জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া
মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,
كل نفس ذائعة الموت.
অর্থাৎ “প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুবরণ করতে হবে।” (সূরা আলে ইমরান/১৮৫. সূরা আম্বিয়া/৩৫, সূরা আনকাবূত/৫৭) কাজেই কোন মুসলমান মৃত্যুবরণ করার পর জীবিতদের প্রতি দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে যথা শীঘ্র মৃত ব্যক্তির দাফনের ব্যবস্থা করা এবং দাফন কার্য্যে বিলম্ব না করা। কেননা আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
اذا مات احد كم فلا تحبسوه واسرعوابه الى قبره.
অর্থ : “ তোমাদের মধ্যে যখন কেউ মৃত্যূ বরণ করে তখন তাকে আবদ্ধ করে রেখে দিওনা বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাকে দাফন করতে কবরে নিয়ে যাও।” (তাবারানী) অবশ্য দাফনের পূর্বে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী কাজ রয়েছে, যেমন প্রথমতঃ মাইয়্যেতকে গোসল করানো, দ্বিতীয়তঃ কাফনের কাপড় পরিধান করানো, তৃতীয়তঃ মাইয়্যেতের উপর জানাযা পড়া। মূলতঃ মাইয়্যেতের উপর জানাযা পড়া শুধু ফযীলত লাভেরই কারণ নয় বরং মাইয়্যেতের উপর জানাযা পড়া স্বয়ং মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন-এর নির্দেশ। যেমন তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে লক্ষ্য করে মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন বলেন,
صل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থ : “(হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি তাদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাদের জন্য শান্তির কারণ সরূপ।” (সূরা তাওবা/১০৩) অত্র আয়াতে কারীমায় স্বয়ং আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন জানাযা নামাযের গুরুত্ব, ফাযায়েল-ফযীলত বর্ণনা করেছেন। আর তা মু’মিন-মুসলমানগণের জন্য রহমত, বরকত ও শান্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। নিম্নে ধারাবাহিকভাবে জানাযা নামাযের ফাযায়েল-ফযীলত ও গুরুত্ব-তাৎপর্য সম্পর্কিত দলীলসমূহ উল্লেখ করা হল-
রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামায পড়ার কারণেই ইহা মু’মিনগণের জন্য শান্তি স্বরূপ।
[১-১২]
عن عوف بن مالك رضى الله عنه يقول صلى رسول الله صلى الله عليه وسلم على جنازة فحفظت من دعائه وهو يقول اللهم اغفرله وارحمه وعافه واعف عنه واكرم نزله ووسع مد خله واغسله بالماء والثلج والبرد ونقه من الخطايا كما نقيت الثوب الابيض من الدنس وابدله دارا خيرا من داره واهلا خيرا من اهله وزوجا خيرا من زوجه وادخله الجنة واعذه من عذاب القبر ومن عذاب النار قال حتى تمنيت ان اكون انا ذلك الميت. (مسلم شريف ج 1 ص 311- مسلم بشرح النووى ج 4 ص 30- مسلم بشرح الابى والسنوسى ج 3 ص 372- مشكوة شريف ص 145- مرقاة- شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة المعات- مظاهر حق- مراة المناجيح- مصنف ابن ابى شيبة ج 3 ص 291)
অর্থ : “হযরত আউফ ইবনে মালিক আশ্জায়ী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার রসূলুল্লাহু ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এক জানাযা নামায পড়লেন। আমি তাঁর দুয়ার কিছু অংশ মুখস্ত রেখেছি। তিনি দুয়াতে বলেছেনঃ “আয় আল্লাহ্ পাক! আপনি তাকে মাফ করুন, তার প্রতি রহম (দয়া) করুন, তাকে শান্তিতে রাখুন, তার অবস্থানকে মর্যাদাময় করুন, তার কবর-অবস্থান স্থলকে প্রশস্ত করুন, তাকে পাক-পবিত্র করে দিন, পানি, বরফ ও বৃষ্টির পানি দ্বারা। তাকে গুণাহ থেকে এভাবে পবিত্র করে দিন, যেমন সাদা কাপড়কে ময়লা থেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা হয়। তাকে তার বাড়ী থেকে উত্তম বাড়ী দান করুন, তার পরিবার থেকে উত্তম পরিবার, তার স্ত্রী থেকে উত্তম স্ত্রী দান করুন। তাকে কবরের ও দোযখের আযাব থেকে রক্ষা করুন।” হযরত আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি আকাংখা করতে লাগলাম যে, হায়! আমি যদি এই মৃত ব্যক্তিই হতাম! (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩১১ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন নববী ৪র্থ জিঃ ৩০ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৩য় জিঃ ৩৭২ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, লুময়াত, আশয়াতুল্ লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ, মুছান্নাফু ইবনে আবী শাইবাহ্ ৩য় জিঃ ২৯১পৃষ্ঠা)
[১৩-১৭]
عن ابى هريرة رضى اله عنه ان اسود رجلا
او امرأة كان يكون فى المسجد يقم المسجد فمات ولم يعم النبى صلى الله عليه وسلم بموته فذكره ذات يوم فقال مافعل ذلك الانسان قالوا مات يارسول الله صلى الله عليه وسلم قال افلا اذنتمونى فقالوا انه كان كذا وكذا قصته قال فحقر واشانه قال فدلونى على قبره قال فاتى قبره فصلى عليه. (بخارى شريف ج1 ص 178- فتح البارى ج3 ص 205- عمدة القارى ج 8 ص 142- البخارى بشرح الكرمانى ج 8 ص 116- تيسير البارى ج 2 ص 295)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। আসওয়াদ নামক একজন পুরুষ অথবা মহিলা মসজিদে থাকত এবং মসজিদ ঝাড়ু দিত। সে মারা গেল কিন্তু নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার মৃত্যুর সংবাদ পেলেন না। অন্যদিন তার কথা স্বরণ হলে তিনি বললেন, ঐ লোকটি কোথায়? সকলেই বলে উঠলো ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেতো মারা গেছে। তিনি বললেন, তোমরা আমাকে জানালে না কেন? তাঁরা লোকটির কাহিনী বলে বলল, সে তো এরূপ এরূপ লোক ছিল। নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তখন বললেন, আমাকে দেখিয়ে দাও তার কবর কোথায়। (দেখানো হলো) অতপর তিনি তার কবরের পার্শ্বে উপস্থিত হলেন এবং জানাযা নামায আদায় করলেন।” (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ১৭৮ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ৩য় জিঃ ২০৫ পৃষ্ঠা, উমদাতুল্ ক্বারী ৮ম জিঃ ১৪২ পৃষ্ঠা, আল বুখারী বিশরহিল কিরমানী ৭ম জিঃ ১১৬ পৃষ্ঠা, তাইসীরুল্ বারী ২য় জিঃ ২৯০পৃষ্ঠা)
[১৮-২৮]
عن ابى هريرة رضى الله عنه ان امرأة سوداء كانت تقم المسجد او شابا ففقدها رسول الله صلى اله عليه وسلم فسأل عنها او عنه فقالوا مات قال افلاكنتم اذنتمونى قال فكانهم صغروا امرها او امره فقال دلونى على قبره فدلوه فصلى عليها ثم قال ان هذه القبور مملوئة ظلمة على اهلها وان الله ينورها لهم بصلاتى عليهم. (مسلم شريف ج1ص 310 311- مسلم بشرح النووى ج 4 ص 25-26، شرح الابى واسوسى ج 3 ص 367- مشكوة شريف ص 145- مرقاة. شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة اللمعات- مظاهر حق- مراة امناجيح)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একজন কালো মহিলা অথবা একজন যুবক মসজিদ ঝাড়ু দিত। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে কয়েকদিন না পেয়ে তার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। লোকেরা তাঁকে জানালেন যে, সে মারা গেছে। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা আমাকে জানাওনি কেন? রাবী বলেন, তারা যেন তার ব্যাপারটি গুরুত্ব দেননি। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা আমাকে তার কবর দেখিয়ে দাও। তারা কবরটি দেখিয়ে দিলেন। তিনি ঐ কবর সামনে রেখে জানাযার নামায আদায় করলেন। অতপর বললেন, এ কবরগুলো তাদের জন্য অত্যন্ত অন্ধকার। আল্লাহ্ পাক আমার নামাযের কারণে তাদের কবরকে আলোকিত করে দিবেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩১০, ৩১১ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী ৪র্থ জিঃ ২৫, ২৬ পৃষ্ঠা, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৩য় জিঃ ৩৬৭ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, লুময়াত, আশয়াতুল্ লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ)
মাসয়ালা
উল্লেখ্য, আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক কাউকে যদি বিনা জানাযায় দাফন করা হয় তবে দাফন করা থেকে তিন দিনের মধ্যে তার কবরে জানাযা পড়া জায়িয রয়েছে। তিন দিনের পরে কবরে জানাযা পড়া জায়িয নেই।
মৃত ব্যক্তির জন্য জানাযা আদায় কারীদের সুপারিশ কবুল করা হয়
[২৯-৪০]
عن كريب موى ابن عباس عن عبد الله بن عباس رضى الله عنها انه مات ابن له بقديد او بعسفان فقال ياكريب انظر مااجتمع له من الناس قال فخرجت فاذا ناس قد اجتمعوا له فاخبرته فقال تقول هم اربعون قال نعم قال اخرجوه فانى سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول ما من رجل مسلم يموت فيقوم على جنازته اربعون رجلا لا يشر كون بالله شيأ الا شفعهم الله فيه. (مسلم شريف ج1ص308- مسلم بشرح النووى ج4 ص 18- مسلم بشرح الابى والسنوسى ج 3 ص 35- مشكوة شريف ص 145- مرقاة- شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة اللمعات- مظاهر حق- مراة المناجيح- ابن ماجة ص 108)
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা’র গোলাম কুরাইব হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণনা করেন যে, কুদাইদ অথবা উসফান নামক স্থানে হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা-এর এক পুত্র মারা গেল। তখন তিনি বললেন, কুরাইব যেয়ে দেখে আস তার জানাযায় জন্য কত সংখ্যক লোক জমা হয়েছে। কুরাইব বলেন, আমি বের হলাম এবং দেখলাম যে অনেক লোক জমা হয়েছে। তাঁকে এই সংবাদ দিলাম। তিনি বললেন, চল্লিশজন হবে বলে তুমি মনে কর? আমি হাঁ বললাম। তখন তিনি বললেন, তাঁকে (মৃতু ব্যক্তিকে) বের করে আন। অতঃপর তিনি বললেন, আমি রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে কোন মুসলমান ব্যক্তি মারা যায় আর তার জানাযায় এমন চল্লিশজন লোক দাঁড়ায় যারা আল্লাহ্র সহিত কাউকে শরীক করেনা। নিশ্চয়ই আল্লাহ্ পাক তার সম্পর্কে তাদের সুপারিশ কবুল করেন বা দুয়া কবুল করেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী ৪র্থ জিঃ ১৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিল উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৩য় জিঃ ৫৭ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, শরহুত্ ত্ববী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ, ইবনু মাজাহ্ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা)
[৪১-৪৪]
عن كريب عن ابن عباس رضى الله عنهما قال سمعت النبى صلى الله عليه وسلم يقول مامن مسلم يموت فيقوم على جنازته ارتعون رجلا لايشركون بالله شيئا الا شفعوا فيه. (ابو داؤد شريف ج 2 ص 96- بذل المجهوده ص 198 – عون امعبود ج 3 ص 176- شرح ابى داؤد لبد لبدر الدين العينى ج 6 ص 99)
অর্থ : “হযরত কুরাইব হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমি নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যখন কোন মুসলমান লাশের উদ্দেশ্যে এমন চল্লিশজন লোক জানাযা নামায পড়ে, যারা আল্লাহ্ পাক উনার সাথে কাউকে শরীক করেনা, তাদের সুপারিশ ঐ মৃত ব্যক্তির জন্য কবুল করা হয়।” (আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ৯৬ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৫ম জিঃ ১৯৮ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বূদ ৩য় জিঃ ১৭৬ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ ৯৯ পৃষ্ঠা) [৪৫-৫৫] عن عائشة رضى الله عنها عن النبى صلى الله عليه وسم قال مامن ميت تصلى عليه امة من المسلمين يبلغون مائة كلهم يشفعون له الاشفعوا فيه قال فحدثت به شعيب بن الحبحاب فقال حدثنى به انس بن مالك رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم. (مسلم شريف ج1 ص 308- مسلم بشرح النووى ج 4 ص 17- مسلم بشرح الابى والسنوسى ج 3 ص 356- مشكوة شريف ص 145- مرقاة- شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة اللمعات- مظاهرحق- مراة المناجيح)
অর্থ : “হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেছেন। নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যদি কোন মৃত ব্যক্তির জানাযা নামায পড়ে একদল মুসলমান যাদের সংখ্যা একশত পর্যন্ত পৌঁছে এবং প্রত্যেকে সুপারিশ করে তার জন্য, নিশ্চয়ই তার (মৃত্যু ব্যক্তির) সম্পর্কে তাদের সুপারিশ কবুল করা হয়। হযরত আব্দুল্লাহ্ বলেন, আমি এ হাদীস শুয়াইব ইবনে হাবহাব কে জানালাম। তিনি বললেন, হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুও আমার নিকট হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে এই হাদীস শুনেছেন বলে বর্ণনা করেছেন।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৮পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন্ নববী ৪র্থ জিঃ ১৭পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৩৫৬ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৫ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, লুময়াত, আশয়াতুল্ লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ)
[৫৬]
عن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم قال من صلى عليه مائة من المسلمين غفرله. (ابن ماجة شريف ص 108)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি বলেছেন, যে কোন মৃত ব্যক্তির উপর একশতজন মুসলমান নামাযে জানাযা পড়লো, সেই মৃত ব্যক্তিকে ক্ষমা করা হয়।” (ইবনু মাজাহ্ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা)
তিন কাতারে মাইয়্যিতের জানাযা পড়লে তার জন্য জান্নাত ওয়াযিব হয়ে যায় [৫৭-৬৮]
عن مالك ابن هبيرة قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم مامن ميت يموت فيصلى عليه ثلاثة صفوف من المسلمين الا اوجب قال فكان مالك اذا استقل اهل الجنازة جزأهم ثلثة صفوف للحديث. (ابو داؤدشريف ج 2 ص 95- بذل المجهوجج 5 ص 19- عون المعبود ج 5 ص 197- عون المعبود ج 3 ص 174- شرح ابى داود لبدر الدين العينى ج 6 ص 96- مشكوة شريف ص 147- مرقاة شريف، شرح الطيبى- التعليق الصبيح- اللمعات- اشعة اللمعات- مظاهر حق- مراة المناجيح)
অর্থ : “হযরত মালিক ইবনে হুবাইরাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যে কোন মুসলামান ব্যক্তির জন্য জীবিত মুসলমানগণ তিন কাতার করে (তার জানাযা) পড়লে আলাহ্ পাক তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব করে দেন। রাবী বলেন, এজন্য হযরত মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন কোন জানাযায় লোক কম দেখতেন, তখন তাদেরকে তিন কাঁতারে বিভক্ত করে দিতেন।” (আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ৯৫ পৃষ্ঠা, বযলুল মাজহুদ ৫ম জিঃ ১৯৭ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বূদ ৩য় জিঃ ১৭৪ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লি বদরিদ্দীন আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ ৯৬ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৭ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত শরীফ, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ্)
[৬৯-৮০]
عن مرثد بن عبد الله اليزنى رحمة الله عليه قال كان مالك بن هبيرة اذا صلى على جتازة فتقال الناس عليها جزا اهم ثلثة اجزاء ثم قال قال رسول الله صلى الله عليه وسم من صلى عليه ثلثة صفوف فقد اوجب. (ترمذى شريف ج ১ ص ১২২- تحفة الاحوذى ج 4 ص 113-113- عارضة الاحوذى د4 ص 246- شرح الطيبى- التعليق الصبيح—مظاهرحق- مراة المناجيح- ابن ماجة شريف ص 108)
অর্থ : “হযরত মারছাদ ইবনে আব্দুল্লাহ্ ইয়াযানী রহমতল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত মালিক ইবনে হুবাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু যখন জানাযা নামায পড়াতেন তখন লোকজনদের উপস্থিতি কম হলে তিনি তাদেরকে তিন সারিতে ভাগ করতেন। অতপর তিনি বলতেন, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তিন কাঁতার লোক যার জানাযা নামায পড়ছে তার জন্য বেহেশ্ত ওয়াজিব হয়েছে।” (তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ১১২, ১১৩ পৃষ্ঠা, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ২৪৬ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৭ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল্ লুময়াত, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল্ মানাজীহ্, ইবনু মাজাহ্ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা)
শুধু জানাযা নামায পড়লে ‘এক’ক্বীরাত্ব’ সওয়াব হাছিল হয়
যে ব্যক্তি শুধু জানাযা নামায পড়ল কিন্তু দাফন করা পর্যন্ত থাকল না সে এক ক্বীরাত্ব সাওয়াব পাবে। আর যে নামায পড়ার পর দাফনও সমাধা করল সে দুই ক্বীরাত সওয়াব পাবে। আর ক্বীরাত্ব হচ্ছে উহুদ পাহাড় পরিমাণ সওয়াব। যেমন, এ সম্পর্কে হাদীস শরীফের কিতাব সমূহে বর্ণিত রয়েছে,
[৮১-৮৯]
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من شهد الجنازة حتى يصلى عليه فله قيراط ومن شهد حتى يدفن كان له قيرا طان قيل وما القيراطان قال مثل الجبلين العظيمين. (بخارى شريف ج 1 ص 177- فتح البارى ج 2 ص 196- عمدة القارى ج 8 ص 169، ارشاد السارى شرح الكرمانى ح 7 ص 110- تيسير البارى ج 2 ص 288- مسلم شريف ج1 ص 307- مسلم بشرح النووى- مسلم بشرح الابى والسنوسى)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জানাযায় উপস্থিত হয়ে নামায পড়বে সে এক ক্বীরাত ছওয়াব পাবে। আর যে ব্যক্তি দাফন পর্যন্ত থাকবে সে দু’ক্বীরাত ছওয়াব পাবে। জিজ্ঞাসা করা হল ক্বীরাত কি? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, দুটি বড় পর্বত সমতুল্য ছওয়াব।” (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ১৭৭ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ৩য় জিঃ ১৯৬ পৃষ্ঠা, উমদাতুল ক্বারী ৮ম জিঃ ১৬৯ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী, শরহুল্ কিরমানী ৭ম জিঃ ১১০ পৃষ্ঠা, তাইসীরুল্ বারী ২য় জিঃ ২৮৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, মুসলিম বি শরহিন্ নববী, মুসলিম বিশরহিল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী)
[৯০-৯৮]
حدث ابن عمر ان اباهريرة يقول من تبع جنازة فله قيراط فقال اكثر ابو هريرة علينا فصدقت يعنى عائشة ابا هريرة وقالت سمعت رسول الله صلى اله عليه وسلم يقول فقال ابن عمر لقد فرطنا فى قواريط كثيرة فرطت ضيعت من امر الله. (بخارى شريف ج 1 ص 177- فتح البارى ج 3 ص 192- عمدة القارى ج ص، ১২৬، ارشاد السارى- شرح الكرمانىج 7 ص 109- 110- تيسير البارى ج 2 ص 287- سلم شريف 1ج ص 307- نسلن بشرح النووى ج 4 ص 15- مسلم بشرح الابى والسنوسى ج 3 ص 354)
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বলা হয়েছে যে, হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি জানাযায় শরীক হবে সে এক ক্বীরাত পরিমাণ সাওয়াব পাবে। এ কথা শুনে তিনি বলেন, হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু অধিক মাত্রায় হাদীস বর্ণনা করে থাকেন। তখন হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু -এর সমর্থন করে বলেন, আমিও রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এরূপ বলতে শুণেছি। তখন হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা বলেন, তাহলে তো আমরা অনেক ক্বীরাতই হারিয়েছি।” (বুখারী শরীফ ১ম জিঃ ১৭৭ পৃষ্ঠা, ফতহুল বারী ৩য় জিঃ১৯২ পৃষ্ঠা, উমদতুল ক্বারী ৮ম জিঃ ১২৬ পৃষ্ঠা, ইরশাদুস্ সারী, শরহুল্ কিরমানী ৭ম জিঃ ১০৯ ও ১১০ পৃষ্ঠা, তাইসীরুল বারী ২য় জিঃ ২৮৭ পৃষ্ঠা, মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী ৪র্থ জিঃ ১৫ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী ৩য় জিঃ ৩৫৪ পৃষ্ঠা)
[৯৯-১০১]عن سعيد بن المسيب رضى الله عنه عن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عيه وسلم الى قوله الجبلين العظيمين ولم يذكر امابعده وفى حديث عبد الاعلى حتى يفرغ منها وفى حديث عبد الرزاق حتى توضع فى اللحد. (مسلم ج 1 ص 307 مسلم بشرح النووى- مسلم بشرح الابى والسنوسى.
