সম্মানিত শরীয়ত মতে যেসব মাল সম্পদের যাকাত আদায় করতে হবে

মূলত পবিত্র যাকাত মুসলমান উনাদের প্রায় যাবতীয় মালেই ফরয, যদি তার নিছাব ও শর্ত পূরণ হয়। যেমন- সোনা-রূপা, নগদ অর্থ, যমীনে উৎপন্ন ফসল ও ফলফলাদি, যমীনে প্রাপ্ত গুপ্ত ধন, খণিতে প্রাপ্ত খণিজ দ্রব্য, ব্যবসায়ের পণ্যদ্রব্য, গৃহপালিত পশু, যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া এসকল প্রকার মালেই পবিত্র যাকাত ফরয। (আল হিদায়া)

পবিত্র যাকাত প্রদানের জন্য মাল-সম্পদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শর্তাবলী :
১. মাল নিছাব (শরীয়ত নির্ধারিত) পরিমাণ হওয়া।
২. উক্ত মাল নিত্য প্রয়োজনীয় ব্যবহার্য ও স্থাবর মালের অন্তর্ভুক্ত না হওয়া।
৩. উক্ত মালের উপর পূর্ণ এক বছর অতিক্রান্ত হওয়া।
৪. মালের উপর ব্যক্তির পূর্ণ মালিকানা থাকা।
৫. মুদ্রা, টাকা বা ব্যবসায়ের পণ্য হওয়া।
৬. পশুর যাকাতের ক্ষেত্রে পশু সায়িমা তথা বিচরণশীল ও বর্ধনশীল হওয়া।
৭. ফসলের পবিত্র যাকাত তথা ওশরের ক্ষেত্রে, যমীনে উৎপাদিত ফসল কম-বেশি যাই হোক; (বিনা শ্রম ও সেচে) তার দশ ভাগের এক ভাগ অথবা (শ্রম ও সেচে) বিশ ভাগের এক ভাগ পবিত্র যাকাত দেয়া, আমাদের সম্মানিত হানাফী মাযহাবে ফসলের কোন নিছাব নেই।
খ) যে সব মাল অর্থ-সম্পদের উপর পবিত্র যাকাত ওয়াজিব নয় :
১. বসবাসের ঘর।
২. পরিধেয় বস্ত্র।
৩. ঘরের আসবাব পত্র।
৪. আরোহণের পশু বা যানবাহন।
৫. কাজের জন্য ভাতা প্রদত্ত দাস-দাসি তথা খাদিম-খাদিমা।
৬. ব্যবহারের হাতিয়ার বা যুদ্ধাস্ত্র।
৭. হারানো বা লোকসান যাওয়া মাল।
৮. সমুদ্রে ডুবে যাওয়া মাল।
৯. ছিনতাই করে নিয়ে গেছে এমন মাল।
১০. মাটিতে পুতে রাখা মাল-সম্পদ যার স্থান স্মরণে নেই।
১১. ঋণ প্রদত্ত মাল যা গ্রহীতা বারবার অস্বীকার করেছে।
১২. লুণ্ঠিত মাল।
১৩. ব্যবসার অযোগ্য মাল।
১৪. স্থানান্তরের অযোগ্য ও স্থাবর ধন-সম্পদ।
১৫. এক বছর পূর্ণ হয়নি এমন মাল।
১৬. ইয়াতীম, অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও দাস-দাসীর মাল।

এছাড়া হারাম কামাই দ্বারা অর্জিত মালের কোন পবিত্র যাকাত নেই। যদি কেউ পবিত্র যাকাত উনার নিয়ত করে পবিত্র যাকাত দেয় তাহলে তার কবীরা গুনাহ হবে। বৈধ মনে করলে কুফরী হবে। কাজেই অবৈধ মালের যেমন পবিত্র যাকাত নেই, তেমন তার মালিকের উপরও পবিত্র যাকাত নেই অর্থাৎ পবিত্র ইসলাম উনার পরিভাষায় সে ছাহিবে নিছাব হবে না। (ফিকাহর কিতাবসমূহ)