোস্বা করবে, যে তার পিতার ছবিকে মাড়িয়েছে। কারণ তার পিতার ছবিকে পা দিয়ে মাড়ানোর কারণে তার পিতাকে ইহানতই করা হয়েছে। ইজ্জত, সম্মান করা হয়নি।
উল্লেখ্য, কারো পিতার ছবি যদি পা দিয়ে মাড়ানোর কারণে ইহানত হয় তাহলে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মদীনা শরীফ ও বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ যা মহান আল্লাহ পাক উনার শেয়ার, সেসবের ছবিকে পা দিয়ে মাড়ালে কি পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মদীনা শরীফ ও বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ-উনাদের ইহানত হবে না? অবশ্যই হবে।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-
الكفر ملة واحدة
অর্থ: “সমস্ত কাফিররা, বিধর্মীরা মিলে এক দল।”
ক্রুসেডের যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার পর তার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য ইহুদী-খ্রিস্টানরা মরিয়া হয়ে ইসলাম ও মুসলমানদের উপর একের পর এক হিংসাত্মক, মারাত্মক ও ধ্বংসাত্মক আঘাত হেনে চলেছে। তারা সম্মিলিত চক্রান্ত বা কূটকৌশলের মাধ্যমে মুসলমানদের পবিত্র ও সম্মানিত ও সম্মানিত স্থান-পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ ও রওজা শরীফ সংলগ্ন মসজিদে নববী শরীফ এবং বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ-উনাদের ছবি সম্বলিত অধিকাংশ জায়নামায তৈরি করে মুসলমানদের সম্মানিত জিনিসগুলোকে মুসলমানদের পায়ের নিচে ঠেলে দিয়ে মুসলমানদের দ্বারাই ইসলামের অবমাননা করিয়ে নিচ্ছে। মূলতঃ মুসলমানদের ঈমান হরণ করে নিচ্ছে।
উপরোক্ত আলোচনা সাপেক্ষে সাব্যস্ত হলো যে, সাধারণভাবে পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ ও বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী ও আদবের খিলাফ। আর খাছভাবে হারাম ও নাজায়িয। আর মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের ছবি যদি রওযা শরীফসহ হয়, তবে তাতে নামায পড়া সম্পূর্ণই হারাম ও নাজায়িয। কারণ এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার শেয়ার বা নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। আর এগুলোকে তা’যীম-তাকরীম করা সকলের উপরই অপরিহার্য কর্তব্য। তাছাড়া আমভাবে সকলের মতেই মসজিদের ছবিযুক্ত বা নকশা খচিত জায়নামাযে নামায পড়া সুন্নতের খিলাফ বা মাকরূহ এবং হুযূরী বিনষ্ট হওয়ার কারণ। এটাই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসসম্মত, ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য মত।
পরিশেষে বলতে হয়ে যে, “জাতীয় পতাকার কাছে পা রাখলে যদি অবমাননার মামলা হয়, তবে মহান আল্লাহ পাক উনার শিয়ার বা নিদর্শন কা’বা শরীফ, রওযা শরীফসহ মসজিদে নববী শরীফ, বায়তুল মুকাদ্দাস শরীফ-উনাদের ছবি সম্বলিত জায়নামাযে পা রাখলে তা ইসলামের দৃষ্টিতে কত মারাত্মক অবমাননাকর কাজ বলে গণ্য হতে পারে এবং তার জন্য কত কঠিন শাস্তি নির্ধারিত হতে পারে?”
০৯.০১.২০০৮ ঈসায়ী তারিখে দৈনিক আল ইহসান পত্রিকায় প্রকাশ অস্ট্রেলিয়ায় হপম্যান কাপ টুর্নামেন্ট একটি ম্যাচ দেখার সময় কুখ্যাত সানিয়া মির্জার পা ভারতের জাতীয় পতাকার সামনে থাকায় এবং সে ছবি টিভিতে দেখে ভারতের মধ্য প্রদেশের রাজকুমার দুবে নামে একজন আইনজীবী সানিয়ার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেয়। ভারতীয় আইনজীবী তার বক্তব্যে উল্লেখ করেছে, “সানিয়া এমন বেখেয়ালীভাবে ম্যাচটি দেখছিলেন যে তার পা কোথায় সে বোধ তখন তার ছিল না। তিনি কি ভুলে গেছেন ভারতীয়দের কাছে তিন রং (জাতীয় পতাকা) উনাদের মূল্য কতটুকু। তার অবশ্যই শাস্তি হওয়া উচিত।”
সুতরাং বেখেয়ালীভাবে পা পতাকার কাছে গেলেই যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা উঠে, তাহলে ইচ্ছাকৃতভাবে কা’বা শরীফ-উনাদের ছবি বা নকশা খচিত জায়নামাযে যদি কেউ পা রাখে, তাহলে কা’বা শরীফ বা বায়তুল্লাহ শরীফ-উনাদের কত বড় জঘন্য অবমাননাকারী বলে গণ্য হবে এবং মহান আল্লাহ পাক তাকে কত কঠোর শাস্তি দিবেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। (নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক)