অর্থ : “হযরত সাঈদ ইবনে মুসাইয়্যিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন। তিনি হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে (ক্বিরাত হলো) দুটি বড় পাহাড়, পর্যন্ত বর্ণনা করেন। নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর পরবর্তী অংশ বর্র্ণনা করেননি। আর আব্দুল আ’লা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বর্ণনায় শেষ না হওয়া পর্যন্ত এবং আব্দুর রায্যাক রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বর্ণনায় কবরে না রাখা পর্যন্ত বর্ণিত রয়েছে।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন নববী, মুসলিম বিশরহিল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী)
[১০২-১০৪]عن ابى هريرة رضى الله عنه عن النبى صلى الله عليه وسلم بمثل حديث معمر وقال ومن اتبعها حتى تد فن. (مسلم شريف ج 1 ص 307- مسلم بشرح النووى- مسلم بشرح الابى والسوسى)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে মা’মার এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে এভাবে বলেছেন, যে জানাযার অনুসরণ করে দাফন করা পর্যন্ত।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশ্রহিন্ নববী, মুসলিম বিশরহিল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি জানাযা নামায পড়লো, কিন্তু দাফন পর্যন্ত সাথে থাকলো না তার জন্য এক ক্বীরাত পরিমাণ সওয়াব। আর যে ব্যক্তি মৃতের সাথে দাফন করা পর্যন্ত থাকলো তার জন্য দু’ক্বীরাত পরিমাণ সওয়াব রয়েছে। জিজ্ঞাসা করা হলো, দু’ক্বীরাত কি? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ছোট ক্বীরাত উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী)
[১০৮-১১৫] ان داؤد بن عامربن سعدبن ابى وقاص حدثه عن ابيه انه كان قاعدا عند عبد الله بن عمر اذا طلع خباب صاحب المقصورة فقال يا عبد الله بن عمر الا تسمع ما يقول ابو هريرة انه سمع رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول من خرج مع جنازة من بيتها وصلى عليها ثم تبعها حتى تدفن كان له قير اطان من اجر كل قيراط مثل احد ومن صلى عليها ثم رجع كان ه من الاجر مثل احد فارسل ابن عمر خبابا الى عائشة يسألها عن قول ابى هريرة ثم يرجع اليه فيخبره ماقالت واخذ ابن عمر قبضة من حصى المسجد يقلبها فى يده حتى رجع اليه الرسو فقال قالت عائشة صدق ابو هريرة فضرب ابن عمر بالحصى الذى كان فى يده الارض ثم ثال لقد فرطنا فى قراريط كثيرة. (مسلم شريف ج 1 ص 307- مسلم بشرح النووئ، شرح الابى والسنوسى- ترمذى شريف ج 1 ص 124- تحفة الاحوذى، عارضة الاحوذى- معارف السنن- درس ترمذى-
অর্থ : “হযরত দাউদ ইবনে আমির ইবনে সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর পিতা আমির ইবনে সা’দ ইবনে আবী ওয়াক্কাছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণনা করেন। নিশ্চয়ই তিনি একদা হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর নিকট বসা ছিলেন। হঠাৎ গৃহ কর্তা হযরত খব্বাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আগমন করলেন এবং বললেন, হে আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আপনি কি শুনেছেন হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কি বলেছেন? তিনি রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যে ব্যক্তি তার ঘর থেকে জানাযার সাথে বের হলো, জানাযার ছলাত আদায় করলো, অতঃপর দাফন করা পর্যন্ত সাথে থাকলো তবে সে দু’ক্বীরাত সওয়াব পাবে। প্রত্যেক ক্বীরাত উহুদ পাহাড়ের সমান হবে। আর যে ব্যক্তি জানাযার নামায শেষ করে চলে আসলো সে উহুদ পাহাড় সমপরিমাণ (এক ক্বীরাত) সওয়াব পাবে। তখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত খব্বাব রদ্বিয়াল্লাহু আনহুকে হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর নিকট পাঠালেন। হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বর্ণনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে তার উত্তরে তিনি কি বলেন, পুনরায় ফিরে এসে তাকে তিনি কি বললেন তা অবহিত করতে। অতঃপর হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু মসজিদ থেকে এক মুষ্টি কংকর হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করতে লাগলেন। ইতি মধ্যে তাঁর কাছে দূত ফিরে এসে বললেন, হযরত আয়েশা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেছেন, হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু সত্য বলেছেন। হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তার হাতের কংকর গুলো নিক্ষেপ করে বললেন, আমরা অনেক ক্বীরাত নষ্ট করে দিয়েছি।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী, শরহুল উবাই ওয়াস্ সিনূসী, তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ১২৪ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, মায়ারিফুস্ সুনান, দরসে তিরমিযী)
[১১৬-১১৮] عن ثوبان رضى الله عنه مولى رسول الله صلى الله عليه وسم ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال من صلى على جنازة فله قيراط فان شهد دفنها فله قيراطان القيراط مثل احد. (مسلم شريف ج 1 ص 307- مسلم بشرح النووى، شرح الابى والسنوسى)
অর্থ : “হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু তায়াল আনহু থেকে বর্ণিত। হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি জানাযা নামায আদায় করল তার জন্য এক ক্বীরাত সওয়াব হবে। আর যদি দাফন কার্যে উপস্থিত থাকে, তবে দু’ক্বীরাত সওয়াব পাবে। প্রত্যেক ক্বীরাত উহুদ পাহাড়ের সমপরিমাণ।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৭ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী, শরহুল্ উবাই ওয়াস্ সিনূসী)
[১১৯-১২৮]
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من اتبع جنازة مسلم ايمانا واحتسابا وكان معه حتى يصلى عليها ويفرغ من ذفنها فانه يرجع من الاجر بقيراطين كل قيراط مثل احد ومن صلى عليها ثم رجع قبل ان تدفن فانه يرجع بقيراط متفق عليه. (مشكوة شريف ص 144- مرقاة- اشعة اللمعات- اللمعات- شرح الطيبى- التعليق الصبيح- مظاهرحق- مرأة المناجيح- بخارى شريف- مسلم شريف)
অর্থ : “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সহিত সওয়াবের নিয়তে কোন মুসলমানের লাশের অনুগমন করেছে এবং তার সহিত রয়েছে, যতক্ষণ না তার জানাযা পড়েছে এবং দাফন করেছে, সে দুই ক্বীরাত সওয়াব নিয়ে প্রত্যার্বতন করেছে। প্রত্যেক ক্বীরাত হচ্ছে উহুদ পাহাড় বরাবর। আর যে ব্যক্তি জানাযা নামায পড়েছে কিন্তু দাফন করার পূর্বে প্রত্যাবর্তন করেছে, সে এক ক্বীরাত সওয়াব নিয়ে প্রত্যাবর্তন করেছে।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ ১৪৪ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত, আশয়াতুল লুময়াত, লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ)
[১২৯-১৩১]
حدثنا ابان كلهم عن قتادة رحمة الله عليه بهذا الاسناد مثله وفى حديث سعيد وهشام سئل النبى صلى الله عليه وسلم عن القيراط فقال مثل احد. (مسلم شريف ج 1 ص 308- مسلم بشرح النووى، مسلم بشرح الابى والسنوسى)
অর্থ : “সকলেই হযরত ক্বতাদা রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে এই সনদে অনুরূপ ঐভাবে বর্ণনা করেছেন। আর হযরত সাঈদ ও হিশাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমা দ্বয়ের বর্ণনায় রয়েছে, নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ক্বীরাত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বললেন, তাহলো উহুদ পাহাড়ের মত।” (মুসলিম শরীফ ১ম জিঃ ৩০৮ পৃষ্ঠা, মুসলিম বিশরহিন্ নববী, মুসলিম বিশরহিল উবাই ওয়াস্ সিনূসী) জানাযার কারণে মৃত ব্যক্তির প্রতি পূর্ণ কর্তব্য পালিত হয়
অর্থ : “হযরত আব্বাদ ইবনে মানছূর রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আবুল মুহাযযাম রহমতুল্লাহি আলাইহিকে বলতে শুনেছিঃ আমি দশ বৎসর যাবৎ হযরত আবু হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সাহচর্যে ছিলাম। আমি তাকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি জানাযা নামায পড়ে এবং জানাযা তিন বার বহন করে, সে মৃত ব্যক্তির প্রতি তার কর্তব্য পূর্ণরূপে পালন করল।” (তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ১২৪ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্ আওহয়াযী, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী, মায়ারিফুস্ সুনান, দরসে তিরমিযী) কুরআন ও সুন্নাহ্র উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্য ভাবেই প্রমাণিত হলো যে, মৃত ব্যক্তির উপর জানাযা পড়ার ফাযায়েল-ফযীলত ও গুরুত্ব তাৎপর্য অনেক। (অসমাপ্ত) পরবর্তী সংখ্যার জন্য অপেক্ষায় থাকুন
জানাযা নামায পড়া ফরযে কিফায়াহ্ যা এলাকা বা মহল্লার কিছু সংখ্যক লোক আদায় করলে সকলের পক্ষ থেকে দায়িত্ব (কর্তব্য) পালিত হয়ে যায়। জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্ হওয়ার কারণ হলো, যেহেতু এসম্পর্কে আল্লাহ্ পাক-এর নির্দেশ হচ্ছে-
[১৩৭] صل عليهم ان صلاتك سكن لهم-
অর্থঃ- “(হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি তাঁদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাঁদের জন্য শান্তির কারণ স্বরূপ।” (সূরা তাওবা/১০৩) আর আল্লাহ্ পাক-এর রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন, রহমতুল্লিল আলামীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও জানাযা নামায পড়ার জন্য নির্দেশ করেছেন, [১৩৮-১৩৯] قولهصلى الله عليه وسلم صلوا على كل بر وفاجر (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ج 1 ص 382- اشرف اهداية شرح اردو هذاية ج 2 ص 422(
অর্থঃ- “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার বা পাপী লোকের উপর নামায (জানাযা) পড়।” (হাশিয়াতুত্ ত্বহ্ত্বাবী আলা মারাকিইল্ ফালাহ্ ১ম জিঃ ৩৮২ পৃষ্ঠা, আশরাফুল হিদায়াহ শরহে উর্দূ হিদায়াহ্ ২য় জিঃ ৪২২ পৃষ্ঠা)
[১৪০] ان النبى صلى الله عليه وسلم قال: صلوا على من قال لا اله الا الله. (الكافى فى فقه الامام احمد ج1 ص 362(
অর্থঃ- “নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যারা لا اله الا اللهঅর্থাৎ আল্লাহ্ পাক ছাড়া অন্য কোন মা’বূদ নাই, বলে বা সাক্ষ্য দেয়’ তোমরা তাঁদের জন্য নামায (জানাযা) পড়।” (আল্ কাফী ফী ফিক্হিল ইমাম আহমদ ১ম জিঃ ৩৬২ পৃষ্ঠা)
[১৪১-১৪২] قال صلى الله عليه وسلم صلوا على صاحبكم. (مسند احمد بن حنبل ج 2 ص 290، 381، 399. 453، ج 3 ص 296- حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ج 1 ص 382(
অর্থঃ- “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমরা তোমাদের সাথীদের (মুসলমান-মু’মিন ভাইদের জানাযা) উপর নামায পড়।” (মুসনাদু আহমদ ইবনে হাম্বল ২য় জিঃ ২৯০, ৩৮১, ৩৯৯, ৪৫৩ পৃষ্ঠা, ৩য় জিঃ ২৯৬ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আলা মারাকিইল্ ফালাহ্ ১ম জিঃ ৩৮২ পৃষ্ঠা) উল্লিখিত আয়াত শরীফ এবং হাদীস শরীফ গুলোর প্রতি লক্ষ্য করে উলামা-ই-কিরাম তথা ফুক্বাহা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ জানাযা নামায পড়া ‘ফরযে ক্বিফায়াহ্’ হিসেবে ফতওয়া দিয়েছেন। নিম্নে বিশ্ব বিখ্যাত ও বিশ্বসমাদৃত, সর্বজনমান্য ফিক্বাহের কিতাব থেকে ‘জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্’ বিয়টি আলোচনা করা হলো-
[১৪৩-১৪৪] وصلوته فرض كفاية ش اى ان ادى البعض سقط عن الباقين وان لم يود احياثم الجميع- (شرح وقاية ج 1 ص 181 شرح وقايه كامل اردو ترجمه ج 1 ص 181(
অর্থঃ- “জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্। অর্থাৎ কিছু লোক আদায় করলে অন্যান্যদের থেকে আদায়ের কর্তব্য পালিত হবে। আর যদি একজনও আদায় না করে তবে সকলেই গুণাহ্গার হবে।” (শরহু বিকায়াহ্ ১ম জিঃ১৮১ পৃষ্ঠা, শরহে বিকায়াহ্ কামিল উর্দূ তরজমা’ ১মজিঃ ১৮১ পৃষ্ঠা)
[১৪৫-১৪৬] فرض ھونے کی دلیل یہ ھے کہ فرمایا خدای تعالی نے وصل علیھم ان صلاتک سکن لھم یعنی اے محمد (صلی اللہ علیہ وسلم) نماذ پڑہ ان پر اس واسطے کہ تمھاری نماز ان کے واسطے أرام ھے اور فرض کفایہ ھونا اس سے معلوم ھوتاھے کہ انحضرت نے ایک جنازہ پر خود نمازنھیں پڑھی، صحا بہ سے فرمایا صلوا علی صا حبکم یعنی نماز پڑ ھو اپنے صا حب پڑپس. (شرح وقایہ بحاشیۃ ندوی ج1 ص 181، نور الھدایۃ ترجمہ اردو شرحوقا یہ جاص 143)
অর্থঃ- “(জানাযা নামায) ফরয হওয়ার দলীল এই যে, আল্লাহ্ তায়ালা ইরশাদ করেছেন,
وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থাৎ- “হে মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তাঁদের জন্য নামায পড়ুন, নিশ্চয়ই আপনার নামায তাঁদের জন্য শান্তির কারণ। (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ্ এটা থেকে স্পষ্ট হয় যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদা এক মৃত ব্যক্তির নিজেই নামায না পড়ে হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণকে ফরমালেন,
صلوا على صاحبكم
অর্থাৎ তোমরা তোমাদের সাথীর জন্য নামাযে জানাযা পড়।” (শরহে বিকায়াহ্ বিহাশিয়ায়ে নদবী ১ম জিঃ ১৮১ পৃষ্ঠা, নূরুল্ হিদায়াহ্ উর্দূ তরজমা শরহে বিকায়াহ্ ১ম জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠা)
[১৪৭]
(وصلوته) اى مصلوة الناس عليه (فرض كفاية) اجماعا لظاهر قوله تعالى (وصل عليهم) مع قوله صلى الله عليه وسلم صلوا على صاحبكم. (شرح النقاية شرح مختصر الوقاية ج 1 ص 315(
অর্থঃ- “(জানাযা নামায) অর্থাৎ মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে জীবিত ব্যক্তির নামায (ফরযে কিফায়াহ) যার উপর ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেন,(وصل عليهم) অর্থাৎ হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তাঁদের মৃতব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে নামায পড়ুন) তৎসঙ্গে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উক্তি “তোমরা তোমাদের সঙ্গী-সাথীদের উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়।” (শরহুন্ নিক্বায়াহ্ শরহে মুখতাছারুল বিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৫ পৃষ্ঠা)
[১৪৮]
(وصلوته فرض كفاية) فاذا قام البعض صار حقه مؤدى فسقط عن الباقين كالتكفين. (شرح للمولوى الياس بحاشية شرح النقاية ج 1 ص 315(
অর্থঃ-“(জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্) যদি কিছু সংখ্যক লোক তা আদায় করে তবে এই আদায়ের মাধ্যমে অন্যান্যদের থেকে কর্তব্য পালিত হবে। যেমন কাফনের ব্যাপারে হয়ে থাকে।” (শরহু লিমাউলুবী ইল্ইয়াস বিহাশিয়ায়ে শরহুন্ নিকায়াহ ১ম জিঃ ৩১৫ পৃষ্ঠা)
[১৪৯-১৫১]
)قوله فاذا قرغوا منه صلوا عليه) الصلاة على الميت ثابته بمفهوم القران قال الله تعالى ولاتصل على احدمنهم مات ابدا والنهى عن اصلاة على المنا فقين يشعر بشبوتها على المسلمين الموافقين وثلبتة بالسنة ايضا قال عليه السلام، صلوا على من قال لا اله الا الله” ولا خلاف فى ذلك وهى فرض على الكفاية ويسقط فرضها بالواحد وبالنساء منفردات واذ لم يحضر الميت الا واحد تعينت الصلاة عليه كتكفينه ودفنه- (الجوهرة النيرة شرح مختصر القدورى ج 1 ص 136، الميدا نى حاشية الجوهرة النبيرة ج 1 ص 136، الهداية مع الدراية ج 1 ص 180(
অর্থঃ- “(হযরত আবুল হাসান কুদূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর উক্তিঃ যখন কাফন দেয়া সমাধা করবে তখন মাইয়্যিতের উপর নামায পড়বে) মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামাযে জানায কুরআন শরীফের মাফহুম দ্বারা প্রমানিত। আল্লাহ্ পাক বলেন,
ولا تصل على احد منهم مات ابدا.
অর্থাৎ “হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তাদের (মুনাফিকদের) মধ্য থেকে কারো মৃত্যু হলে তার উপর কখনো নামায (জানাযা) পড়বেন না।” ইহা দ্বারা মুনাফিকদের উদ্দেশ্যে জানাযা নামায পড়া নিষেধ করা হয়েছে। ইহা থেকে শুধু মুসলমানগণের উদ্দেশ্যে পড়ার দলীল ছাবিত হয়। ‘সুন্নাহ’ এর মাধ্যমে আরো প্রমাণিত আছে যে, “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন,
صلوا على من قال لا اله الا الله.
অর্থাৎ- তোমরা তাদের উদ্দেশ্যে নামায পড়, যারা বলে বা সাক্ষ্য দেয় আল্লাহ্ পাক ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নাই।” আর উহার মধ্যে কোন মতবিরোধ নাই যে, তা (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ্। একজন পুরুষ অথবা একজন মহিলা আলাদাভাবে আদায় করলেও (অন্যান্যদের থেকে) ফরয আদায় ছাকিত হবে। যখন মাইয়্যিত একজন থাকবে তখন তার উপর নামায পড়া আবশ্যক হবে। যেমন, কাফন এবং দাফনের ব্যাপারে। (আল্ জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ্ শরহে মুখতাছারুল কুদূরী ১ম জিঃ ১৩৬ পৃষ্ঠা, আল মাইদানী হাশিয়ায়ে জাউহারাতুন্ নিয়্যারাহ্ ১ম জিঃ ১৩৬ পৃষ্ঠা, আল্ হিদায়াহ মায়াদ্ দিরায়াহ ১ম জিঃ ১৮০ পৃষ্ঠা)
[১৫২]
قولہ صلوا علیہ جنازہ کی نماز بالاتفاق فرض کفایہ ھے اسطرح اس کی تجھیز وتکفین اور دفن وغسل بھی. (المصبا ح النوری شرح اردو مختصر القد وری ص 53)
অর্থঃ- “মাইয়্যিতের উপর নামায পড়বে” সকলের ঐক্যমতে জানাযা নামায পড়া ফরযে কিফায়াহ্। যেমন মাইয়্যিতকে তাড়াতাড়ি তাজহীয (মাইয়্যিতকে সাজানো), কাফন এবং দাফন ও গোসল করানো।” (আল মিছবাহুন্ নূরী শরহে মুখতাছারুল্ কুদূরী ৫৩ পৃষ্ঠা)
[১৫৩]
س: هل يشترط الجماعة لاداء صلاة الجنازة؟
ج: لا يشترط، فلو صلى عليه رجل واجد او امرأة اجزأ عن اداء هذه الصلاة، اى يتأجى بذلك فرض الكفاية. (التسهيل الضرورى لمسائل القدورى ج 1 ص 109(
অর্থঃ- “সুওয়ালঃ ‘ছলাতুল্ জানাযা’ আদায়ের জন্য কি জামায়াত শর্ত? জাওয়াবঃ না, শর্ত নয়। যদি একজন পুরুষ লোক অথবা মহিলা লোক নামাযে জানাযা পড়ে তবুও এই নামায আদায়ের জাযা-খায়ের পূর্ণ হবে। অর্থাৎ উক্ত নামায (নামাযে জানাযা) ফরযে কিফায়াহ্ হিসেবে আদায় করবে।” (আত্ তাসহীলুদ্ দ্বারুরী লিমাসাইলিল্ কুদূরী ১ম জিঃ ১০৯ পৃষ্ঠা)
[১৫৪-১৫৬]
نماز جنازہ فرض کفایہ ھے حتی کہ پڑھی یا عورت نے تو یہ فرض سب کے ذمہ سے اتر گیا ورنہ سب گنھگار ھوئے. (التاتار خانیہ) اور جما عت شرط نھیں (النھایہ). (عین الھد ایہ ج 1 ص 893- التاتار خانیۃ، النھایہ)
অর্থঃ- “জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্। এমনকি যদি একজন মহিলাও তা আদায় করে তবে সকলের উপর থেকে ফরযিয়াতের দায়িত্ব মুক্ত হবে। আর যদি কেউই না পড়ে তবে সকলেই গুণাহ্গার হবে (আত্ তাতারখানিয়াহ)। এবং জানাযা নামাযের জামায়াত শর্ত নয় (আন্ নিহায়াহ)।” (আইনুল হিদায়াহ্ ১ম জিঃ ৮৯৩ পৃষ্ঠা, আত্ তাতারখানিয়াহ্, আন্ নিহায়াহ্)
[১৫৭-১৫৮]
نماذ جنازہ کے مشروع ھونے پرباری تعالی کا قول وصل علیھم ان صلاتک سگن لھم دلیل ھے اور حضور صلی اللہ علیہ وسلم کا قول صلوا علی کل بر وفاجر ھے اور اجماع امت ھے (کفایہ) نماز جنازہ فرض علی الکفایہ ھے. (اشرف الھدایہ شرح اردو ھدایہ ج 2 ص 422، کفایہ)
অর্থঃ- “জানাযা নামায শুরু হয়; আল্লাহ্ তায়ালার বাণীঃ
وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থাৎ “(হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আপনি তাঁদের(মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাঁদের জন্য শান্তি স্বরূপ।” এর মাধ্যমে এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীঃ
صلوا على كل بر وفاجر.
