সম্মানিত শরীয়ত মতে পবিত্র যাকাত উনার নিসাব

পবিত্র যাকাত উনার নিসাব:  যে পরিমাণ অর্থ-সম্পদ বা নগদ অর্থ কোন ব্যক্তির সাংসারিক সকল মৌলিক প্রয়োজন বা চাহিদা মিটানোর পর অতিরিক্ত সম্পদ যা সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রৌপ্য অথবা ঐ সমপরিমাণ অর্থ-সম্পদ নির্দিষ্ট তারিখে পূর্ণ এক বছর ঐ ব্যক্তির মালিকানায় থাকলে তা থেকে পবিত্র যাকাত প্রদান করা ফরয হয়, নূন্যতমভাবে ঐ পরিমাণ অর্থ-সম্পদকে পবিত্র শরীয়ত উনার পরিভাষায় ‘নিছাব’ বলে। আর যিনি নিছাব পরিমাণ মাল-সম্পদের মালিক হন উনাকে ছাহিবে নিছাব বলে।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ আছে-

وَالَّذِيْنَ فِي اَمْوَالِـهِمْ حَقٌّ مَّعْلُومٌ. لّلسَّائِلِ وَالْمَحْرُ‌وْمِ.

অর্থ : “আর তাদের তথা ধনীদের মালে রয়েছে নির্ধারিত হক অভাবী ও বঞ্চিতের।” (পবিত্র সূরা মাআরিজ শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ২৪)

উক্ত আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে বুঝা গেল যে, পবিত্র যাকাত উনার সুনির্দিষ্ট হক্ব মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক নির্ধারিত। তা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পরিমাণ নির্ধারিত রয়েছে, যেমন-
عَنْ حَضَرَتْ عَلِىّ عَلَيْهِ السَّلَامَ عَنِ النَّبِىّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِبَعْضِ اَوَّلِ هَذَا الْـحَدِيثِ قَالَ فَاِذَا كَانَتْ لَكَ مِائَتَا دِرْهَمٍ وَحَالَ عَلَيْهَا الْـحَوْلُ فَفِيْهَا خَـمْسَةُ دَرَاهِمَ وَلَيْسَ عَلَيْكَ شَىْءٌ يَعْنِى فِى الذَّهَبِ حَتَّى يَكُوْنَ لَكَ عِشْرُوْنَ دِيْنَارًا فَاِذَا كَانَ لَكَ عِشْرُوْنَ دِيْنَارًا وَحَالَ عَلَيْهَا الْـحَوْلُ فَفِيْهَا نِصْفُ دِيْنَارٍ فَمَا زَادَ فَبِحِسَابِ ذَلِكَ.

অর্থ : “হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যদি তোমার ২০০ দিরহাম তথা সাড়ে ৫২ তোলা (বা প্রায় ৬০০ গ্রাম) রৌপ্যমুদ্রা থাকে এবং তোমার মালিকানায় এক বছর পূর্ণ হয়, তাহলে তাতে ৫ দিরহাম তথা ২.৫% বা ১৫ গ্রাম রূপা যাকাত ফরয হবে। স্বর্ণের ক্ষেত্রে তোমাকে কোন যাকাত দিতে হবে না, যতক্ষণ না তুমি ২০ দীনার বা মিছকাল তথা সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণের মালিক হও। যখন তোমার নিকট ২০ দীনার বা মিছকাল তথা সাড়ে ৭ তোলা বা প্রায় ৮৫ গ্রাম স্বর্ণ হবে এবং তাতে এক বছর পূর্ণ হবে, তখন তা থেকে অর্ধ দীনার বা অর্ধ মিছকাল তথা ৪০ ভাগের ১ ভাগ পবিত্র যাকাত প্রদান করতে হবে। এর বেশি যা হবে, তা থেকে এ হিসেবেই দিতে হবে।” (আবূ দাউদ শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ফী যাকাতিস সায়িমাহ : হাদীছ শরীফ নং ১৫৭৩)

সুতরাং উপরোল্লিখিত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মাধ্যমে ৪০-এ ১ টাকা, ১০০-তে ২.৫ টাকা, ২০০-তে ৫ টাকা, ১০০০-এ ২৫ টাকা যাকাত ধার্য করা হয়েছে। এভাবে যত উর্ধ্বে যাক না কেন সে অনুযায়ী যাকাত দিতে হবে।
মাল-সম্পদের প্রকৃতি বা ধরন অনুযায়ী বিভিন্ন মালের নিছাব বিভিন্ন রকম। (ফিকাহর কিতাবসমূহ)