তাই ভারতীয় জাতীয় পতাকার অবমাননার কথিত এই ঘটনা থেকে মুসলমানদের অনেক নছীহতের অবকাশ রয়েছে। ইসলাম ও ইসলামের শিয়ারের অবমাননাকারীদের চিহ্নিত করার বিষয় রয়েছে।
আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হলেন মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব ও আখিরী রসূল। উনাকে সৃষ্টি না করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি কিছুই সৃষ্টি করতেন না। আর এটা ইজমা হয়ে গেছে যে, রওযা শরীফে যেখানে মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি রয়েছেন, সেখানে উনার অজুদ মুবারকের সাথে যে মাটি মুবারক স্পর্শ করে আছে তার মর্যাদা মহান আল্লাহ পাক উনার আরশে পাক উনার চেয়েও বেশি। সেখানে সে মহা সম্মানিত রওযা শরীফ-উনাদের ছবি যদি কেউ জায়নামাযে রাখে বা রওযা শরীফ-উনাদের ছবি সম্বলিত জায়নামায ব্যবহার করে, তাতে পা রাখে (নাঊযুবিল্লাহ) তাহলে সে কত নিকৃষ্ট ও নাফরমান ও বেয়াদব হিসেবে গণ্য হবে। কত বড় জাহান্নামী সে হবে? কত কঠিন তার শাস্তি হবে? (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক)
অতএব, মাসিক মদীনার সম্পাদক ও তার সমজাতীয়দের ক্বিয়াসও ভুল এবং বাতিল প্রমাণিত হলো। কেননা, পবিত্র ও সম্মানিত কা’বা শরীফ, মসজিদে নববী শরীফ, বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফসহ ইত্যাদি সম্মানিত মসজিদসমূহের ছবিযুক্ত জায়নামাযের উপর নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী, হারাম ও ক্ষেত্র বিশেষে কুফরী।
আর মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ-উনাদের ছবিযুক্ত জায়নামাযে নামায যে কারণে পড়তে নিষেধ করা হয় তা প্রাণীর ছবি হিসেবে নয়। বরং পবিত্র ও সম্মানিত মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ-উনাদের তা’যীম বা সম্মানার্থে।
কারণ পবিত্র ও সম্মানিত মক্কা শরীফ ও মদীনা শরীফ হচ্ছে- মহান আল্লাহ পাক উনার শেয়ার বা নিদর্শনসমূহের অন্তর্ভুক্ত। যার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং অশেষ কল্যাণের কারণও বটে। যার বর্ণনা অত্র সুওয়ালের শুরুতেই করা হয়েছে।
অতএব, মাসিক মদীনা এবং তার সমজাতীয় অখ্যাত মাসিক পত্রিকার উক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ ভুল হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে মাসিক মদীনার সম্পাদক এবং সমজাতীয় মৌলভীরা বেয়াদব ও জাহিল হওয়ার কারণে এ ধরনের বক্তব্য পেশ করতে পেরেছে। কাজেই এ ধরনের জাহিল ও বেয়াদবের জিহালতপূর্ণ ও বেয়াদবিমূলক বক্তব্য থেকে বিরত থাকা প্রত্যেকের দায়িত্ব ও কর্তব্য।
সুতরাং বাইতুল্লাহ শরীফ ও মসজিদে নববী শরীফ-উনাদের নকশা বা ছবিবিশিষ্ট জায়নামাযে নামায পড়া, বসা, পা রাখা ক্ষেত্রবিশেষে মাকরূহ তাহরীমী, হারাম ও কুফরী।
এ প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ-উনাদের ২০, ৪৭, ৫৭, ৮১, ৮৯ ১১৪ ও ১৮৮তম সংখ্যা পড়–ন। সেখানে মাসিক মদীনা ও হাটহাজারীর মৌলভীদের মাসিক পত্রিকার জিহালতপূর্ণ ও বেয়াদবীমূলক বক্তব্যকে খণ্ডন করে সঠিক জাওয়াব দেয়া হয়েছে।
এবার তৃতীয়বারের মত মাসিক মদীনা পত্রিকার জিহালতপূর্ণ ও বেয়াদবীমূলক বক্তব্যকে খণ্ডন করে সঠিক জাওয়াব দেয়া হলো।
দলীলসমূহ:(১) তাফসীরে মাযহারী, (২) তিরমিযী শরীফ, (৩) ইবনে মাযাহ শরীফ (৫) মাবসূত (৬) মিশকাত শরীফ (৭) মিরকাত শরীফ (৮) মা’রিফুস সুনান ৯) কুদুরী (১০) হিদায়া শরীফ (১১) মুগনী (১২) মাদুনা (১৩) কাহাস্তানী (১৪) মুফীদ (১৫) ফতহুল কাদীর (১৬) কিফায়া (১৭) ঈনায়া (১৮) আলমগীরী (১৯) ফতওয়ায়ে হিন্দিয়া (২০) দুররুল মুখতার (২১) রদ্দুল মুহতার (২২) শামী (২৩) আল লুবাব লিল মাইদানী (২৪) মাআরিফে মাদানিয়া (২৫) দিরায়া (২৬) জাওহারাতুন নাইয়্যারাহ।