অর্থাৎ “তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার বা পাপী লোকদের উপর নামায (জানাযা) পড়।” এর মাধ্যমে। এর মাশরুইয়াতের উপর ইজ্মায়ে উম্মত তথা উম্মতগণের ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। (এটা কিফায়াহ নামক কিতাবে আছে) জানাযা নামায হচ্ছে ফরযে কিফায়াহ।” (আশরাফুল হিদায়াহ শরহে উর্দূ হিদায়াহ ২য় জিঃ ৪২২ পৃষ্ঠা, কিফায়াহ)
[১৫৯-১৬৩]
)فاذا فرغوا عنه) اى عن تكفين الميت (صلوا عليه، لانها) اى لان الصلاة على الميت (فريضة) اراد به فرض كفاية، وهذا مجمع عليه …….. وفى البدائع والتحفة هى فريضه لقوله صلى الله عليه وسلم صلوا على كل بر وفاجر، ولقوله صلى الله عليه وسلم صلوا على من قال لا اله الا الله رواه الدار قطنى وهو ضعيف- وقال صاحب المحيط هى فرض كفاية كالجهاد لكن لا يتبع الاجتماع على الترك كالجهاد. (البناية فى شرح الهداية ج 3 ص 239- البدائع، التحفة، الميط، الدار قطنى(
অর্থঃ- “(যখন তার থেকে ফারেগ হবে) অর্থাৎ মাইয়্যিতের কাফন কার্য থেকে অবসর হবে (তার উদ্দেশ্যে নামায পড়, কেননা তা) অর্থাৎ কেননা মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামায (ফরয) যার দ্বারা তিনি ফরযে কিফায়াহ উদ্দেশ্য করেছেন। আর এর উপর ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ……………… ‘আলবাদাইউছ্ ছনাই’ ও ‘আত্ তুহফাহ্’ নামক কিতাবে আছে এটা (জানাযা নামায) ফরয (কিফায়াহ)। এ বিষয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীঃ
صلوا على كل بر وفاجر.
অর্থাৎ “তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার ব্যক্তির উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়।” হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেন,
صلوا على من قال لا اله الا الله.
অর্থাৎ “যাঁরা আল্লাহ্ পাক ছাড়া কোন মা’বুদ নাই” এতে সাক্ষ্য দেয় তাদের উদ্দেশ্যে জানাযা পড়।” আদ্ দারু কুত্বনী’ এটা বর্ণনা করেছেন। আর এটা যঈফ (দুর্বল) রিওয়ায়েত। ‘আল্ মুহীত্ব’ গ্রন্থের মুছান্নিফ বলেন, জিহাদের মত এটা (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ্। এজন্য যে, সম্মিলিত ভাবে এটা তরক করা জায়িয হবেনা। যেমন জিহাদের ব্যাপারে জায়িয নয়।” (আল্ বিনায়াহ্ ফী শরহিল্ হিদায়াহ্ ৩য় জিঃ ২৩৯ পৃষ্ঠা, আল্ বাদাইউছ্ ছনাই’, আত্ তুহফাহ্, আল্ মুহীত্ব, আদ্ দারু কুত্বনী)
[১৬৪-১৬৬]
نماز جنازہ فرض کفایہ ھے حتی کہ اگر بعض نے پڑہ دی خواہ و ہ ایک ھو با جما عت ھو. خواہ مرد نے پر ھی یاعورت نے تو یہ سب کے نمہ سے اترگیا ورنہ سب گھگار ھوں گے. (تاتارجانیہ) اور جماعت شرط نھس (نھایہ). (نور الدر ایہ شرح اردوھدایہ ج 1 ص 20، تاتارجاتیۃ، نھایہ)
অর্থঃ- “জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ। এমনকি যদি একজন মহিলাও এটা আদায় করে তবে সকলের উপর থেকে ফরযিয়াতের দায়িত্ব মুক্ত হবে। আর যদি কেউ আদায় না করে তবে সকলেই গুণাহ্গার হবে। (তাতারখানিয়াহ) আর জানাযা নামাযের জামায়াত শর্ত নয়। (নিহায়াহ)।” (নূরুদ্ দিরায়াহ্ শরহে উর্দূ হিদায়াহ ১ম জিঃ ২০ পৃষ্ঠা, তাতারখানিয়া, নিহায়াহ)
[১৬৭]
)فصل فى الصلاة على الميت) هى فرض كفاية. (فتح القدير ج 2 ص (80
অর্থঃ- “(পরিচ্ছেদঃ মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামায অর্থাৎ জানাযা নামায সম্পর্কে) আর তা (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ্।” (ফতহুল্ ক্বদীর ২য় জিঃ ৮০ পৃষ্ঠা)
[১৬৮]
صلاة الجنازة مشروعة لقوله تعالى وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم وقوله عليه السلام صلوا على كل بر وفاجر واجماع الامة وهو فرض كفاية لا نها تقام حقاللميت فاذا قام بها البعض صار حقه مؤديا فسقط عن الباقين كالتكفين. (الكفاية ج 2 ص 80، 81)
অর্থঃ- “ জানাযা নামায প্রবর্তন হয় আল্লাহ্ তায়ালার বাণীঃ
وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থাৎ, “হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তাঁদের উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন, নিশ্চয়ই আপনার নামায তাদের জন্য শান্তি স্বরূপ।” এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীঃ
صلوا على كل بر وفاجر.
অর্থাৎ “তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার ব্যক্তিদের উদ্দেশ্যে জানাযা নামায পড়।” এর মাধ্যমে। উম্মতের ইজ্মা’ যে, জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্। কেননা, তা মাইয়্যিতের হক্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তাই, যখন কিছু সংখ্যক লোক জানাযা পড়বে, তাতেই আদায়ের হক্ব পূর্ণ হবে। আর অন্যান্যদের থেকেও এর মাধ্যমে আদায়ের দায়িত্ব মুক্ত হবে। যেমন, কাফনের ব্যাপারে হয়ে থাকে।” (আল্ কিফায়াহ্ ২য় জিঃ ৮০, ৮১ পৃষ্ঠা)
[১৬৯]
الصلاة على الميت فرض كفاية امافر ضيته فلان الله تعالى امر بقوله عز وجل وصل عليهم. (شرح العناية على الهداية ج 2 ص 80(
অর্থঃ- “মৃতের উদ্দেশ্যে নামায ফরযে কিফায়াহ। এর ফরযিয়াত এজন্য যে, যেহেতু আল্লাহ্ তায়ালা নির্দেশ করেছেন وصل عليهم অর্থাৎ “হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তাঁদের (মু’মিনগণের) উদ্দেশ্যে জানাযা নামায পড়ুন।” (শরহুল ইনায়াহ্ আলাল্ হিদায়াহ্ ২য় জিঃ ৮০ পৃষ্ঠা)
[১৭০]
)قرض كفاية) مع عدم الانفراد بالخطاب بها ولو امراة. (مراقى الفلاح شرح نور الايضاح ص (382
অর্থঃ- “(জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ) একজন না হলে অর্থাৎ যদি একের অধিক হয় নামাযের জন্য ডাকা যদিও একজন মহিলা হয়।” (মারাকিউল্ ফালাহ্ শরহে নূরুল ঈযাহ্ ৩৮২ পৃষ্ঠা)
[১৭১-১৭৩]
)قوله فرض كفاية) بالاجماع فيكفر منكرها لانكاره الاجماع كذا فى البدائع والقنية والاصل فيه قوله تعالى وصل عليهم وقوله صلى الله عليه وسلم صلوا على كل بر وفاجر وانما كانت فرض كفاية لقوله صلى الله عليه وسلم صلوا على صاحبكم. (حاشية الطحطاوى على مراقى الفلاح ص 382- البدائع- القنية(
অর্থঃ- “(জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ) ইজ্মা বা উম্মতগণের ঐক্যমত দ্বারা। এর অস্বীকারকারী ইজ্মাকে অস্বীকার করার জন্য কাফির হবে। অনুরুপ আল্বাদাইউছ্ ছনাই’, আল্ কিনইয়াহ, নামক কিতাবে আছে। যার মধ্যে মূল হচ্ছে আল্লাহ্ পাক-এর বাণীঃ “হে নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তাদের উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন।” এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণী- صلوا على كل بر وفاجر অর্থাৎ “তোমরা প্রত্যেক সৎকর্মশীল ও গুণাহ্গার বা পাপী ব্যক্তির জন্য নামায (জানাযা) পড়। নিশ্চয়ই এটা (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ।” হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণী- صلوا على صاحبكم “তোমরা তোমাদের সাথীর উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়।” (হাশিয়াতুত্ ত্বহত্বাবী আলা মারাকিইল্ ফালাহ্ ৩৮২ পৃষ্ঠা, আল্ বাদাইউছ্ ছনাই’, আল্ ক্বিনইয়া)
[১৭৪-১৭৫]
السلطان احق بصلاته وهى فرض كفاية. (كنز الدقائق ج 2 ص 178، 179 احسن المسائل ارد ترجمه كنز الدقائق ص( 60
অর্থঃ- “সুলতান (বাদশাহ) জানাযা নামায পড়ানোর ব্যাপারে অধিক হক্বদার। এটা (জানাযা নামায) ফরযে কিফায়াহ।” (কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৭৮, ১৭৯ পৃষ্ঠা, আহ্সানুল মাসাইল উর্দূ তরজমা কানযুদ্ দাক্বাইক ৬০ পৃষ্ঠা))
[১৭৬-১৮০]
(قوله وهى فرض كفاية) اى الصلاة عليه للاجماع على افتر اضها وكونها على الكفاية وما وردى بعض العبارات من انها واجبة فالمراد الافتراض وقد صرح فى القنية والفوائد التاجية يكفر من انكر فرضيتها لانه انكر الاجماع. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 179، القنية، الفوائد التاجية، منحة الخالق على البحر الرائق ج 2 ص 179، تحفة الفقها ء للسمر قندى ج 1 ص 247)
অর্থঃ- “(কানযুদ দাক্বাইক্ব গ্রন্থকার বলেন- জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্) অর্থাৎ জানাযার উদ্দেশ্যে নামায ইজ্মা’ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যা ফরযে কিফায়াহ্ হিসেবে স্বীকৃত। কিছু কিছু ইবারতে এটা ওয়াজিব হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। আসলে ওয়াজিব দ্বারা ফরয (কিফায়াহ) উদ্দেশ্য হবে। ‘আল্ কিনইয়াহ্’ ও ‘আল্ ফাওয়াইদুত্ তাজিয়াহ্’ নামক কিতাবদ্বয়ে পরিস্কারভাবে লিখিত আছে যে, জানাযার ফরযিয়াতকে অস্বীকার করা কুফরী, কেননা নিশ্চয়ই এতে ইজ্মাকে অস্বীকার করা হয়।” (আল্ বাহর্রু রাইক্ব শরহে কানযুদ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৭৯ পৃষ্ঠা, আল্ কিনইয়াহ্, আল্ ফাওয়াইদুত্ তাজিয়াহ্, মিনহাতুল্ খালিক আলাল বাহর্রি রাইক্ব ২য় জিঃ ১৭৯ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল্ ফুক্বাহা লিস্ সমরক্বন্দী ১ম জিঃ ২৪৭ পৃষ্ঠা)
[১৮১]
وھی فرض کفایۃ، نماز جنازہ فرض کفایہ ھے اس کا منکر کافر ھے. فرض عین قرار دینے میں بڑا حرج ودشواری لازم أتی ھے. تمام لوگ ھر مقام وھر جگہ سے ایا کرتے جس سے بڑی پریشانی. ھوتی اس لئے اسے فرض علی الکفایہ قرار دیا. چونکہ دین میں اسانی ھے. (کشف الحقائق شرح اردو کنز الدقائق ج 1 ص 337)
অর্থঃ- “এটা ফরযে কিফায়াহ্, নামাযে জানাযা ফরযে কিফায়াহ্। এর অস্বীকারকারী কাফির। ফরযে আইন হিসেবে দৃঢ়তা দিলে অনেক কঠিন ও শক্ততা লাযিম হয়। সকল লোক প্রত্যেক স্থান ও প্রত্যেক জায়গা থেকে আসতে অনেক পেরেশান, হয়রান হয়। এজন্য জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ হিসেবে তাকিদ দেয়া হয়েছে। যাতে দ্বীন ইসলাম পালনে আসানী বা সহজতা আসে।” (কাশফুল হাক্বাইক্ব শরহে ঊর্দূ কানযুদ্ দাক্বাইক ১ম জিঃ ৩৩৭ পৃষ্ঠা) [১৮২-১৮৫]
والصلاة عليه فرض كفاية كدفنه. (تنوير الابصار ج 2 ص 207، رد لمتار، شامى ج 2 ص 207، 208- بحر الرائق)
অর্থঃ- জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্ যেমন, মৃত ব্যক্তির দাফন দেয়া (ফরযে কিফায়াহ্)।” (তানবীরুল্ আবছার ২য় জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, রদ্দুল মুহতার, শামী ২য় জিঃ ২০৭, ২০৮ পৃষ্ঠা, বাহরুর রাইক্ব) [১৮৬-১৯০]
(والصلاة عليه) صفتها (قرض كفاية) بالاجماع فيكفر منكرها لانه انكر الاجماع قنية (كدفنه) وغسله وتجهيز فانها فرض كفاية- (الدر المختار شرح تنوير الابصارج 2 ص 207- قنية رد المحتار، شامى ج 2 ص 207- بحر)
অর্থঃ- “(জানাযার উদ্দেশ্যে নামায) যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে (ফরযে কিফায়াহ) ইজ্মা-এর মাধ্যমে। এর (জানাযার ফরযিয়াত) অস্বীকারকারী কাফির হবে, যেহেতু এর অস্বীকৃতি ইজ্মাকে অস্বীকার করার শামিল। ক্বিনইয়াহ নামক কিতাবে অনুরূপ আছে।” (যেমন, মৃতের দাফন) গোসল ও সাজানো-গুছানো। কেননা তা ফরযে কিফায়াহ্।” (আদ্ দুররুল্ মুখতার শরহে তানবীরুল্ আবছার ২য় জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, ক্বিনইয়াহ্, রদ্দুল মুহতার, শামী ২য় জিঃ ২০৭ পৃষ্ঠা, বাহর্রু রাইক)
[১৯১-১৯২]
جنازہ کی نماز کا حال یہ ھی کہ وہ فرض کفایہ ھی بہ سبب اجما ع کے توکافر ھو گا اسکا انکار کرنے والا اسلبے کہ اسنے انکار کیا کہ اس امر کا جو اجما ع سے ثابت ھے. (غایۃ الا وطار علی الدر المختار ج1 ص 408، علم الفقہ ج 2 ص 328)
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের হুকুম হচ্ছে- ফরযে কিফায়াহ্, এর উপর ইজ্মা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কারণে। এর অস্বীকারকারী কাফিরের অন্তর্ভুক্ত। যেহেতু এর নির্দেশ ইজ্মা দ্বারা প্রমাণিত।” (গাইয়াতুল্ আউত্বার আলাদ্ দুররিল্ মুখতার ১ম জিঃ ৪০৮ পৃষ্ঠা, ইলমুল্ ফিক্বহ ২য় জিঃ ৩২৮ পৃষ্ঠা)
[১৯৩-১৯৪]
الصلاة على الجنازة فرض كفاية اذا قام به البعض واحدا كان او حماعة ذكرا كان او انشى سقط عن الباقين واذا ترك الكل اثموا هكذا فى التاتارخانية- (الفتاوى العالمكيرية ج 1 ص 162، التاتارخانية)
অর্থঃ- “জানাযা নামায হচ্ছে ফরযে কিফায়াহ্। যদি কিছু সংখ্যক লোক আদায় করে, একজন লোক হোক বা জামায়াত হোক, পুরুষ হোক বা মহিলা হোক তবে বাকী লোকের জিম্মা থেকে আদায় হয়ে যাবে। আর যদি সকলেই তরক করে তবে সকলেই গুণাহ্গার বা পাপী হবে। অনুরূপ তাতারখানিয়াহ’র মধ্যে উল্লেখ আছে।” (আল্ ফাতাওয়াল্ আলমগীরিয়াহ ১ম জিঃ ১৬২ পৃষ্ঠা, তাতারখানিয়াহ্) [১৯৫-১৯৮]
فتقول: الصلاة على الميت مشر وعة بالكتاب والسنة واجماع الامة، قال الله تعالى “وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم” ومن صفتها انها فرض كفاية، اذا قام بها البعض، وفى شرح المتفق: واحد كان او جماعة، ذكرا كان او انشى سقط عن الباقين، واذا ترك كلم اثموا، وفى السراجية: اذا صلت امراة اوعبد او امة جازت- ولوصلى عليه صبى لا. (الفتاوى التاتار خانية ج 2 ص 153، 154، – شرح المتفق- السر اجية، خلاصة الفتاوى ج 1 ص 122 )
অর্থঃ- “আমরা হানাফীগণ বলি, জানাযা নামাযের হুকুম ছাবেত হয়েছে কিতাবুল্লাহ, সুন্নাহ শরীফ ও ইজ্মায়ে উম্মত এর মাধ্যমে। আল্লাহ্ তায়ালা বলেছেন,
وصل عليهم ان صلاتك سكن لهم.
