মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন

সুওয়াল ১০ : ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদ্‘য়াত, নতুন উদ্ভাবন। সকল বিদ্‘য়াত পরিত্যাজ্য। তাই ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পরিত্যাজ্য।
সুওয়াল ১১ : কোন বিদ্‘য়াতই ইসলামী শরীয়ত উনার অংশ হতে পারে না। কারণ তা গুমরাহী, যদিও মানুষ তা ভাল মনে করে।
সুওয়াল ১২ : বিদ্‘য়াত যতোই সুন্দর হোক না কেন, তা বর্জনীয়।
জওয়াব : পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বা ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনোই নতুন উদ্ভাবন নয়। তাই বিদ্‘য়াত হওয়ার প্রশ্নই আসে না বরং পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা ফরয। সুবহানাল্লাহ!
যেহেতু মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারণে বান্দা-বান্দী, উম্মতকে খুশি প্রকাশ করতে বলেছেন। সেহেতু এই খুশি প্রকাশ করাকে মহান আল্লাহ পাক তিনি সর্বোত্তম ইবাদত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। সুবহানাল্লাহ!

ইসলামী শরীয়ত উনার মধ্যে সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও কোন আমলকে বিদয়াত বলা চরম গুমরাহী
মহান আল্লাহ পাক উনার কর্তৃক পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন

মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ اللهَ وَمَلَا ئِكَتَ يُصَلُّوْنَ عَلَى النَّبِيّ ۚ يَا اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا صَلُّوا عَلَيْهِ وَسَلّمُوْا تَسْلِيْمًا
অর্থ : “নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র ছলাত শরীফ পাঠ করেন। হে ঈমানদারগণ! তোমরাও উনার প্রতি পবিত্র ছলাত শরীফ পাঠ করো এবং পবিত্র সালাম শরীফ দেয়ার মতো পবিত্র সালাম শরীফ দাও অর্থাৎ যথাযথ আদবসহকারে তথা পবিত্র ক্বিয়াম বা দাঁড়িয়ে সালাম পেশ করো।” (পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৬)

উপরের পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি অনাদি কাল থেকেই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ছলাত শরীফ পাঠ করছেন। অর্থাৎ মহান আল্লাহ পাক তিনিই সর্বপ্রথম পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করেন। এবং পরবর্তীতে বান্দা-বান্দীদেরকেও পবিত্র ঈদে মীলাদে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অর্থাৎ পবিত্র সাইয়্যিদুল আ’ইয়াদ শরীফ পালন করতে নির্দেশ মুবারক প্রদান করেন, যা উক্ত পবিত্র আয়াত শরীফ উনার শেষাংশে উল্লেখ রয়েছে। এই নির্দেশ মুবারক আরো শক্তভাবে অন্য পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত হয়েছে।

যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَا اَيُّهَا النَّاسُ قَدْ جَاءَتْكُم مَّوْعِظَةٌ مّن رَّبّكُمْ وَشِفَاءٌ لّـِمَا فِي الصُّدُوْرِ وَهُدًى وَّرَحْـمَةٌ لّـِلْمُؤْمِنِيْنَ ◌ قُلْ بِفَضْلِ اللهِ وَبِرَحْـمَ فَبِذٰلِكَ فَلْيَفْرَحُوْا هُوَ خَيْرٌ مّـِمَّا يَـجْمَعُوْنَ
অর্থ : “হে মানবজাতি! অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে তোমাদের মধ্যে তাশরীফ মুবারক এনেছেন মহান নছীহত মুবারক দানকারী, তোমাদের অন্তরের সকল ব্যাধিসমূহ শিফা মুবারক দানকারী, কুল-কায়িনাতের মহান হিদায়েত মুবারক দানকারী ও খাছভাবে ঈমানদারদের জন্য, আমভাবে সমস্ত কায়িনাতের জন্য মহান রহমত মুবারক দানকারী (নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)। হে আমার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি উম্মাহকে বলে দিন, মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত ফদ্বল বা অনুগ্রহ মুবারক ও সম্মানিত রহমত মুবারক হিসেবে উনার হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেছেন; সেজন্য তারা যেনো সম্মানিত ঈদ উদযাপন তথা খুশি মুবারক প্রকাশ করে। এই খুশি মুবারক প্রকাশ বা ঈদ করাটা সেসব কিছু থেকে উত্তম, যা তারা দুনিয়া আখিরাতের জন্য সঞ্চয় করে।” (পবিত্র সূরা ইঊনুস শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ৫৭-৫৮)

সুতরাং যে ইবাদতটি সর্বোত্তম ইবাদত ও সর্বশ্রেষ্ঠ ফরয। এমনকি মানুষ সৃষ্টির মূল লক্ষ্যই হচ্ছে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে পাওয়ার কারণে খুশি প্রকাশ করা। তাই সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ ফরয ইবাদতকে বিদ্‘য়াত বলা সম্পূর্ণরূপে কুফরী।