অর্থাৎ- “হে হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি তাঁদের (মু’মিনদের) উদ্দেশ্যে নামাযে জানাযা পড়ুন। নিশ্চয়ই আপনার নামায তাদের শান্তির কারণ।” আর দ্বারা জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যখন কিছু সংখ্যক লোক তা পড়বে। ‘শরহুল মুত্তাফাক’ কিতাবে আছে- একজন হোক বা জামায়াত হোক, পুরুষ হোক বা মহিলা হোক এতে অন্যান্য লোকদের থেকে আদায় ছাকিত হয়ে যাবে। আর যদি সকলে তরক করে তবে সকলেই গুণাহ্গার হবে। ‘আস্ সিরাজিয়াহ্’ কিতাবে আছে- যদি একজন মহিলা অথবা দাস নতুবা দাসী জানাযা পড়ে, তবে জায়েয হবে। আর যদি শুধু একজন শিশু নামাযে জানাযা পড়ে তবে জায়িয হবে না।” (আল্ ফাতাওয়াত্ তাতারখানিয়াহ ২য় জিঃ ১৫৩ ও ১৫৪ পৃষ্ঠা, শরহুল্ মুত্তাফাক্ব, আস্ সিরাজিয়াহ, খুলাছাতুল্ ফাতাওয়া ১ম জিঃ ২২১ পৃষ্ঠা)
[১৯৯-২০৪]
تصلاة على الميت غير الشهيد فرض كفاية على الاحياء بالاجماع، كالتجهيز والغسل والتكفين والدفن اذا فعلها البعض ولو واحدا سقط الاثم عن الباقين. (الفقه الاسلامى وادلته ج 2 ص 481- الدر المختار ج 1 ص 811- 814- مراقى الفلاح ص 98، العناية بهامش فتح القدير ج 1 ص 455- المهذب ج 1 ص 132، كتاب الفقه على المذاهب الاربعة (ازدو) ج 1 ص 832)
অর্থঃ- “অনুপস্থিত মৃত ব্যতীত উপস্থিত মৃতের উদ্দেশ্যে জানাযা নামায জীবিতদের উপর ফরযে কিফায়াহ্, যা ইজ্মা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যেমনিভাবে মৃত ব্যক্তিকে সাজানো, গোসল করানো, কাফন কার্য সমাধা করা ও দাফন সমাধা করা (ফরযে কিফায়াহ্)। যদি কিছু সংখ্যক লোক তা সমাধা করে যদিও একজন হয়, তবে অন্যান্য সকলেই পাপ মুক্ত হয়ে যাবে।” (আল্ ফিক্বহুল্ ইসলামী ওয়া আদিল্লাতুহ্ ২য় জিঃ ৪৮১ পৃষ্ঠা, আদ্ দুররুল্ মুখতার ১ম জিঃ ৮১১, ৮১৪ পৃষ্ঠা, মারাকিউল্ ফালাহ্ ৯৮ পৃষ্ঠা, আল্ ইনায়াহ্ বিহামিশ ফতহুল্ ক্বদীর ১ম জিঃ ৪৫৫ পৃষ্ঠা, আল্ মুহায্যাব ১ম জিঃ ১৩২ পৃষ্ঠা, কিতাবুল্ ফিকহি আলাল্ মাযাহিবিল্ আরবায়াহ (উর্দূ) ১ম জিঃ ৮৩২ পৃষ্ঠা)
[২০৫]
هى فرض كفاية على الاحياء، فاذا قام بها البعض ولو واحدا سقطت عن الباقين- (كتاب الفقه على المذاهب الاربعة ج 1 ص 512)
অর্থঃ- “জানাযা নামায জীবিত ব্যক্তির উপর (মৃত্যুর উদ্দেশ্য) পড়া ফরযে কিফায়াহ্। যখন কিছু সংখ্যক লোক জানাযা পড়বে, যদিও একজন হয় তবে অন্যান্য লোকেরা দায়িত্ব মুক্ত হবে।” (কিতাবুল্ ফিকহি আলাল্ মাযাহিবিল্ আরবায়াহ্ ১ম জিঃ ৫১৬ পৃষ্ঠা)
[২০৬-২০৭]
الحنفية- قالوا: صفتها ان يقوم المصلى بحذاء صدر الميت، ثم ينوى اذاء فريضة صلاة الجنازة عبادة لله تعالى. كتاب الفقه على المذاثب الاربعة ج 1 ص 517، كتاب الفقه على المداهب الا ربعة (اردو) ج 1 ص 832)
অর্থঃ- “আমাদের হানাফী আলিমগণ বলেনঃ জানাযা পড়ার নিয়ম হচ্ছে মুছল্লী জুতা পাঁয়ে দেয়া অবস্থায় মাইয়্যিতের বুক বরাবর দাঁড়িয়ে অতপর জানাযার ফরয (কিফায়াহ্) নামায আদায়ের নিয়ত করবে। একমাত্র আল্লাহ্ পাক-এর ইবাদতের উদ্দেশ্যেই।” (কিতাবুল্ ফিকহি আলাল্ মাযাহিবিল্ আরবায়াহ্ ১ম জিঃ ৫১৭ পৃষ্ঠা, কিতাবুল ফিকহি আলাল্ মাযাহিবিল আরবায়াহ্ (উর্দূ) ১ম জিঃ ৮৩২ পৃষ্ঠা)
[২০৮-২০৯]
والصلاة على الجنائز من فروض الكفايات- (المعونة على مذهب عالم المدينة ج 1 ص 197- الكافى لابن عبد البر ج 1 ص 276)
অর্থঃ- “জানাযা নামায পড়া ফরযে কিফায়াহ।” (আল্মাঊনাহ্ আলা মাযহাবি আলিমিল্ মাদীনাহ্ ১ম জিঃ ১৯৭ পৃষ্ঠা, আল্ কাফী লিইবনি আব্দিল্ র্বা ১ম জিঃ ২৭৬ পৃষ্ঠা) [২১০]
الصلاة على الميت حكمها: من المتفق عليه بين ائمة الفقه، ان الصلاة على الميت، فرض كفايه، لامر رسول الله صلى الله عليه وسلم بها، ولمحافظة المسلمين عليها. (فقه السنة للسيد سابق ج 1 ص 521)
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের হুকুম-এর উপর ঐক্যমত পোষণ করে ‘আইম্মাতুল্ ফুক্বাহা’ রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ বর্ণনা করেছেন, নিশ্চয়ই মৃতের উদ্দেশ্যে নামায অর্থাৎ জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্ যা আদায়ের ব্যাপারে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নির্দেশ রয়েছে। যাতে মুসলমানগণ জানাযার প্রতি যতœবান হয়।” (ফিক্বহুস্সুন্নাহ্ লিস্ সাইয়্যিদ সাবিক্ব ১ম জিঃ ৫২১ পৃষ্ঠা)
[২১১]
وهى فرض على الكفاية، لان النبى صلى الله عليه وسلم قال: صلوا على من قال لا اله الا الله ويكفى واحد لانها صلاة ليس من شرطها الجماعة فلم يشترط لها العدد كالظهر- (الكافى فى فقه الامام احمد ج 1 ص 362)
অর্থঃ- “জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্। কেননা, নিশ্চয়ই হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
صلوا على من قال لا اله الا الله.
অর্থাৎ “যারা ‘আল্লাহ্ পাক ছাড়া অন্য কোন মা’বূদ নাই’ সাক্ষ্য দেয়, তাদের তোমরা নামায (জানাযা) পড়।’ একজন ব্যক্তি জানাযা পড়লেই যথেষ্ট হবে, যেহেতু জানাযা নামাযের জন্য জামায়াত শর্ত নয়। এর জন্য কোন সংখ্যা শর্ত নাই, যেমন যোহরের নামাযে শর্ত রয়েছে।” (আল্ কাফী ফী ফিক্বহিল্ ইমামি আহমদ রহমতুল্লাহি আলাইহি ১ম জিঃ ৩৬২ পৃষ্ঠা)
[২১২]
احكام صلاة الجنازة: الصلاة على الميت قرض كفاية على المسلمين اذ اصلى على الميت واد من المسلمين سقط الفرض عن الباقين- وان لم يصلى عليه احد اثم الجميع- (الفقه الميسر ص (196
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের হুকুম (বিধান)ঃ জীবিত মুসলমানগণের জন্য মৃতের উদ্দেশ্যে ‘ছলাতুল জানাযা’ পড়া ফরযে কিফায়াহ্। যদি মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে মুসলমানগণের মধ্যে একজন নামাযে জানাযা পড়ে এতেই অন্যান্যদেরকে ফরযিয়াতের দায়িত্ব মুক্ত করবে। আর যদি কেউই নামাযে জানাযা না পড়ে তাহলে সকলেই গুণাহ্গার হয়ে যাবে।” (আল্ ফিক্বহুল্ মুইয়াস্সার ১৯৬ পৃষ্ঠা)
[২১৩]
والصلاة على الميت فرض كفاية لقول النبى صلى الله عليه وسلم صلوا على من قال لا اله الا الله. (الشرح الكبير لابن قدامة المقدسى ج 2 ص 244)
অর্থঃ- “মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামায অর্থাৎ জানাযা নামায ফরযে ক্বিফায়াহ্। হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীঃ
صلوا على من قال لا اله الا الله.
অর্থাৎ “তোমরা তাঁদের উদ্দেশ্যে জানাযা পড়, যাঁরা ‘আল্লাহ্ পাক ছাড়া অন্য কোন মা’বুদ নাই’ এতে সাক্ষ্য দেয়।” (আশ্ শরহুল্ কবীর লিইবনি কুদামাতিল্ মুক্বদাসী ২য় জিঃ ৩৪৪ পৃষ্ঠা)
[২১৪]
بل هى عند نا قرض كفاية. (الحاوى للفتاوى للسيوطلى ج 1 ص 84)
অর্থঃ- “বরং, এটা (জানাযা নামায) আমাদের হানাফী ইমামদের মতে ফরযে কিফায়াহ্।” (আল্ হাবী লিল ফাতাওয়া লিস্ সুয়ূত্বী ১ম জিঃ ৮৪ পৃষ্ঠা)
[২১৫]
سترھواں مسئلہ یہ ھے. کہ اماموں کے نزدیک میت پرنماز پڑھنا فرض کفا یۃ ھے. (میزان شعرانی (اردو) المعروف بہ مواھب رحمانی ج 1 ص 517)
অর্থঃ- “সতের (১৭) নম্বর মাসয়ালা হচ্ছে এই যে, ইমামের উপর মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে জানাযা নামায পড়িয়ে দেয়া ফরযে কিফায়াহ্।” (মিযানে শা’রানী (উর্দূ) আল্ মা’রুফ বিহী মাওয়াহিবে রহমানী ১ম জিঃ ৫১৭ পৃষ্ঠা)
[২১৬-২১৭]
مرده مسلمان راغسل وكفن دادن ونماز جنازه خواندن ودفن كردن فرض كفايت ست وبدون غسل وكفن نماز جنازه صحيح نيست. (مالابد منه ص 93) انوار محموده شرح مالابد منه ص(74
অর্থঃ- “মুসলমান মুর্দা ব্যক্তির গোসল করানো, কাফন পড়ানো, নামাযে জানাযা পড়া এবং তাকে দাফন করা জীবিতদের জন্য ফরযে কিফায়াহ্। আর গোসল করানো এবং কাফন পরানো ছাড়া জানাযা নামায পড়া জায়েয নেই।” (মালা বুদ্দা মিনহু ৯৩ পৃষ্ঠা, আনওয়ারে মাহমূদাহ্ শরহে মালা বুদ্দা মিনহু ৭৪ পৃষ্ঠা)
[২১৮-১২১]
جناز يكى نماز فرض كفايه هى. (تحفة العجم ص 52، نهاية المحتاج الى شرح المنهاج ج 2 ص 469، حاشية القاهرى على نهاية المحتاج ج 2 ص 469- ركن الدين مسمى به عمادا لدين ص 142)
অর্থঃ- “জানাযা নামায ফরযে কিফায়াহ্।” (তুহফাতুল আজম ৫২ পৃষ্ঠা, নিহাইয়াতুল্ মুহতাজ ইলা শরহিল মিনহাজ ২য় জিঃ ৪৬৯ পৃষ্ঠা, হাশিয়াতুল্ ক্বাহিরী আলা নিহাইয়াতিল মুহতাজ ২য় জিঃ ৪৬৯ পৃষ্ঠা, রুকনুদ্দীন মুসাম্মা বিহী ইমাদুদ্দীন ১৪২ পৃষ্ঠা)) উল্লিখিত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, জানাযা নামায একটি বিশেষ নামায। যা আদায় করা জীবিতদের জন্য ফরযে কিফায়াহ। যারা জানাযা নামাযকে দোয়া বলে আখ্যায়িত করে এবং নামায নয় বলে উক্তি পেশ করে, তাদের সেই বক্তব্য উল্লিখিত আলোচনার মাধ্যমে শক্তভাবে খন্ডিত করা হল
তদ্রুপ “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে” “জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য বা মাকছূদও ঠিক তাই। কেননা কিছু লোক “ক্বিল্লতে ইল্ম ও ক্বিল্লতে ফাহ্ম”- অর্থাৎ কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে বলে থাকে যে, “জানাযার পর দোয়া করা বিদ্য়াত ও নাজায়িয।” তাদের উক্ত বক্তব্য একদিক থেকে যেরূপ ঈমান বা আক্বীদার ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ, অপর দিক থেকে আমলের ক্ষেত্রেও তদ্রুপ ক্ষতির কারণ। প্রথমতঃ ঈমানের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, আমাদের আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের ফতওয়া হলো কোন জায়িয আমলকে নাজায়িয বলা কুফরী। অর্থাৎ ঈমান বিনষ্ট হওয়ার কারণ। অথচ বান্দার ইবাদত-বন্দিগী বা নেক আমল কবূল হওয়ার জন্যে প্রধানতম শর্ত হচ্ছে- আক্বীদা শুদ্ধ থাকা অর্থাৎ আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদার ন্যায় আক্বীদা পোষণ করা। কারণ বিশুদ্ধ আক্বীদা আমল কবূল হওয়ার পূর্ব শর্ত। দ্বিতীয়তঃ আমলের ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ এ জন্য যে, তাদের উক্ত অশুদ্ধ বক্তব্যের কারণে যেরূপ ‘মাইয়্যিত’ জীবিতদের দোয়া থেকে বঞ্চিত হবে তদ্রুপ জীবিতরা বঞ্চিত হবে হাদীস শরীফের উপর আমল করা থেকে। কারণ আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, আশিকে উম্মত, নূরে মুজাস্সাম, ফখরে দু’আলম, রহমতুল্লিল আলামীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘মাইয়্যিতের’ জন্য অধিক মাত্রায় এবং ইখলাছের সাথে দোয়া করতে বলেছেন বলে ছহীহ্ হাদীস শরীফে বর্ণিত রয়েছে। শুধু তাই নয় স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেরূপ জানাযার নামাযে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন অনুরূপ জানাযার বাইরেও মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করেছেন। সুতরাং মাইয়্যিতের জন্য জানাযার নামাযে দোয়া করা যেরূপ সুন্নত, তদ্রুপ জানাযার বাইরেও সুন্নত। তা জানাযার আগেই হোক বা পরে হোক। সুতরাং বলার অপেক্ষাই রাখেনা যে, তাদের বক্তব্যের কারণে সাধারণ মানুষ একটি সুন্নত পালনের ফযীলত থেকে মাহরূম হবে নিঃসন্দেহে। মূলকথা হলো, সকল মুসলমান যেন “জানাযার পর দোয়া ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়” সম্পর্কে সঠিক আক্বীদা রাখতে পারে এবং সুন্নত মুতাবিক আমল করে মহান আল্লাহ্ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি হাছিল করতে পারে এ মহান উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই বহুল প্রচারিত “মাসিক আল বাইয়্যিনাতে জানাযার পর দোয়া ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়া হলো। মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর পূর্ববর্তী সংখ্যাগুলোতে প্রদত্ত ‘জানাযা’ সম্পর্কিত আলোচনা দ্বারা যা ছাবিত হয়েছে তার সার সংক্ষেপ হলো- মানুষ মাত্রই মৃত্যু বরণ করবে, মানুষের মৃত্যুর পর শরীয়তের নির্দেশ হচ্ছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মৃত ব্যক্তির দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করা এবং মৃত ব্যক্তির রূহের মাগফিরাতের জন্যে মৃত ব্যক্তির উপর “ছলাতুল জানাযা” বা জানাযা নামায আদায় করা। শুধু তাই নয় জীবিত ব্যক্তিদের উপর দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্যে অধিক পরিমাণে দোয়া বা মুনাজাত করা। তাই হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
اكثرواالدعاء ও فاخلصوا له الدعا ء
অর্থঃ- “ইখলাছের সাথে ও অধিক পরিমাণে মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের উদ্দেশ্যে দোয়া-মুনাজাত কর।” এখন প্রশ্ন হলো- মৃত ব্যক্তির জন্যে কখন দোয়া বা মুনাজাত করবে? অর্থাৎ শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার নির্দিষ্ট কোন সময় বর্ণিত আছে কি? মূলতঃ শরীয়ত মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করার ব্যাপারে কোন সময় নির্দিষ্ট করে দেয়নি যে, অমুক সময় দোয়া করতে হবে, আর অমুক সময় দোয়া করা যাবেনা। বরং শরীয়তে মৃত ব্যক্তির জন্য যে কোন সময় দোয়া করার বিধান রয়েছে। যেমন ইন্তিকালের পর জানাযার পূর্বে, জানাযার নামাযের মধ্যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে এবং দাফনের পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যে কোন সময় মৃত ব্যক্তির জন্যে হাত তুলে ও সম্মিলিতভাবে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত। নাজায়িয বা বিদ্য়াত মোটেও নয়। এ সম্পর্কিত বহু দলীল-আদিল্লাহ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, শরাহ, ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব সমূহ থেকে পূর্ববর্তী সংখ্যাগুলোতে উল্লেখ করা হয়েছে। জানাযা নামাযের পর হাত তুলে, সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করাকে বিদ্য়াত ও মাকরূহ্ বলে প্রচারকারীদের জিহালতপূর্ণ বক্তব্যসমূহের খন্ডনমূলক জাওয়াব- বাতিলের আতঙ্ক, দ্বীনে হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক মুখপত্র ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাতে’ প্রদত্ত “জানাযার পর দোয়া ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উল্লিখিত দলীল-আদিল্লাহ্র দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হয়েছে যে, শুধু জানাযার পূর্বে ও দাফনের পরেই নয় বরং ‘জানাযার পর দাফনের পূর্বেও মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত।’ যার স্বপক্ষে প্রায় ২১১টি দলীল মওজুদ রয়েছে যা আল বাইয়্যিনাতের ১০৭ ও ১০৮তম সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছে। আর আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও ফক্বীহ্গণের অভিমতও এটাই। অথচ কিছু সংখ্যক দেওবন্দী ও ওহাবী মৌলভী কিল্লতে ইল্ম ও কিল্লতে ফাহম অর্থাৎ স্বল্প বিদ্যা ও অল্প বুঝের কারণে এবং ফিক্বাহ্র কিতাবের কোন কোন ইবারতের সঠিক মর্ম অনুধাবনে ব্যর্থ হয়ে প্রচার করে থাকে যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া-মুনাজাত করা বিদ্য়াত ও মাকরূহ্। আর এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন দলীল-প্রমাণ না পেয়ে মনগড়া কিছু যুক্তি ও জিহালতপূর্ণ বক্তব্য পেশ করে থাকে। জানাযার পর দাফনের পূর্বে দোয়া-মুনাজাত করাকে বিদ্য়াত ও মাকরূহ্ প্রমাণ করার জন্যে তারা যে সকল মনগড়া যুক্তি ও জিহালতপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করে থাকে, নিম্নে পর্যায়ক্রমে নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে তা খন্ডন করা হলো- (পূর্ব প্রকাশিতের পর) জানাযার পর মুনাজাত বিরোধীদের মনগড়া যুক্তি ও জিহালতপূর্ণ বক্তব্য এবং তার খন্ডনমূলক জাওয়াব-৪ জানাযার পর মুনাজাতকে বিদ্য়াত বলে প্রচারকারীরা আরো বলে থাকে যে, “নির্ভরযোগ্য কোন ফিক্বাহের কিতাবে জানাযার পর দোয়াকে জায়িয বলা হয় নাই, বরং মাকরূহ বলা হয়েছে। তাই জানাযার নামাযের পর থেকে দাফনের পূর্ব পর্যন্ত দোয়া করা জায়িয নেই।” মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্যের জবাবে প্রথমতঃ বলতে হয় যে, “নির্ভরযোগ্য কোন ফিক্বাহের কিতাবে জানাযার পর দোয়াকে জায়িয বলা হয় নাই…….” মুনাজাত বিরোধীদের এ বক্তব্য ডাহা মিথ্যা ও চরম জিহালতপূর্ণ। কেননা আমরা মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর পূর্ববর্তী সংখ্যায় ফিক্বাহের কিতাবের অসংখ্য দলীল দ্বারা প্রমাণ করেছি যে, জানাযার পর দোয়া করা জায়িয। পাঠকগণের সুবিধার্থে এবং মুনাজাত বিরোধীদের বক্তব্য যে ডাহা মিথ্যা তা প্রমাণ করার লক্ষ্যে নিম্নে নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বখ্যাত ফিক্বাহের কিতাব থেকে কিছু ইবারত উল্লেখ করা হলো-
জানাযা নামাযের পর দাফনের পূর্বে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত হওয়ার প্রমাণ
জানাযার পর দাফনের পূর্বেও মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয ও সুন্নত। কেননা-
প্রথমতঃ কুরআন-সুন্নার কোথাও জানাযার পর দাফনের পূর্বে দোয়া করতে নিষেধ করা হয়নি।
দ্বিতীয়তঃ কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফে আমভাবে দোয়া করার নির্দেশ এসেছে অর্থাৎ কুরআন শরীফের বর্ণনা মতে যে কোন সময় দোয়া করা জায়িয ও শরীয়ত সম্মত। তৃতীয়তঃ অসংখ্য হাদীস শরীফ দ্বারা প্রমাণিত যে, হাবীবুল্লাহ্, আশিকে উম্মত হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ স্বয়ং নিজেরাই অনেক ক্ষেত্রে জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করেছেন। তাই অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও ফক্বীহগণ জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করাকে জায়িয বলে ফতওয়া দিয়েছেন। নিম্নে এ সম্পর্কিত দলীল-আদিল্লাহ সমূহ পর্যায়ক্রমে উল্লেখ করা হলো-
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
[১৩৯৭-১৪১২]
عن ابن عباس رضى الله عنه ان النبى صلى الله عليه وسلم قرأ عى الجنازة بفاتحة الكتاب. (ترمذى شريف ج ا ص 122، تحفة الاحوذى ج 4 ص 108، عارضة الاحوذى ج 4 ص 244، ابو ذاؤد شرف ج 2 ص 100، بذل المجهود ج ه ص 206، عون المعبود ج 3 شرح ابى داؤد لبدر الدين العينى ج 6، ابن ماحة شريف ص 108 مشكوة شريف ص 146، مرقاة ج 4 ص 59، اشعة اللمعات ج 1 ص 686، المعات، شرح الطيبى ج 3 ص 373، التعليق الصبيح، مظاهر حق ج 2 ص 51، مراة الناجيح ج 2 ص 479)
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মৃত ব্যক্তির উপর সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন।” (তিরমিযী শরীফ ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠা, তুহফাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ১০৮ পৃষ্ঠা, আরিদ্বাতুল আহওয়াযী ৪র্থ জিঃ ২৪৪ পৃষ্ঠা, আবূ দাউদ শরীফ ২য় জিঃ ১০০ পৃষ্ঠা, বযলুল মজহুদ ৫ম জিঃ ২০৬ পৃষ্ঠা, আউনুল মা’বূদ ৩য় জিঃ, শরহু আবী দাউদ লিবদরিদ্দীন আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ, ইবনু মাজাহ শরীফ ১০৮ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৬ পৃষ্ঠা, মিরক্বাত ৪র্থ জিঃ ৫৯ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত ১ম জিঃ ৬৮৬ পৃষ্ঠা, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী ৩য় জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৫১ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ ২য় জিঃ ৪৭৯ পৃষ্ঠা) উক্ত হাদীস শরীফ খানার ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসীন-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ জানাযা নামাযের পর দোয়া করা জায়িয বলেছেন। যেমনঃ
[১৪১৩]
واحتمال دارد کہ برجنازۃ بعد از نماز یا پیشں ازار بقصد تبرک خواندہ باشد چنا نکہ الان متعارف است واللہ اعلم. (اشعۃ اللمعات ج 1 ص 686)
অর্থঃ- “সম্ভবতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামাযের পরে অথবা পূর্বে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন। যেমন, আজকাল এর প্রচলন দৃষ্টি গোচর হয়। আল্লাহ্ পাক অধিক জ্ঞাত।” (আশয়াতুল্ লুময়াত ১ম জিঃ ৬৮৬ পৃষ্ঠা)
[১৪১৪]
جنازے پربعد ازنماز کے یا پھلے نماز کے بقصد تبرک کے پڑھی ھو واللہ اعلم. (مظاھر حق ج 2 ص 52)
অর্থঃ- “(সম্ভবতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানাযা নামাযের পরে অথবা পূর্বে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন। আল্লাহ্ পাক অধিক জ্ঞাত।” (মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৫২ পৃষ্ঠা)
[১৪১৫]
اس کی شرح میں اشعۃ اللمعات میں ھے واحتمال دارد کہ بر جنازہ بعد ازنماز یا پیش ازاں بقصد تبرک خواندہ باشد چنانکہ الان متعارف است” ممکن ھے کہ حضور علیہ الصلوۃ والسلام نے سورة فاتحہ نماز کے بعد یا نماز سے پھلے برکت کے لئے پڑھی ھو جیساکہ اجکل رواجھے، اس سے معلوم ھوأ کہ شیخ عبد الحق علیہ الر حمۃ کے زمانہ میں بھی رواج تھا کہ نماز جنازہ کے اگے اور بعد سورہ فاتحہ وغیرہ برکت کے لئے پڑھتے تھے اور حضرت شیخ نے اس کو منع نہ فرمایا بلکہ حدیث پراس کو محمول کیا. (جاء الحق حصہ 1 ص 262)
অর্থঃ- “(উক্ত হাদীস শরীফখানার) ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে “আশয়াতুল লুময়াত” নামক কিতাবে উল্লেখ আছে, “সম্ভবতঃ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামাযের পরে অথবা পূর্বে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করেছেন। যেমন, আজকাল এর প্রচলন দৃষ্টি গোচর হয়।” এর থেকে বুঝা গেল, হযরত শায়খ আব্দুল্ হক্ব মুহাদ্দিস দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর যুগেও জানাযা নামাযের আগে ও পরে বরকতের জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করার প্রচলন ছিল। অথচ হযরত শায়খ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তা নিষেধ করেননি, বরং এটাকে হাদীস শরীফসম্মত বলে উল্লেখ করেছেন।” (জায়াল হক্ব ১ম জিঃ ২৬২ পৃষ্ঠা)
[১৪১৬-১৪২৮]
عن ابى هريرة رضى الله عنه قال سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول اذا صليتم على الميت فاخلصوا له الدعاء. (ابوداؤد شريف ج اص 100، بذل المجهود جه ص 206، عون المعبود ج 3 ص 188، شرح ابى داود لبدر الدين العينى ج 6 ص 143، ابن ماجة شريف ص 109، مشكوة شريف ص 146، اللمعات، كرح الطيبى ج 3 ص 373، التعليق الصبيح، مظاهر حق ج 2 ص 52، مرأة المناجبح ج 2 ص 479)
অর্থঃ- “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সল্লাম-এর কাছ থেকে শুনেছি। তিনি বলেছেন, যখন তোমরা কোন মৃত ব্যক্তির উদ্দেশ্যে জানাযা নামায পড়বে, তখন তার জন্য খালিছভাবে দোয়া করবে।” (আবূ দাউদ শরীফ ১ম জিঃ ১০০ পৃষ্ঠা, বযলুল্ মাজহুদ ৫ম জিঃ ২০৬ পৃষ্ঠা, আউনূল ্মা’বূদ ৩য় জিঃ ১৮৮ পৃষ্ঠা, শরহু আবী দাউদ লিবদরিদ্দীন আইনী ৬ষ্ঠ জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠা, ইবনু মাজাহ শরীফ ১০৯ পৃষ্ঠা, মিশকাত শরীফ ১৪৬ পৃষ্ঠা, মিরকাত ৪র্থ জিঃ ৫৯ পৃষ্ঠা, আশয়াতুল্ লুময়াত ১ম জিঃ ৬৮৬ পৃষ্ঠা, লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী ৩য় জিঃ ৩৭৩ পৃষ্ঠা, আত্ তা’লীকুছ্ ছবীহ, মুযাহিরে হক্ব ২য় জিঃ ৫২ পৃষ্ঠা, মিরয়াতুল্ মানাজীহ ২য় জিঃ ৪৭৯ পৃষ্ঠা) উক্ত হাদীস শরীফের অর্থ তিন প্রকারের হতে পারে, (১) যখন জানাযা পড়বে তখন জানাযা নামাযের মধ্যে মৃত ব্যক্তির জন্য খালিছভাবে দোয়া করবে। (২) জানাযা নামাযে খালিছ দোয়া পাঠ করবে অর্থাৎ সূরা ক্বিরয়াত পাঠ করবেনা। (৩) জানাযা নামাযের পর মৃত ব্যক্তির জন্যে খালিছ দোয়া করবে। কেননা অনেকেই শেষোক্ত দুটি অর্থও গ্রহণ করেছেন। সুতরাং উক্ত হাদীস শরীফটি জানাযার ভিতরে দোয়া করার ব্যাপারে যেরূপ দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য তদ্রুপ জানাযার পর দোয়া করার ব্যাপারেও দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। হাদীস শরীফের উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটাই ছাবিত হলো যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা হাদীস শরীফেরই নির্দেশ এবং স্বয়ং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। উল্লেখ্য, কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফের সাথে সাথে ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাবের বক্তব্য দ্বারাও প্রমাণিত হয় যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে দোয়া করা জায়িয। অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদগণ তাঁদের কিতাব সমূহে জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয হওয়ার পক্ষেই ফতওয়া দিয়েছেন। নিম্নে বিশ্ব বিখ্যাত ও নির্ভরযোগ্য ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব থেকে ইমামগণের ফতওয়া তুলে ধরা হলো-
[১৪২৯-১৪৩২]
عن عبد اله بن ابى بكر قال: لما التقى الناس بمؤنة، جلس رسول الله صلى الله عليه وسلم على المنبرء وكشف له ما بينه وبين الشام، فهو ينظر الى معركتهم، فقال عليه السلام: اخذ الراية زيد بن حارثة، فمضى حتى استشهد، وصلى عليه ودعا له، وقال استغفرواله، وقد دخل الجنة، وهو يسعى، ثم اخذ الراية جعفر بن ابى طالب، فمضى حتى استشهد، فصلى عليه رسول الله صلى الله عليه وسلم ودعاله، وقال: استغفروا له، وقد دخل الجنة، فهو يطير فيها بجنا حين حيث شاء، (نصب الراية لا حاديث الهداية ج 2 ص 274، فتح القدير ج 2 ص 81، مواهب اللدنية ج 2، نور الهداية ج 1 ص 143)
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ‘মাঊনা’ নামক স্থানে মিলিত হলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে উঠে বসলেন। তখন তার কাছে শাম দেশের (মুতার যুদ্ধের) অবস্থা স্পষ্ট প্রকাশিত হচ্ছিল। তিনি হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যুদ্ধের অবস্থা দেখতে ছিলেন। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (যুদ্ধে) হযরত যায়িদ ইবনে হারিসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন, অতঃপর তিনি শহীদ হয়ে গেলেন। তাই তিনি তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফার কর। তিনি জান্নাতে চলে গেছেন,আর তা খুবই দ্রুত। হযরত জা’ফর ইবনে আবু তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন অতঃপর তিনিও শহীদ হয়ে গেলেন। তাই, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফারের দোয়া কর। তিনি তাড়াতাড়ি জান্নাতে চলে গেছেন এবং সেখানে দুটি ডানা নিয়ে যেখানে ইচ্ছা সেখানে উড়ে বেড়াবেন।” (নাছবুর রাইয়াহ্ লি আহাদীসিল হিদায়াহ্ ২য় জিঃ ২৮৪ পৃষ্ঠা, ফতহুল ক্বদীর ২য় জিঃ ৮১ পৃষ্ঠা, মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়া ২য় জিঃ, নূরুল হিদায়াহ্ ১ম জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠা)
[১৪৩৩]
ورى عن ابن عباس رضى الله عنهما وابن عمر رضى الله عنه انهما فاتهما الصلاة على الجنازة فلما حضرا مازادا على الاستغفار له. ( المبسوط للسر خسى ج 2 ص 67)
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তাঁদের দু’জনের একদা জানাযা নামায ফউত হলো। যখন তাঁরা (নামাযের পর মাইয়্যিতের কাছে) উপস্থিত হলেন, তখন মাইয়্যিতের জন্য অতিরিক্ত ইস্তিগফার করলেন।” (আল্ মাবসূত লিস্ সারাখসী ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা) [১৪৩৪]
وعبد الله بن سلام رضى الله عنه فاتته الصلاة على جنازة عمر فلما حضر قال ان سبقتمونى بالصلاة عليه للاتسبقونى بالدعاء له. (المبسوط للسر خسى ج 2 ص 67)
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহু আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু আনহু-এর জানাযা পাননি। (জানাযার পর) তিনি যখন (সেখানে) উপস্থিত হলেন তখন বললেন, “তোমরা জানাযা নামায যদিও আমার পূর্বে পড়ে ফেলেছ, তবে দোয়ার ক্ষেত্রে আমার থেকে অগ্রগামী হয়োনা।”(আল মাবসূত লিস সারাখসী ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠা) [১৪৩৫-১৪৩৬]
قال ابو حنيفة الثورى ان التعزية سنة قبل الدفن لابعده لان شدة الحزن تكون قبل الدفن فيعزى ويدعوله. (ميزان الكبرى للشعر انى، جاء الحق حصه اص 264)
অর্থঃ- “হযরত ইমাম আবূ হানীফাতাছ্ ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, দাফনের পরে নয় বরং দাফনের আগে সমবেদনা জ্ঞাপন করা সুন্নত। কেননা, দাফনের আগে বিরহ-বেদনা অনেক বেশী থাকে। তাই, (দাফনের পূর্বে) শোক প্রকাশ করবেন এবং মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করবেন।” (মীযানুল্ কুবরা নিশ্ শা’রানী, জায়াল হক্ব ১ম হিচ্ছা ২৬৪ পৃষ্ঠা)
[১৪৩৭-১৪৩৮]
لايدعو بعد التسليم كما فى الخلاصة وعن الفضلى لابأس به. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج 2 ص 183، رضوية)
অর্থঃ- “সালামের পর দোয়া করবেনা যেমনটি খুলাছায় আছে। ফযলী থেকে বর্ণিত আছে যে, জানাযা নামাযের সালামের পর দোয়া করতে কোন অসুবিধা নেই- অর্থাৎ জায়িয।” (আল বাহরুর রাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠা, অনুরূপ রেযভিয়াতেও উল্লেখ আছে)
[১৪৩৯]
وان ابا حنيفة لما مات فختم عليه سبعون الفا قبل الدفن. (طحطاوى شريف)
অর্থঃ- “যখন হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ইন্তিকাল করেন, তখন দাফনের আগে তাঁর জন্য সত্তর হাজার বার কুরআন শরীফ খতম করা হয়।” (ত্বহত্বাবী শরীফ) [১৪৪০]
ويقول بعد صلوة الجنازة اللهم اتحرمنا اجره الخ. (نهر الفائق شرح كنز الدقائق)
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর পড়বে,
اللهم لا تحرمنا اجره ولا تفتنا بعده واغفر لنا وله.
অর্থাৎ- “আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্খতা ক্ষমা করুন।”(নাহরুল ফাইক্ব শরহে কান্যুদ্ দাকাইক্ব)
[১৪৪১]
بعضے حضر اتنے سلام کے بعد یہ دعاء بھی لکھی ھے. کہ یہ پڑھے. أللھم ربنا اتنا فی الدنیا حسنت و فی الاخرۃ حسنۃ وقنا برحمتک عذاب القبر وعذاب النار. (کشف الحقائق شرح کنذ الدقائق ج 1 ص 339)
অর্থঃ- “কোন কোন হযরত উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি জানাযা নামাযের সালামের পর এ দোয়া পড়ার কথা লিখেছেন,
اللهم ربنا اتنا فى الدنيا حسنة وفى الاخرة حسنة وقنا برحمتك عذاب القبر وعذاب النار.
অর্থাৎ “আয় আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার মধ্যে এবং আখিরাতের মধ্যে মঙ্গল (ভালাই) দান করুন। আর আপনার রহমতের দ্বারা আমাদেরকে কবরের আযাব এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।” (কাশফুল্ হাক্বাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক ১ম জিঃ ৩৩৯ পৃষ্ঠা)
[১৪৪২]
চৌদ্দশত হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, ইমামুল হুদা, কুতুবুল আলম, ফক্বীহুল উম্মত, মুজাহিদে আ’যম হযরত আবু বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বয়ং নিজেই জানাযার পর কাতার ভঙ্গ করে হাত তুলে ও সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করতেন এবং তাঁর বিখ্যাত “মত-পথ” নামক কিতাবে তা জায়িয বলে ফতওয়া দিয়েছেন। যেমন, উক্ত কিতাবে উল্লেখ আছে, “আরো কতগুলো মাসয়ালা যেগুলোকে ফুরফুরার পীর ছাহেব ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি জায়িয বলতেন ও নিজেও আমল করতেন। যথা কবরে তালকীন করা, জানাযা নামাযের পর কাঁতার ভঙ্গ করে মুর্দার জন্য মাগফিরাতের দোয়া চাওয়া ও ছওয়াব রিসানী করা, মীলাদের মাহ্ফিলে দাঁড়িয়ে ‘ইয়া নবী সালামু আলাইকা’ পড়া, মুর্দার জন্য লাখ কলমা ও কুরআন শরীফ খতম করে ছওয়াব রিসানী করা, কবর জিয়ারত করা, (ওহাবীরা কবর জিয়ারত নাজায়িয বলে)। নবী আলাইহিমুস সালাম ও ওলীগণের ওয়াছীলা দিয়া খোদার নিকট দোয়া চাওয়া (ওহাবীরা নাজায়িয বলে), ওয়াজের মাহ্ফিলে উচ্চ শব্দে দরূদ শরীফ পড়া, পীর ওলীগণের লাশ মুবারক মাটিতে খায় না, যিয়ারতের সময় কবরের দিকে হাত উঠিয়ে দোয়া চাওয়া, বুযূর্গ ব্যক্তির তা’যীমের জন্য দাঁড়িয়ে পড়া, কবরের নিকট কুরআন শরীফ পাঠ করা, আখিরী যোহ্রের নামায পড়া ইত্যাদি । (ফুরফুরা শরীফের মত ও পথ ২৬, ২৭ পৃষ্ঠা)
[১৪৪৩-১৪৪৪]
بحر زخار كفته بعد سلام بخواهتد اللهم اتحرمنا اجره ولا تفتنا بعده واغفر لنا وله. (زاد الاخرة باب نهم ص 112، بحر زخار)
অর্থঃ- “বাহরে যুখ্খার” গ্রন্থকার বলেন, জানাযা নামাযের সালামের পর এই দোয়া পড়বেন,
اللهم لتحر منا اجره ولا تفتنا بعده واغفر لنا وله.
অর্থাৎ “আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব হতে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্ মাফ করুন।” (যাদুল আখিরাহ্ ৯ম বাব ১১২ পৃষ্ঠা, বাহরে যুখখার)
[১৪৪৫-১৪৪৬]
بحر زخار میں ھے کہ بعد سلام یہ دعا پڑ ھے اللھم لاتحرمنا اجرہ ولاتفتنا بعدہ واغفرلنا ولہ.
(ھدیۃ المصلین لمجددی برکتی رحمۃ اللہ علیہ ص 112، بحر زخار)
অর্থঃ- “বাহরে যুখ্খার” নামক কিতাবে উল্লেখ আছে যে, (জানাযা নামাযের) সালামের পর এই দোয়া পাঠ করবে। “আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব হতে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে পরীক্ষার মধ্যে ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্ মাফ করুন।” (হাদিয়্যাতুল্ মুছাল্লীন লি মুজাদ্দিদী বরকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি ১১২ পৃষ্ঠা, বাহ্রে যুখ্খার)
[১৪৪৭]
ودر روایتے ست لہ رسول علیہ السلام بر مردہ نماز گزاردپس بگفت اللھم ان فلان بن فلان فی ذمتک دخل فی جوارک فقہ من فتنۃ القبر وعذاب النار وانت اھل الوفاء والحق اللھم اغفرلہ وارحمہ انک انت الغفور الرحیم. (زاد الاخرۃ باب نھم ص 112)
অর্থঃ- “কোন কোন রিওয়ায়েতে রয়েছে যে, হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামায পড়ে এ দোয়া করেছেন,
اللهم ان فلان بن فلان فى ذمتك دخل فى جوارك فقه من فتنة القبر وعذاب انار وانت اهل اوفاء والحق اللهم اغفر ه وارحمه انك انت الغفور الرحيم.
অর্থাৎ “আয় আল্লাহ্ পাক! অমুকের পুত্র অমুক আপনার জিম্মাদারী ও হিফাযতে রয়েছে। আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা ও দোযখের আযাব হতে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও হক্ব পূরণকারী। অতএব, আপনি তাকে মাফ করে দিন ও তার প্রতি রহম করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও মহা দয়াবান।” (যাদুল্ আখিরাহ ৯ম বাব ১১২ পৃষ্ঠা)
[১৪৪৮-১৪৪৯]
بعض روابتوں میں ھے کہ حضور صلی اللہ علیہ وسلم نے نماز جنازہ پڑھی پھریہ دعا یڑھی. اللھم ان فلان بن فلان (یھاں پرنام لے) فی ذمتک دخل فی جوارک فقہ من فتنۃ القبر وعذاب النار وانت اھل الوفاء والحق اللھم اغفرلہ وار حمہ انک انت الغفور الرحیم. (ھدیۃ المصلین ص 112. 113، زاد الاخرۃ)
অর্থঃ- “কোন কোন রিওয়ায়েতে আছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামায পড়ার পর এই দোয়া করেছেন,
اللھم ان فلان بن فلان (یھاں پرنام لے) فی ذمتک دخل فی جوارک فقہ من فتنۃ القبر وعذاب النار وانت اھل الوفاء والحق اللھم اغفرلہ وارحمہ انک انت الغفور الرحیم.
অর্থাৎ “ আয় আল্লাহ্ পাক! অমুকের পুত্র অমুক (এখানে মৃতের নাম বলবেন) আপনার জিম্মাদারী ও হিফাযতে রয়েছে। আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা ও দোযখের আযাব হতে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও হক্ব পূরণকারী। অতএব, আপনি তাকে মাফ করে দিন ও তাকে রহম করুন।” নিশ্চয়ই আপনি মহা ক্ষমাশীল ও মহা দয়াবান।” (হাদিয়্যাতুল্ মুছাল্লীন ১১২ ও ১১৩পৃষ্ঠা, যাদুল্ আখিরাহ)
উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, স্বয়ং আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযার পর মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করেছেন। সুতরাং জানাযার পর দোয়া করা জায়িয তো অবশ্যই বরং খাছ সুন্নত।
[১৪৫০]
وخواندن قران مجيد بر ميت ودعا درحق او قبل بر داشتن جنازه و… يش ازفن سبب نجات ازاحوا اخرت وعذاب قبراست. (شرح برزخ)
অর্থঃ- “জানাযা উঠিয়ে নেয়া ও দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযা নামাযের পরে মাইয়্যিতের জন্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা ও মুনাজাত করা আখিরাতের কঠিন অবস্থা এবং কবর আযাব হতে পরিত্রাণ পাওয়ার বিশেষ কারণ।” (শরহে বরযখ)
[১৪৫১]
اچھا طریقہ ثواب رسانی کا مردہ کے حق مین یہ ھیں کہ قبل دفن جس قدر ھو سکے کلمہ یاقران شریف یا درود یا کوئی سورت اپرہ کر ثواب بخشے. (تحفۃ الغا فلین ص 3)
অর্থঃ- “মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করার উত্তম পদ্ধতি হলো, দাফন করার পূর্বে যতটুকু সম্ভব হয় দোয়া, দরূদ, তাসবীহ, সূরা, ক্বিরয়াত পাঠ করে বখশিয়ে দেয়া।” (তুহফাতুল গাফিলীন ৩য় পৃঃ)
[১৪৫২-১৪৫৩]
وفى نافع المسلمين رجل رفع يدبه بد عاء الفاتحة للميت قبل الدفن جاز (جواهر انفيس شرح در القيس ص 132- نافع المسلمين)
অর্থঃ-“নাফিউল মুসলিমীন”, কিতাবে উল্লেখ আছে যে, মাইয়্যিতের জন্য দাফনের পূর্বে (অর্থাৎ জানাযা নামাযের পর) উভয় হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা জায়িয।” (জাওয়াহিরুন্ নাফীস শরহে দুররুল ক্বাইস ১৩২ পৃষ্ঠা, নাফিউল মুসলিমীন) [১৪৫৪-১৪৫৫]
فاتحہ ودعا برائے میت پیش ازد فن درست است وھمیں است بروایت معمولہ کذا فی خلاصۃ الفتح. (کشف الغطا، خلاصۃ الفتح)
অর্থঃ- “দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযার পর মাইয়্যিতের জন্য ফাতিহা পাঠ ও দোয়া করা জায়িয। এ রিওয়ায়েত অনুযায়ী আমল করা হয়েছে। খুলাছাতুল্ ফাত্হ’ নামক কিতাবে অনুরূপ আছে। (কাশফ্ল্ ুগিত্বা, খুলাছাতুল্ ফাত্হ)
[১৪৫৬-১৪৫৭]
سوال: ھمارے جلال پور جٹاں میں ایک مھاجر مولوی صاحب ھیں وہ حسب ذیل باتیں کرتے ھیں … بعد نماز جنازہ کے دعا کرنا حرام ھے.”
الخواب: مولوی مذکورکے یہ تمام مسائل غلط اور بے بنیاد ھیں. ختم، فاتحہ، دعا بعد نماز جنازہ وغیر کار خیر ھیں. ان کے کرنے والا مستحق ثواب ھے. (فثاوی نعیمیہ ص 125. 126، جاء الحق)
অর্থঃ- “প্রশ্নঃ আমাদের জালালপুরে এক মুহাজির মৌলভী ছাহেব বলেন যে, …. “জানাযা নামাযের পর দোঁয়া করা হারাম।”- এ ব্যাপারে ওলামায়ে দ্বীন কি বলেন? জবাবঃ উল্লিখিত মৌলভী ছাহেবের উক্ত বক্তব্য ভুল এবং ভিত্তিহীন। জানাযা নামাযের পর খত্ম, ফাতিহা ও দোয়া পাঠ ইত্যাদি করা উত্তম কাজ। এরূপ আমলকারী ছাওয়াবের উপযুক্ত।” (ফাতাওয়ায়ে নাঈমিয়াহ্ ১২৫-১২৬ পৃষ্ঠা, জায়াল হক্ব) [১৪৫৮-১৪৬১]
زاد الاخرۃ میں نھر فائق شرح کنز الدقائق اور بحر زخار سے نقل فر مایا بعداز سلام بخواند اللھم لاتحرمنا لجرہ ولاتفتنا بعدہ واغفرلنا ولہ. (جاء الحق ج 1 ص 264. زاد الاخرۃ، نھر الفائق شرح کنز الدقائق، بحر زخار)
অর্থঃ- “যাদুল্ আখিরাত’ কিতাবে ‘নাহরুল্ ফাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক’ ও ‘বাহরে যুখ্খার’ থেকে বর্ণিত আছে যে, সালাম ফিরানোর পর এ দোয়াটি পড়বেন। অর্থাৎ আয় আল্লাহ্ পাক! আমাদেরকে এর ছওয়াব থেকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে ফিৎনা ফাসাদের মধ্যে ফেলবেন না। আমাদেরকে ও তাকে মাফ করুন।” (জায়াল হক্ব ১ম জিঃ ২৬৪ পৃষ্ঠা, যাদুল্ আখিরাহ, নাহরুল্ ফাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব, বাহরে যুখখার)
[১৪৬২-১৪৬৩]
چو از نماز فارغ شوند مستحب است کہ امام یا صالح دیگر فاتحہ بقرتا مغلحون طرف سر جنازہ وخاتمہ بقرامن الرسول طرف بائیں بخواند کہ در حدیث وارداست ودر بعض حدیث بعداز دفن واقع شدہ ھر دو وقت کہ میسر شود مجوازست. (مفتاح الصلوۃ مصنف مولانا فتح محمد صاحب برھا نپوری ص 112 – جاء الحق)
অর্থঃ-“যখন জানাযা নামায শেষ হবে, তখন এটা মুস্তাহাব যে, ইমাম অথবা অন্য কোন নেককার সূরা বাক্বারারহৃ مفلحون পর্যন্ত মাইয়্যিতের মাথার কাছে এবং সূরা বাক্বারার শেষ আয়াত امن الرسول মাইয়্যিতের বাম পার্শে¦ পাঠ করবেন। কেননা, এ রকম হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে। কোন কোন হাদীস শরীফে দাফনের পরে এরূপ করার কথা বর্ণিত আছে। সম্ভব হলে উক্ত দু’সময়েই পড়া জায়িয আছে।” (মিফতাহুছ্ ছালাহ মুছান্নিফ মাওলানা ফতেহ মুহম্মদ ছাহেব বুরহানপুরী ১১২ পৃষ্ঠা, অনুরূপ জায়াল হক্বেও আছে)
[১৪৬৪]
نماز جنازہ کے بعد صفیں توڑگر دعا مانگنا جائز ھے فرض واجب نھیں، حدیث شریف میں ھے اذا صلیتم علی المیت فاخلصوا لہ الدعاء. (خیر الفثاوی ج 3 ص 270)
অর্থঃ- “নামাযে জানাযা-এর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয আছে। তবে ফরয, ওয়াজিব নয়। হাদীস শরীফে আছে, অর্থাৎ যখন তোমরা মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামায পড় তখন তার জন্য ইখলাছের সাথে দোয়া কর।” (খাইরুল ফাতাওয়া ৩য় জিঃ ২৭০ পৃষ্ঠা)
[১৪৬৫-১৪৬৬]
نماز جنازہ کے بعد صفیں توزکر دعا مانگنا جائزھے فرض واجب نھیں ….. علامہ سرخسی رحمۃ اللہ علیہ مبسوط میں فرماتے ھیں کہ حضرت عبد اللہ بن سلام رضی اللہ تعالی عنہ حضرت عمر رضی اللہ تعالی عنہ کے جنازے پرا ئے تو جنازہ ھو چکا تھا اپنے فرمایا ان سبقتمونی بالصلوۃ علیہ فلا تسبقونی بالدعاء لہ.
البتہ تارک کو ملامت نھیں کرنی چاھئے البتہ جو شخص اس کو بدعت یا خلاف شرع کھتاھے وہ قابل ملامت ھے. ( خیر الفتاوی ج 3 ص 270، مبسوط للسرخسی)
অর্থঃ- “নামাযে জানাযা-এর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয। তবে ফরয, ওয়াজিব নয়। …… আল্লামা সারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘মাবসূত’ নামক তাঁর লিখিত কিতাবে উল্লেখ করেন, হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর জানাযা পাননি। (জানাযার পর) তিনি যখন (সেখানে) উপস্থিত হলেন তখন বললেন, “তোমরা জানাযা নামায যদিও আমার পূর্বে পড়ে ফেলেছ, তবে দোয়ার ক্ষেত্রে আমার থেকে অগ্রগামী হয়োনা।”
নিশ্চয়ই জানাযার পর দোয়া তরক্বকারীকে তিরস্কার বা নিন্দনীয় মনে করা যাবেনা। কিন্তু যে ব্যক্তি উক্ত দোয়াকে বিদ্য়াত কিংবা খিলাফে শরা’ বলবে সে ব্যক্তি তিরস্কার বা নিন্দার পাত্র হবে।” (খাইরুল ফাতাওয়া ৩য় জিঃ ২৭০ পৃষ্ঠা, মাবসুত্ লিস্ সারাখসী)
[১৪৬৭]
بعد نماز جنازہ ایصال ثواب: سوال (3103) : بعد نماز جنازہ قبل دفن اولیاء میت مصلیوں سے کھتے ھیں کہ اپ لوگ تین تین مرتبہ سورہ اخلا ص پڑہ کرمیت کو اس کاثواب بخش دیں.
الجواب: اس میں کچہ حرج نھیں ھے پس اگر بعد نماز جنازہ کے تمام لوگ یا بعض سورہ اخلاص کوتین بار پڑہ کرمیت کوثواب پھنچا دیں تو اس میں کچہ حرج نھیں ھے. (فتاوی دار العلوم دیوبند ج 5 ص 418)
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর ঈছালে ছওয়াব প্রসঙ্গেঃ
সুওয়াল ৩১০৩)ঃ জানাযা নামাযের পর মৃতের ওলী উপস্থিত মুছল্লীগণকে লক্ষ্য করে বলেন যে, আপনারা তিন বার সূরা ইখলাছ পড়ে মাইয়্যিতের উপর ছওয়াব বখ্শিয়ে দিন। (এটা কিরূপ?) জাওয়াবঃ এরূপ করাতে কোন দোষ বা ক্ষতি নেই। সুতরাং জানাযা নামাযের পর যদি সকল লোক অথবা কিছু লোক সূরা ইখলাছ তিনবার পড়ে মাইয়্যিতের জন্য ছওয়াব রিসানী করে তাতে কোনই ক্ষতি নেই। (অর্থাৎ জায়িয)।”(ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৫ম জিঃ ৪১৮ পৃষ্ঠা)
[১৪৬৮]
بعد نماز جنازہ ایصال: سوال (3134): بعد نمازجنازہ قبل دفن چند مصلیوں کا ایصال ثواب کے لئے صورہ فاتحہ ایک بار اور سورہ اخلاص تین بار اھستہ اواز سے پڑھنا اور امام جنازہ یاکسی نیک أدمی کا دونوں ھاتہ اٹھا کر مختصر دعا کر نا شرعا درست ھے یا نھیں؟
الجواب: اس میں کچہ حرج نھیں ھے ….. (فتاوی دار العلوم دیوبند ج 5 ص 434- 435)
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর ঈছালে ছওয়াব প্রসঙ্গেঃ সুওয়াল (৩১৩৪)ঃ জানাযা নামাযের পর দাফনের পূর্বে কতক মুছল্লী (মৃতের প্রতি) ছওয়াব রিসানী করার জন্য অল্প আওয়াজে একবার সূরা ফাতিহা, তিনবার সূরা ইখলাছ পড়া এবং জানাযা নামাযের ইমাম অথবা কোন নেক লোকের জন্যে (জানাযা নামাযের পরে) উভয় হাত উঠিয়ে সংক্ষিপ্ত মুনাজাত করা শরীয়তে জায়িয কিনা? জাওয়াবঃ এরূপ পদ্ধতিতে মুনাজাত করাতে কোন ক্ষতি নেই।…।” (ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৫ম জিঃ ৪৩৪, ৪৩৫ পৃষ্ঠা)
[১৪৬৯]
پھر کھا ھے کہ محمد بن الفضل نے یہ کھاھے کہ اگر جنازہ کی نماز کے بعد دعا کرلی جائے تو کوئی مضائقہ نھیں. (نفع المفتی والسائل ص 410)
অর্থঃ- “হযরত মুহম্মদ ইবনে ফযল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যদি জানাযা নামাযের পর দোয়া করে তাতে কোন অসুবিধা নেই।” (নাফউল মুফতী ওয়াস্ সাইল ৪১০ পৃষ্ঠা) [১৪৭০]
تاھم نماز جنازہ سے فارغ ھونے کے بعد فردا فردا اگر لوگ دعا مانگ لیں توکچہ مضائقہ بھی نھیں. (کفایت المفتی ج4 ص 92)
অর্থঃ- “জানাযা নামায পড়ার পর যদি লোকেরা পৃথক পৃথকভাবে মুনাজাত করে তবে কোন ক্ষতি নেই।” (কিফায়াতুল মুফতী ৪র্থ জিঃ ৯২ পৃষ্ঠা)
[১৪৭১]
ھاں لوگ اپنے اپنے دل میں بغیر ھاتہ اٹھائے دعائے مغفرت کرتے رھیں تویہ جائز ھے. (کفایت المفتی ج 4 ص 74، 75)
অর্থঃ- “হ্যাঁ (জানাযার পরে) যদি লোকেরা আলাদা আলাদাভাবে মনে মনে হাত উঠানো ছাড়া দোয়া, মাগফিরাত করে তবে তা জায়িয হবে।” (কিফায়াতুল মুফতী ৪র্থ জিঃ ৭৪, ৭৫ পৃষ্ঠা)
উল্লেখ্য, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ ছাহেব যদিও অজ্ঞতার কারণে ইজ্তিমায়ী দোয়াকে ও হাত উঠানোকে অস্বীকার করেছেন, কিন্তু জানাযার পর দোয়া করাকে ঠিকই জায়িয বলেছেন।
[১৪৭২]
بعد از نماز جنازہ فورا بیٹھ کر کلمہ کلام پڑھنا درست ھے یا نہ؟
الجواب: نماز جنازہ کے بعد فورا اجتماعی طورپر تمام کا بیٹہ کر قرأن کی تلاوت کرنا ثابت نھیں البتہ اگر کوئی علیحدہ طور پر میت کے لئے دعا وقلاوت کرے تو درست ھے. (خیر الفتاوی ج 3 ص 224)
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর হঠাৎ বসে কালিমা, কালাম পড়া জায়িয কিনা? জাওয়াবঃ জানাযা নামাযের পর হঠাৎ সকলে একত্রে বসে কুরআন তিলাওয়াত করা ছাবিত নেই। তবে যদি কেউ পৃথক পৃথক ভাবে জানাযার পর মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া ও কুরআন তিলাওয়াত করে তা জায়িয রয়েছে।” (খাইরুল ফতওয়া ৩য় জিল্দ ২২৪ পৃষ্ঠা)
[১৪৭৩]
جنازے کے بعد دعا کرنے ھوتو صفوں کے ترتیب کو توڑ دیا جائے. اور ھر شخص اپنے طور پر بغیر ھاتہ اٹھائے دعاکرے تو مضائقہ نھیں. (اختلاف امت اور صراط مستقیم ج 1 ص 122)
অর্থঃ- “জানাযার পর দোয়া করতে হলে কাঁতার ভেঙ্গে দিবে এবং প্রত্যেকেই হাত উঠানো ব্যতীত দোয়া করবে। এরূপ করাতে কোন অসুবিধা নেই।” (ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাকীম ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠা)
[১৪৭৪]
شریمت کا حکم یہ ھے کہ جو عبادت اجتماعی طور پر اداگی کئی ھے اس کے بعد تو دعاء اجتما عے طور پر کی جائے مگر جو عبادت الگ الگ اداکی گئی ھو اسکے بعد دعاء بھی انفر ادی طور پر ھونی چاھیے. (اختلاف امت اور صراط مستقیم حصہ 1 ص 120)
অর্থঃ- “শরীয়তের নির্দেশ হলো যে ইবাদত ইজতেমায়ীভাবে আদায় করা হয় এরপর দোয়া মুনাজাতও ইজতিমায়ীভাবে করবে। আর যে ইবাদত পৃথক পৃথকভাবে করা হয়, এরপর দোয়াও পৃথক পৃথকভাবে করবে।” (ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাক্বীম ১ম হিচ্ছা ১২০ পৃষ্ঠা) উক্ত দেওবন্দী আলিমের মতে জানাযা যেহেতু জামায়াতের সাথে অর্থাৎ ইজতিমায়ীভাবে আদায় করা হয়, তাই এরপর ইজতিমায়ীভাবে দোয়া করবে। উক্ত ইবারতের দ্বারা মুলতঃ এটাই বুঝানোই হয়েছে। উল্লিখিত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্ট ও সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হলো যে, মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্য জানাযার পূর্বে, জানাযার পর, দাফনের পূর্বে ও দাফনের পর হাত তুলে ও সম্মিলিতভাবে দোয়া-মুনাজাত করা জায়িয তো বটেই বরং সুন্নতে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সুন্নতে ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও সুন্নতে উম্মত। যার প্রমাণ কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, শরাহ, ফিক্বাহ্ ও ফতওয়ার কিতাবে রয়েছে। এটাকে হারাম, নাজায়িয ও বিদ্য়াত বলা গোমরাহী বৈ কিছুই নয়।
ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব ফতহুল ক্বদীর ২য় জিঃ ৮১ পৃষ্ঠা ও নূরুল হিদায়াহ্ ১ম জিঃ ১৪৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
عن عبد الله بن ابى بكر قال: لما التقى الناس بمئونة، جلس رسول الله صلى الله عليه وسلم على المنبر، وكشف له ما بينه وبين الشام، فهو ينظر الى معركتهم، فقال عليه السلام: اخذ الراية زيد ين حارثة، فمضى حتى استشهد، وصلى عليه ودعاله، وقال استغفرواله، وقد دخل الجنة، وهو يسعى، ثم اخذ الراية جعفر بن ابى طالب، فمضى حتى استشهد، فصلى عليه رسول الله صلى الله عليه وسلم ودعاله، وقال: استغفروا له، وقد دخل الجنة، فهو يطير فيها بجناحين حيث شاء،
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, যখন হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ‘মাঊনা’ নামক স্থানে মিলিত হলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মিম্বরে উঠে বসলেন। তখন তার কাছে শাম দেশের (মুতার যুদ্ধের) অবস্থা স্পষ্ট প্রকাশিত হচ্ছিল। তিনি হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের যুদ্ধের অবস্থা দেখতে ছিলেন। অতঃপর হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (যুদ্ধে) হযরত যায়িদ ইবনে হারিসা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন, অতঃপর তিনি শহীদ হয়ে গেলেন। তাই তিনি তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফার কর। তিনি জান্নাতে চলে গেছেন,আর তা খুবই দ্রুত। হযরত জা’ফর ইবনে আবু তালিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পতাকা ধরলেন অতঃপর তিনিও শহীদ হয়ে গেলেন। তাই, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর উপর জানাযা নামায পড়লেন এবং তাঁর জন্য দোয়া করলেন এবং বললেন, তোমরাও তাঁর জন্য ইস্তিগফারের দোয়া কর। তিনি তাড়াতাড়ি জান্নাতে চলে গেছেন এবং সেখানে দুটি ডানা নিয়ে যেখানে ইচ্ছা সেখানে উড়বেন।”
আল্ মাবসূত লিস্ সারাখসী ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
روى عن ابن عباس رضى الله عنهما وابن عمر رضى الله عنه انهما فاتهما الصلاة على الجنازة فلما حضرا مازادا على الاستغفار له.
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা ও হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুা থেকে বর্ণিত। তাঁদের দু’জনের একদা জানাযা নামায ফউত হলো। যখন তাঁরা (নামাযের পর মাইয়্যিতের কাছে) উপস্থিত হলেন, তখন মাইয়্যিতের জন্য অতিরিক্ত ইস্তিগফার করলেন।”
আল মাবসূত লিস সারাখসী ২য় জিঃ ৬৭ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
وعبد الله بن سلام رضى الله عنه فاتته الصلاة على جنازة عمر فلما حضر قال ان سبقتمونى بالصلاة عليه فلاتسبقونى بالد عاء له. (المبسوط للسرخسى ج 2 ص 67)
অর্থঃ- “হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর জানাযা পাননি। (জানাযার পর) তিনি যখন (সেখানে) উপস্থিত হলেন তখন বললেন, “তোমরা জানাযা নামায যদিও আমার পূর্বে পড়ে ফেলেছ, তবে দোয়ার ক্ষেত্রে আমার থেকে অগ্রগামী হয়োনা।”
মীযানুল্ কুবরা লিশ্ শা’রানী কিতাবে উল্লেখ আছে,
قال ابوحنيفة الثورى ان التعزية سنة قبل الدفن لا بعده لان شدة الحزن تكون قبل الد فن فيعزى ويدعوله. (ميزان الكبرى للشعر انى ، جاء الحق حصه اص264)
অর্থঃ- “হযরত ইমাম আবূ হানীফাতাছ্ ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন যে, দাফনের পরে নয় বরং দাফনের আগে সমবেদনা জ্ঞাপন করা সুন্নত। কেননা, দাফনের আগে বিরহ-বেদনা অনেক বেশী থাকে। তাই, (দাফনের পূর্বে) শোক প্রকাশ করবে এবং মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করবে।”
আল বাহরুর রাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক্ব ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
لايدعو بعد التسليم كما فى الخلاصة وعن الفضلى لابأس به. (البحر الرائق شرح كنز الدقائق ج2ص 183، رضوية)
অর্থঃ- “সালামের পর দোয়া করবেনা যেমনটি খুলাছায় আছে। ফযলী থেকে বর্ণিত আছে যে, জানাযা নামাযের সালামের পর দোয়া করতে কোন অসুবিধা নেই- অর্থাৎ জায়িয।”
ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব ত্বহত্বাবীতে উল্লেখ আছে,
وان ابا حنيفة لما مات فختم عليه سبعون الفا قبل الدفن.
অর্থঃ- “যখন হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ইন্তিকাল করেন, তখন দাফনের আগে তাঁর জন্য সত্তর হাজার বার কুরআন শরীফ খতম করা হয়।”
নাহরুল ফাইক্ব শরহে কান্যুদ্ দাকাইক্ব কিতাবে উল্লেখ আছে,
ويقول بعد صلوة الجنازة اللهم لاتحر منا اجره الخ.
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর পড়বে,
اللهم لا تحر منا اجره ولا تفتنا بعده واغفرلنا وله.
অর্থাৎ- “আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্খতা ক্ষমা করুন।”
কাশফুল্ হাক্বাইক্ব শরহে কানযুদ্ দাক্বাইক ১ম জিঃ ৩৩৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
بعضے حضرات نے سلام کے بعد یہ دعاء بھی لکھی ھے. کہ یہ پڑھے. اللھم ربنا اتنا فی الد نیا حسنۃ وفی الاخرۃ حسنۃ وقنا برحمتک عذاب القبر وعذاب النار.
অর্থঃ- “কোন কোন হযরত উলামা-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহি জানাযা নামাযের সালামের পর এ দোয়া পড়ার কথা লিখেছেন,
اللهم ربنا اتنا فى الدنيا حسنة وفى الاخرة حسنة وقنا بر حمتك عذاب القبر وعذاب النار.
অর্থাৎ “আয় আমাদের রব! আমাদেরকে দুনিয়ার মধ্যে এবং আখিরাতের মধ্যে মঙ্গল (ভালাই) দান করুন। আর আপনার রহমতের দ্বারা আমাদেরকে কবরের আযাব এবং জাহান্নামের আযাব থেকে রক্ষা করুন।”
যাদুল্ আখিরাহ ৯ম বাব ১১২ পৃষ্ঠা এবং হাদিয়াতুল মুছাল্লীন ১১২ ও ১১৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
ودر روايتے ست لہ رسول علیہ السلام بر مردہ نماز گزا ردپس بگقت اللھم ان فلان بن فلان فی ذمتک دخل فی جوارک فقہ من فتنۃ القبر وعذاب النار وانت اهل االو فاء والحق اللهم اغفرله وارحمه انک انت الغفور الرحیم.
অর্থঃ- “কোন কোন রিওয়ায়েতে রয়েছে যে, হযরত রসূলুল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামায পড়ে এ দোয়া করেছেন,
اللهم ان فلان بن فلان فى ذمتك دخل فى جوارك فقه من فتنة القبر وعذاب النار وانت اهل الوفاء والحق اللهم اغفر له وارحمه انك انت الغفور الرحيم.
অর্থাৎ “আয় আল্লাহ্ পাক! অমুকের পুত্র অমুক আপনার জিম্মাদারী ও হিফাযতে রয়েছে। আপনি তাকে কবরের পরীক্ষা ও দোযখের আযাব হতে রক্ষা করুন। আপনি ওয়াদা ও হক্ব পূরণকারী। অতএব, আপনি তাকে মাফ করে দিন ও তার প্রতি রহম করুন। নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল ও মহা দয়াবান।” ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব শরহে বরযখে উল্লেখ আছে,
وخواندن قران مجيد بر ميت ودعادر حق او قبل بر داشتن جنازه وپیش ازدفن سبب نجات از احوال اخرت وعذاب قبراست.
অর্থঃ- “জানাযা উঠিয়ে নেয়া ও দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযা নামাযের পরে মাইয়্যিতের জন্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা ও মুনাজাত করা আখিরাতের কঠিন অবস্থা এবং কবর আযাব হতে পরিত্রাণ পাওয়ার বিশেষ কারণ।”
তুহফাতুল গাফিলীন ৩য় পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
اچھا طریقہ ثواب رسانی کا مردہ کے حق مین یہ ھیں کہ قبل دفن جس قدر ھو ستکے کلمہ یاقران شریف یا درود یا کوئی سورت اپرہ کر ثواب بخشے.
অর্থঃ- “মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করার উত্তম পদ্ধতি হলো, দাফন করার পূর্বে যতটুকু সম্ভব হয় দোয়া, দরূদ, তাসবীহ, সূরা, ক্বিরয়াত পাঠ করে বখশিয়ে দেয়া।” জাওয়াহিরুন্ নাফীস শরহে দুররুল ক্বাইস ১৩২ পৃষ্ঠা ও নাফিউল মুসলিমীন কিতাবে উল্লেখ আছে,
وفى نافع المسلمين رجل رفع يد يه بدعاء الفاتحة
অর্থঃ-“নাফিউল মুসলিমীন”, কিতাবে উল্লেখ আছে যে, মাইয়্যিতের জন্য দাফনের পূর্বে (অর্থাৎ জানাযা নামাযের পর) উভয় হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা জায়িয।” কাশফ্ল্ ুগিত্বা, খুলাছাতুল্ ফাত্হ কিতাবে উল্লেখ আছে,
فاتحه ودعابر ائے میت پیش ازدفن درست است وھمیں است بروایت معموله کذا فی خلاصۃ الفتح.
অর্থঃ- “দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযার পর মাইয়্যিতের জন্য ফাতিহা পাঠ ও দোয়া করা জায়িয। এ রিওয়ায়েত অনুযায়ী আমল করা হয়েছে। খুলাছাতুল্ ফাত্হ’ নামক কিতাবে অনুরূপ আছে। ফাতাওয়ায়ে নাঈমিয়াহ্ ১২৫-১২৬ পৃষ্ঠা কিতাবে উল্লেখ আছে,
سوال: ھمارے جلال پور جٹاں میں ایک مھاجر مولوی صاحب ھیں وہ حسب ذیل باتیں کرتے ھیں … “بعد نماز جنازہ کے دعا کرنا حرام ھے.”
الجواب: مولوی مذکورکے یہ تمام مسائل غلط اور بے بنیاد هیں. ختم، فاتحہ، دعا بعد نماز جنازہ وغیر کار خیر ھیں. ان کے کرنے والا مستحق ثواب ھے.
অর্থঃ- “প্রশ্নঃ আমাদের জালালপুরে এক মুহাজির মৌলভী ছাহেব বলেন যে, …. “জানাযা নামাযের পর দোয়া করা হারাম।”- এ ব্যাপারে ওলামায়ে দ্বীন কি বলেন? জবাবঃ উল্লিখিত মৌলভী ছাহেবের উক্ত বক্তব্য ভুল এবং ভিত্তিহীন। জানাযা নামাযের পর খত্ম, ফাতিহা ও দোয়া পাঠ ইত্যাদি করা উত্তম কাজ। এরূপ আমলকারী ছাওয়াবের উপযুক্ত।”
খাইরুল ফতওয়া ৩য় জিঃ ২৭০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
نماذ جناذہ کے بعد صفیں توڑ کر دعا مانگنا جائز ھے فرض واجب نھیں، حدیث شریف میں ھے اذا صلیتم علی المیت فاخلصوا لہ الد عاء. (خیر الفتاوی ج 3 ص 270)
অর্থঃ- “নামাযে জানাযা-এর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয আছে। তবে ফরয, ওয়াজিব নয়। হাদীস শরীফে আছে, অর্থাৎ যখন তোমরা মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে নামায পড় তখন তার জন্য ইখলাছের সাথে দোয়া কর।”
খাইরুল ফাতাওয়া ৩য় জিঃ ২৭০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
نماذ جناذہ کے بعد صفیں توڑکر دعا مانگنا جائزھے فرض واجب نھیں …. علامہ سرخسی رحمۃ الله علیہ مبسوط میں فر ماتے ھیں کہ حضرت عبد اللہ بن سلام رضی اللہ تعالی عنہ حضرت عمر رضی اللہ تعالی عنہ کے جنا ذے پر ائے تو جناذہ ھو چکا تھا اپنے فر مایا ان سبقتمونی بالصلوۃ علیہ فلا تسبقونی بالدعاء لہ.
البتہ تارک کو ملامت نھیں کرنی چاھئے البتہ جو شخص اس کو بدعت یا خلاف شر ع کھتاھے وہ قابل ملامت ھے.
অর্থঃ- “নামাযে জানাযা-এর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয। তবে ফরয, ওয়াজিব নয়। …… আল্লামা সারাখসী রহমতুল্লাহি আলাইহি ‘মাবসূত’ নামক তাঁর লিখিত কিতাবে উল্লেখ করেন, হযরত আব্দুল্লাহ্ বিন সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আমীরুল মু’মিনীন হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর জানাযা পাননি। (জানাযার পর) তিনি যখন (সেখানে) উপস্থিত হলেন তখন বললেন, “তোমরা জানাযা নামায যদিও আমার পূর্বে পড়ে ফেলেছ, তবে দোয়ার ক্ষেত্রে আমার থেকে অগ্রগামী হয়োনা।” নিশ্চয়ই জানাযার পর দোয়া তরক্বকারীকে তিরস্কার বা নিন্দনীয় মনে করা যাবেনা। কিন্তু যে ব্যক্তি উক্ত দোয়াকে বিদ্য়াত কিংবা খিলাফে শরা’ বলবে সে ব্যক্তি তিরস্কার বা নিন্দার পাত্র হবে।” ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৫ম জিঃ ৪১৮ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
بعد نماز جنازہ ایصال ثواب: سوال (3103): بعد نماز جنازہ قبل دفن اولیاء میت مصلیوں سے کھتے ھیں کہ اپ لوگ تین تین مرتبہ سورہ اخلاص پڑہ کرمیت کو اس کاثواب بخش دیں.
الجواب: اس میں کچہ حرج نھیں ھے پس اگر بعد نماز جنازہ کے تمام لوگ یا بعض سورہ اخلاص کو تین بار پڑہ کر میت کوثواب پھنچا دیں تو اس میں کچہ حرج نھیں ھے.
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর ঈছালে ছওয়াব প্রসঙ্গেঃ সুওয়াল ৩১০৩)ঃ জানাযা নামাযের পর মৃতের ওলী উপস্থিত মুছল্লীগণকে লক্ষ্য করে বলেন যে, আপনারা তিন বার সূরা ইখলাছ পড়ে মাইয়্যিতের উপর ছওয়াব বখ্শিয়ে দিন। (এটা কিরূপ?) জাওয়াবঃ এরূপ করাতে কোন দোষ বা ক্ষতি নেই। সুতরাং জানাযা নামাযের পর যদি সকল লোক অথবা কিছু লোক সূরা ইখলাছ তিনবার পড়ে মাইয়্যিতের জন্য ছওয়াব রিসানী করে তাতে কোনই ক্ষতি নেই। (অর্থাৎ জায়িয)।” ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ ৫ম জিঃ ৪৩৪, ৪৩৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে.
بعد نماز جنازہ ایصال: سوال (3134): بعد نمازجنازہ قبل دفن چند مصلیوں کا ایصال ثواب کے لئے سورہ فاتحہ ایک بار اور سورہ اخلاص تین بار اھستہ اواز سے پڑ ھنا اور امام جنازہ یاکسے نیک أدمی کا دونوں ھاتہ اٹھا کر مختصر دعا کرنا شرعا درست ھے یا نھیں؟
الجواب: اس میں کچہ حر ج نھیں ھے ………
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর ঈছালে ছওয়াব প্রসঙ্গেঃ সুওয়াল (৩১৩৪)ঃ জানাযা নামাযের পর দাফনের পূর্বে কতক মুছল্লী (মৃতের প্রতি) ছওয়াব রেসানী করার জন্য অল্প আওয়াজে একবার সূরা ফাতিহা, তিনবার সূরা ইখলাছ পড়া এবং জানাযা নামাযের ইমাম অথবা কোন নেক লোকের জন্যে (জানাযা নামাযের পরে) উভয় হাত উঠিয়ে সংক্ষিপ্ত মুনাজাত করা শরীয়তে জায়িয কিনা? জাওয়াবঃ এরূপ পদ্ধতিতে মুনাজাত করাতে কোন ক্ষতি নেই।…।” নাফউল মুফতী ওয়াস্ সাইল ৪১০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
پھر کھا ھے کہ محمد بن الفضل نے یہ کھا ھے کہ اگر جنازہ کی نماز کے بعد دعا کر لی جائے تو کوئی مضا ئقہ نھیں.
অর্থঃ- “হযরত মুহম্মদ ইবনে ফযল রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, যদি জানাযা নামাযের পর দোয়া করে তাতে কোন অসুবিধা নেই।” কিফায়াতুল মুফতী ৪র্থ জিঃ ৯২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
تاھم نماذ جنازہ سے فارغ ھونے کے بعد فردا فر دا اگر اوگ دعا مانگ لیں تو کچہ مضا ئقہ بھی نھیں.
অর্থঃ- “জানাযা নামায পড়ার পর যদি লোকেরা পৃথক পৃথকভাবে মুনাজাত করে তবে কোন ক্ষতি নেই।” কিফায়াতুল মুফতী ৪র্থ জিঃ ৭৪, ৭৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
ھاں لوگ اپنے اپنے دل میں بغیر ھا تہ اٹھا ئے دعائے مغفرت کر تے رھیں تویہ جائز ھے.
অর্থঃ- “হ্যাঁ (জানাযার পরে) যদি লোকেরা আলাদা আলাদাভাবে মনে মনে হাত উঠানো ছাড়া দোয়া, মাগফিরাত করে তবে তা জায়িয হবে।” উল্লেখ্য, মুফতী কিফায়াতুল্লাহ ছাহেব যদিও অজ্ঞতার কারণে ইজ্তিমায়ী দোয়াকে ও হাত উঠানোকে অস্বীকার করেছেন, কিন্তু জানাযার পর দোয়া করাকে ঠিকই জায়িয বলেছেন। ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাকীম ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
جنازے کے بعد دعا گر نے ھوتو صفوں کے تر تیب کو توڑ جیا جائے. اور ھر شخص اپنے طور پر بغیر ھاتہ اٹھائے دعاکرے تو مضائقہ نھیں.
অর্থঃ- “জানাযার পর দোয়া করতে হলে কাঁতার ভেঙ্গে দিবে এবং প্রত্যেকেই হাত উঠানো ব্যতীত দোয়া করবে। এরূপ করাতে কোন অসুবিধা নেই।” উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্য ভাবেই প্রমাণিত হলো যে, নির্ভরযোগ্য বহু ফিক্বাহের কিতাবেই “জানাযার পর দোয়া করাকে জায়িয বলা হয়েছে।” শুধু তাই নয় মুনাজাত বিরোধীদের মুরুব্বী দেওবন্দীদের কিতাবেও “জানাযার পর দোয়াকে জায়িয” বলা হয়েছে। অতএব, প্রমাণিত হলো যে, মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা ও চরম জিহালতপূর্ণ। দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, হ্যাঁ কোন কোন ফিক্বাহের কিতাবে জানাযার সালামের পর দোয়া করাকে মাকরূহ লিখা হয়েছে এটা সত্য কথাই, তবে তা অবশ্যই ব্যাখ্যা সাপেক্ষ। কেননা যেখানে হাদীস শরীফ দ্বারাই প্রমাণিত যে, স্বয়ং আখিরি রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ জানাযার পর দোয়া করেছেন” সেখানে ইমামগণ সরাসরী এটাকে মাকরূহ বলতে পারেননা, যদি বলেও থাকেন তবে অবশ্যই তা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ, নচেৎ প্রমাণিত হবে যে, ইমামগণ হাদীস শরীফের বিরুদ্ধে ফতওয়া দিয়েছেন। অথচ তা চিন্তাই করা যায়না। অতএব ফিক্বাহের যেসকল কিতাবে জানাযার পর দোয়াকে মাকরূহ বলা হয়েছে তার ব্যাখ্যা মূলক জাওয়াব হলো- “সালামের পর নামাযের কাতারে থেকে দাঁড়ানো অবস্থায় দোয়া করা মাকরূহ। কেননা যদি কাতারে থেকে দোয়া করা হয়, তবে সাধারণ লোক হয়তো মনে করতে পারে যে, দোয়াটি নামাযেরই একটি অংশ। সাধারণ লোক যেন বিভ্রান্তিতে না পরে তাই ফক্বীহগণ সালামের পর পরই অর্থাৎ কাঁতারে থেকে দোয়া করাকে মাকরূহ বলেছেন। যা মূলতঃ ফিক্বাহের কিতাবের ইবারত দ্বারাই সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। নিম্নে উদাহরণ স্বরূপ কতিপয় ইবারত উল্লেখ করা হলো- ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব “বাহরুর রায়িক”-এর ২য় জিঃ ১৮৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে।
لايدعو بعد التسليم كما فى الخلاصة
অর্থাৎ “জানাযার নামাযের সালাম ফিরানোর পর দোয়া করবে না। অনুরূপ খোলাছায় উল্লেখ আছে। ফিক্বাহের বিখ্যাত কিতাব “কিনইয়াহ”-এর ১ম জিঃ ৫৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
لايقوم الرجل بالد عاء بعد صلاة الجنازة
অর্থাৎ- জানাযা নামাযের পর কোন লোক (কাঁতারে) দাঁড়িয়ে থেকে দোয়া করবেনা। মিশকাত শরীফের বিখ্যাত ব্যাখ্যাগ্রন্থ “মিরকাত শরীফ”-এর ২য় জিঃ ৩১৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
لا يدعو للميت بعد الجنازة لانه يشبه الزياة فى صلاة الجنازة.
অর্থাৎ “জানাযা নামায শেষ করার (পর পরই) মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করবেনা। কেননা এতে (সাধারণ লোক মনে করতে পারে যে) জানাযার নামাযে অতিরিক্ত করা হয়েছে।” উল্লেখ্য, উল্লিখিত তিনখানা ইবারতে বর্ণিত তিন খানা শব্দ যেমন, يقوم. تسليم এবং زيادة দ্বারা এটাই প্রমাণ করে যে, সালামের পর পর কাঁতারে থেকে দোয়া করলে সাধারণ লোক এটাকে জানাযার অতিরিক্ত একটি অংশ মনে করতে পারে বিধায় ফক্বীহগণ এটাকে মাকরূহ বলেছেন। সুতরাং সালামের পর কাতার ভঙ্গ করে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা ফক্বীহগণের মতে মাকরূহ নয়। কেননা এতে সাধারণ লোক বিভ্রান্তিতে পরার কোন অবকাশ নেই। এর প্রমাণ বা দৃষ্টান্ত আমরা ফিক্বাহের কিতাবসমূহে অন্যান্য মাসয়ালার ক্ষেত্রেও দেখতে পাই। যেমন ফিক্বাহর কিতাবে উল্লেখ আছে, “জামায়াতে নামায আদায় করার পর যে স্থানে দাঁড়িয়ে ফরয পড়েছে, সে স্থানে দাঁড়িয়ে সুন্নত আদায় করা মাকরূহ। কেননা এতে সাধারণ লোক মনে করতে পারে যে, জামায়াত তখনও চলছে বা শেষ হয় নাই। তাই কাঁতার ভঙ্গ করে একটু ডানে বামে বা উপরে নিচে সরে সুন্নত আদায় করবে। তবে সাধারণ লোক বিভ্রান্তিতে পড়ার অবকাশ থাকবে না। ফক্বীহগণ এর উপর ক্বিয়াস করেই ফতওয়া দিয়েছেন যে, জানাযার পর কাঁতার ভঙ্গ করে এবং মাইয়্যিত থেকে একটু সরে গিয়ে দোয়া করা জায়িয, মাকরূহ নয়। কেননা এতে বিভ্রান্তিতে পরার কোনই অবকাশ নেই। ফক্বীহগণ যে, জানাযার পর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করাকে জায়িয বলেছেন নিম্নে তার কতিপয় প্রমাণ পেশ করা হলো- চৌদ্দশত হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ, ইমামুল হুদা, কুতুবুল আলম, ফক্বীহুল উম্মত, মুজাহিদে আ’যম হযরত আবু বকর ছিদ্দীকী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি স্বয়ং নিজেই জানাযার পর কাতার ভঙ্গ করে হাত তুলে ও সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করতেন এবং তাঁর বিখ্যাত “মত-পথ” নামক কিতাবে তা জায়িয বলে ফতওয়া দিয়েছেন। যেমন, উক্ত কিতাবে উল্লেখ আছে, “আরো কতগুলো মাসয়ালা যেগুলোকে ফুরফুরার পীর ছাহেব ক্বিবলা রহমতুল্লাহি আলাইহি জায়িয বলতেন ও নিজেও আমল করতেন। যথা কবরে তালকীন করা, জানাযা নামাযের পর কাঁতার ভঙ্গ করে মুর্দার জন্য মাগফিরাতের দোয়া চাওয়া ও ছওয়াব রেসানী করা …….. খাইরুল ফাতাওয়া ৩য় জিঃ ২৭০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
نماز جنازہ کے بعد صفیں توڑگر دعا مانگنا جائز ھے.
অর্থঃ- “নামাযে জানাযা-এর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয আছে। ইখতিলাফে উম্মত আওর ছিরাতে মুস্তাকীম ১ম জিঃ ১২২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
جنازے کے بعد دعا کرنے ھو تو صفوں کے ترتیب کو توڑ دیا جائے.
অর্থঃ- “জানাযার পর দোয়া করতে হলে কাঁতার ভেঙ্গে দিবে।” ফক্বীহগণের উপরোক্ত বক্তব্য দ্বারা অকাট্য ভাবেই প্রমাণিত হলো যে, কাঁতার ভঙ্গ করে জানাযার পর মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয। ফিক্বাহের যে সকল কিতাবে “জানাযার পর দোয়া করাকে মাকরূহ বলা হয়েছে তা ব্যাখ্যা সাপেক্ষ অর্থাৎ উক্ত ইবারত সমূহের সঠিক ও ব্যাখ্যা মূলক অর্থ হলো- “জানাযার নামাযের সালামের পর পর কাঁতারে দাঁড়িয়ে থেকে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা মাকরূহ।” তৃতীয়তঃ বলতে হয় যে, মুনাজাত বিরোধীরা যে বলে, “জানাযার পর থেকে দাফনের পূর্ব পর্যন্ত দোয়া করা জায়িয নেই।” তাদের এ বক্তব্য চরম জিহালত পূর্ণ ডাহা মিথ্যা দলীল বিহীন ও হাদীস শরীফ বিরোধী। কেননা হাদীস শরীফে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে, আখিরী রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দাফনের পূর্বেও মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করেছেন।ঃ মুনাজাত বিরোধীদের প্রতি চ্যালেঞ্জ তারা কুরআন, হাদীস ও ফিক্বাহের কিতাব থেকে এরূপ একখানা দলীল পেশ করুক যেখানে লেখা আছে যে, “জানাযার পর থেকে দাফনের পূর্ব পর্যন্ত দোয়া করা জায়িয নেই।” পক্ষান্তরে দাফনের পূর্বে যে, দোয়া করা জায়িয তার বহু প্রমাণ আমাদের নিকট বিদ্যমান রয়েছে। নিম্নে তার কিছু প্রমাণ উল্লেখ করা হলো- ত্বহত্বাবী শরীফ-এ উল্লেখ আছে,
ان ابا حنيفة لما مات فختم عليه سبعون الفا قبل الدفن.
অর্থঃ- “যখন হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ইন্তিকাল করেন, তখন দাফনের আগে তাঁর জন্য সত্তর হাজার বার কুরআন শরীফ খতম করা হয়।” নাহরুল ফাইক্ব শরহে কান্যুদ্ দাকাইক্ব-এ উল্লেখ আছে,
ويقول بعد صلوة الجنازة اللهم لاتحرمنا اجره الخ.
অর্থঃ- “জানাযা নামাযের পর পড়বে,
اللهم لا تحر منا اجره ولاتفتنا بعد هوا غفرلنا وله.
অর্থাৎ- “আয় আল্লাহ্ পাক! ইন্তিকাল জনিত কারণে ধৈর্য্য ধারণের ছওয়াব থেকে আমাদেরকে বঞ্চিত করবেন না। আর ইন্তিকালের পর আমাদেরকে পরীক্ষায় ফেলবেন না। আর আমাদের ও তার (মৃত ব্যক্তির) গুণাহ্খতা ক্ষমা করুন।” শরহে বরযখ-এ উল্লেখ আছে,
وخواندن قران مجيد بر ميت ودعا در حق او قبل بر داشتن جنازه وپيش ازدفن سبب نجات از احوال اخرت وعذاب قبراست.
অর্থঃ- “জানাযা উঠিয়ে নেয়া ও দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযা নামাযের পরে মাইয়্যিতের জন্যে কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করা ও মুনাজাত করা আখিরাতের কঠিন অবস্থা এবং কবর আযাব হতে পরিত্রাণ পাওয়ার বিশেষ কারণ।” তুহফাতুল গাফিলীন ৩য় পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,
اچھا طریقہ ثواب رسانی کا مردہ کے حق مین یہ ھیں کہ قبل دفن جس قدر ھو سکے کلمہ یاقران شریف یا درود یا کوئی سورت اپرھ کر ثواب بخشے.
অর্থঃ- “মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করার উত্তম পদ্ধতি হলো, দাফন করার পূর্বে যতটুকু সম্ভব হয় দোয়া, দরূদ, তাসবীহ, সূরা, ক্বিরয়াত পাঠ করে বখশিয়ে দেয়া।” জাওয়াহিরুন্ নাফীস শরহে দুররুল ক্বাইস ১৩২ পৃষ্ঠা ও নাফিউল মুসলিমীন-এ উল্লেখ আছে,
وفى نافع المسلمين رجل رفع يديه بدعاء الفاتحة للميت قبل الدفن جاز.
অর্থঃ-“নাফিউল মুসলিমীন”, কিতাবে উল্লেখ আছে যে, মাইয়্যিতের জন্য দাফনের পূর্বে (অর্থাৎ জানাযা নামাযের পর) উভয় হাত উঠিয়ে মুনাজাত করা জায়িয।” কাশফ্ল্ ুগিত্বা, খুলাছাতুল্ ফাত্হ-এ উল্লেখ আছে,
فاتحہ ودعا برائے میت پیش ازدفن درست است وھمیں است بروایت معمولہ کذا فی خلاصۃ الفتح.
অর্থঃ- “দাফন করার পূর্বে অর্থাৎ জানাযার পর মাইয়্যিতের জন্য ফাতিহা পাঠ ও দোয়া করা জায়িয। এ রিওয়ায়েত অনুযায়ী আমল করা হয়েছে। খুলাছাতুল্ ফাত্হ’ নামক কিতাবে অনুরূপ আছে। অতএব, উপরোক্ত, দলীল ভিত্তিক আলোচনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, জানাযার পর দাফনের পূর্বে মৃত ব্যক্তির জন্যে দোয়া করা জায়িয। তবে জানাযার পর পরই কাঁতারে থেকে দোয়া করা মাকরূহ। এটাই আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসরণীয় ফক্বীহ ও ইমামগণের সঠিক ও গ্রহণযোগ্য ফতওযা। জানাযার পর মুনাজাত বিরোধীদের মনগড়া যুক্তি ও জিহালতপূর্ণ বক্তব্য এবং তার খন্ডনমূলক জাওয়াব-৫ মুনাজাত বিরোধীরা আরো অপপ্রচার করে থাকে যে, “জানাযার পর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয এটা কোন মুজতাহিদ আলিমের ফতওয়া নয়, বরং ছূফীগণের ফতওয়া। আর ফতওয়ার ক্ষেত্রে ছূফীগণের ফতওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।” মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্যের জবাবে বলতে হয় যে, মুনাজাত বিরোধীরা আলিমের সংজ্ঞা বা পরিচয় সম্পর্কে নেহায়েতই অজ্ঞ, যদি আলিম সম্পর্কে তাদের বিন্দুতমও জ্ঞান থাকতো, তবে তারা এরূপ কথা বলতে পারতো না। মূলতঃ ছূফীগণই হচ্ছেন প্রকৃত আলিম। ছূফী হওয়া ব্যতীত প্রকৃত আলিম হওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। কুরআন-সুন্নাহ পর্যালোচনা করলে এটাই স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। নিম্নে কুরআন-সুন্নাহর দৃষ্টিতে প্রকৃত আলিমের সংজ্ঞা ও পরিচয় তুলে ধরা হলো- আলিমের সংজ্ঞা উল্লেখ্য, عالم (আলিমুন) শব্দটি বারে, سمع-يسمع থেকে উদ্ভূত। উক্ত শব্দটি اسم فاعل বা কর্তৃবাচক। তার লোগাতী বা আভিধানিক অর্থ হলো- একজন জ্ঞানী পুুরুষ। আর ইস্তিলাহী বা পারিভাষিক অর্থে – আলিম তাকেই বলে, যিনি দ্বীনি ইল্ম তথা ইল্মে ফিক্বাহ ও ইল্মে তাছাউফের অধিকারী। অর্থাৎ কোন ব্যক্তি আলিম হতে হলে প্রথমতঃ তাকে ইল্মে ফিক্বাহ্ ও ইল্মে তাসাউফ উভয়টাই অর্জন করতে হবে। কেননা. হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,
العلماء ورثة الانبيا ء وان الانبياء لم يورثوا دينارا ولادرهما وانما ورثوا العلم.
অর্থঃ “নিশ্চয় আলিমগণ নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের ওয়ারিছ। আর নিশ্চয় নবী আলাইহিমুস্ সালামগণ কোন দীনার-দিরহাম রেখে যাননি। বরং ইল্ম রেখে গেছেন।” (তিরমিযী, আবু দাউদ, ইবনে মাযাহ্, আহ্মদ, মিশকাত, মায়ারিফুস্ সুনান, উরফুশ শাযী, বযলুল মাজহুদ, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ত্বীবী, আত্ তা’লীকুছ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব) উল্লেখ্য যে, নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণ ওয়ারিছ স্বত্ব হিসেবে দু’প্রকার ইল্ম রেখে গেছেন। অর্থাৎ ইল্মে ফিক্বাহ্ ও ইল্মে তাসাউফ। যে প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে,
العلم علمان فعلم فى القلب فذاك العلم النا فع وعلم على اللسان فذالك حجة الله عزوجل على ابن ادم.
অর্থঃ-“ইল্ম দু’প্রকার। (১) ক্বাল্বী ইল্ম (ইল্মে তাসাউফ) যা উপকারী ইল্ম, (২) জবানী ইল্ম (ইল্মে ফিক্বাহ্) যা আল্লাহ্ পাক-এর পক্ষ থেকে বান্দার জন্য দলীল স্বরূপ।” (দারিমী, বাইহাক্বী, দাইলামী, তারগীব ওয়াত তারহীব, তারীখ, আব্দুল বার, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত আশয়াতুল, লুময়াত, শরহুত্ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব) উপরোক্ত হাদীস শরীফ দ্বারা স্পষ্ট প্রমাণিত হলো যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ওয়ারিছ স্বত্ব হিসেবে ইল্মে ফিক্বাহ্ ও ইল্মে তাসাউফ উভয়টিই রেখে গেছেন। কাজেই যে ব্যক্তি উভয়টিই শিক্ষা করলো, সে ব্যক্তিই নায়িবে রসূল বা হাক্বীক্বী আলিম। উপরোল্লিখিত হাদীস শরীফের ব্যাখ্যায় ইমামে রব্বানী, মাহ্বুবে সুবহানী, কাইয়ুমে আউয়াল, হযরত মুজাদ্দিদে আল্ফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বিখ্যাত কিতাব “মাকতুবাত শরীফে” উল্লেখ করেন,
العلماء ورثۃ الانبیاء- علمیکہ از انبیاء علیہم الصلوات والتسلیمات باقی مانده است دونوع است علم احکام وعلم اسرار وورث کسی ہست کہاورا ہردو نوع علم سہم بود نہانکہ اورا ازیک نوع نصیب بود نہ از نوع دیگر کہان منافیوراثت است- چہ وراٹت را از جمیع انواع ترک مورث نصیب است نہ اذبعض وأنکہاورا ازمعین نصیب است د ا خل غرما است کہ نصیب اویجنس حق او تعلق گر فتہ است.
অর্থঃ- “আলিমগণ নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের ওয়ারিছ” এ হাদীস শরীফে বর্ণিত আলিম তারাই, যাঁরা নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের রেখে যাওয়া ইল্মে আহ্কাম (ইল্মে ফিক্বাহ্) ও ইল্মে আসরার (ইল্মে তাসাউফ) উভয় প্রকার ইল্মের অধিকারী। অর্থাৎ তিনিই প্রকৃত ওয়ারিছ বা স্বত্বাধিকারী। আর যে ব্যক্তি শুধুমাত্র এক প্রকার ইল্মের অধিকারী, সে ব্যক্তি নবী আলাইহিমুস্ সালামগণের প্রকৃত ওয়ারিছ নন। কেননা পরিত্যক্ত সম্পত্তির সকল ক্ষেত্রে অংশীদারী হওয়াকেই ওয়ারিছ বলে। আর যে ব্যক্তি পরিত্যক্ত সম্পত্তির কোন নির্দিষ্ট অংশের অধিকারী হয় তাকে গরীম বলে। অর্থাৎ সে ওয়ারিছ নয় গরীমের অন্তর্ভুক্ত।” হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর মিশকাত শরীফের বিখ্যাত শরাহ্ “মিরকাত শরীফে” উল্লেখ করেন যে, মালিকী মায্হাবের ইমাম হযরত ইমাম মালেক রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন,
من تفقه ولم يتصوف فقد تفسق ومن تصوف ولم يتفقه فقد تزندق ومن جمع بينهما فقد تحقق.
অর্থঃ- “যে ব্যক্তি ইল্মে ফিক্বাহ্ শিক্ষা করলো, কিন্তু ইল্মে তাসাউফ শিক্ষা করলো না, সে ফাসিক। আর যে ব্যক্তি ইল্মে তাসাউফ শিক্ষা করলো কিন্তু ইল্মে ফিক্বাহ্ শিক্ষা করলো না, সে যিন্দিক (কাফির)। আর যে ব্যক্তি উভয়টি শিক্ষা করলো, সে মুহাক্কিক তথা হক্কানী আলিম।” অর্থাৎ যে ইল্মে ফিক্বাহ্ শিখলো, কিন্তু ইল্মে তাসাউফ শিখলোনা, সে হচ্ছে ফাসিক। আর যে বলে আমি মা’রিফাত করি বা ইল্মে তাসাউফ করি কিন্তু শরীয়ত বা ফিক্বাহ্ স্বীকার করেনা, সে হচ্ছে যিন্দিক। আর যিনি উভয়টাই শিক্ষা করলেন, তিনি হচ্ছেন মুহাক্কিক অর্থাৎ হাক্বীক্বী আলিম। আলিম কাকে বলে ? দ্বিতীয়তঃ আলিম ঐ ব্যক্তিই যার অন্তরে তাক্বওয়া বা খোদাভীতি রয়েছে। অর্থাৎ যিনি আল্লাহ্ পাক-এর ভয়ে হারাম, নাজায়িয কাজ থেকে বিরত থাকেন। কেননা মহান আল্লাহ্ পাক পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,
انما يخشى الله من عباده العلماء.
অর্থঃ- “নিশ্চয় আল্লাহ্ পাক-এর বান্দাদের মধ্য হতে শুধুমাত্র আলিমগণই আল্লাহ্ পাককে ভয় করেন।” (সূরা ফাতির/২৮) এ আয়াত শরীফের তাফসীর জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, হাম্বলী মায্হাবের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমাম, ইমামুল আইম্মা, শায়খুল মুহাদ্দিসীন, হযরত আহ্মদ বিন হাম্বল রহমতুল্লাহি আলাইহিকে। তিনি এ আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বলেন, “যাঁর ভিতর যত বেশী খোদাভীতি রয়েছে তিনি ততবড় আলিম।” উক্ত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে খোলাছায়” উল্লেখ আছে যে,
“العلماء” سے اصطلاحی عالم یعنی کتابین پرہ لینے والے مراد نھین. بلکہ کبریائے ذات وعظمت صفات کونور ایمان شمع عرفان سے دیکھنے والے اسلئے کہ اصحاب رسول صلی اللہ علیہ وسلم و ارباب ولا یت وقبول سبکے سب علماء کتابی نہ تھی گو اونکا علم نا فع اعلی در جے کا تھا.
অর্থঃ- উক্ত আয়াত শরীফে “العلماء শব্দ দ্বারা কিতাব সমূহ পাঠকারী তথা (দাওরা বা টাইটেল পাশকারীদেরকে) বুঝানো হয়নি। বরং কুরআন শরীফে বর্ণিত “আলিম” তারাই, যারা মহান আল্লাহ্ পাক-এর মহিমাময় জাত ও অসীম গৌরবময় ছিফাত সমূহকে ঈমান ও মারিফতের নূরের আলোকে অবলোকন করেছেন। কেননা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রিয়তম ছাহাবী আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ ও (পূর্ববর্তী) বিলায়েতপ্রাপ্ত ও মকবুল ওলীআল্লাহ্গণ কিতাবী তথা দাওরা বা টাইটেল পাশ আলিম ছিলেন না। তথাপিও তাঁরা সর্বোচ্চ স্তরের উপকারী ইল্মের অধিকারী ছিলেন। অর্থাৎ তারাই কুরআন শরীফে বর্ণিত প্রকৃত আলিম ছিলেন। উল্লিখিত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় বিখ্যাত আলিম, ইমামুল মুফাস্সিরীন, হযরত ইবনে কাছীর রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর প্রসিদ্ধ “তাফসীরে ইবনে কাছীরে” উল্লেখ করেন,
عن ابن مسعود رضى الله عنه انه قال ليس العلم عن كثرء الحن يث ولكن العلم عن كثرة الخ شية وقال احمد بن صالح المصرى عن ابن وهاب عن مالك قال ان العلم ليس لكثرء الروا ية وانما العلم نوريجعله الله تعالى فى القلب.
অর্থঃ- “হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, যে ব্যক্তি অধিক হাদীস জানে সে ব্যক্তি আলিম নয়। বরং যাঁর মধ্যে আল্লাহ্ভীতি অধিক সে ব্যক্তিই আলিম। আর আহ্মদ বিন ছালেহ্ মিছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, অধিক রেওয়ায়েত শিক্ষা করলেই আলিম হওয়া যায়না। মূলতঃ ইল্ম হচ্ছে নূর বা জ্যোতি স্বরূপ। আল্লাহ্ পাক তা মানুষের অন্তকরণে দান করেন।” উক্ত “তাফসীরে ইবনে কাছীরে” উল্লেখিত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যায় আরো উল্লেখ আছে যে,
قال سفيان الثورى … العلماء ثلاثة عالم بالله وعالم لبا مر الله وعالم بالله ليس بعالم بامرالله وعالم بامر الله ليس بعالم بالله. فالعالم بالله وبامر الله الذى يخشى الله تعالى ويعلم الحدود والفرائض.
অর্থঃ হযরত ইমাম সুফিয়ান ছাওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আলিমগণ তিনভাগে বিভক্ত। (১) আলিম বিল্লাহ্ অর্থাৎ যারা শুধু আল্লাহ্ পাককেই জানে। কিন্তু তাঁর হুকুম-আহ্কাম সম্পর্কে অজ্ঞ। (২) আলিম বিআমরিল্লাহ্। অর্থাৎ যারা শুধু হুকুম-আহ্কাম সম্পর্কে জানে। কিন্তু আল্লাহ্ পাক সম্পর্কে অজ্ঞ বা আল্লাহ্ভীতি নেই। (৩) আলিম বিল্লাহ্ ওয়া বিআমরিল্লাহ্। অর্থাৎ যাঁরা আল্লাহ্ পাক ও তাঁর শরীয়তের হুকুম-আহ্কাম ও ফারায়েজ সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত এবং আল্লাহ্ পাককে ভয় করেন। (তাঁরাই হাক্বীক্বী বা প্রকৃত আলিম।) তৃতীয়তঃ ঐ ব্যক্তিই হাক্বীক্বী আলিম যিনি অর্জিত ইল্ম অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,
من ارباب العلم؟ قال الذين يعملون بما يعلمون قال فما اخرج العلم من قلوب العلماء؟ قال الطمع
অর্থঃ- “(আমীরুল মু’মিনীন, হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত কা’ব ইবনুল আহ্বার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন) আলিম বা ইল্মের অধিকারী কে? তিনি উত্তরে বললেন, যাঁরা ইল্ম অনুযায়ী আমল করে। হযরত ওমর ইবনুল খাত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পুনরায় জিজ্ঞেসা করলেন, কোন্ জিনিস আলিমদের অন্তর থেকে ইল্মকে বের করে দেয়? তিনি উত্তরে বললেন, লোভ অর্থাৎ দুনিয়ার সম্পদ, সম্মান ইত্যাদি হাছিলের আকাঙ্খা।” (দারিমী, মিশকাত, মিরকাত, লুময়াত, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত্ ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ্, মুযাহিরে হক্ব, মিরয়াতুল মানাজীহ্) বিশিষ্ট তাবেয়ী, আমীরুশ্ শরীয়ত ওয়াত্ব তরীক্বত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলো- আলিম কে? তিনি জবাবে বলেন,
انما الفقيه الزاهد فى الد نيا والراغب الى الاخرة والبصير بذنبه والمداؤم على عبادة ربه والوارع الكف عن اعرض المسلمين والعفيف عن اموالهم والنا صح لجماعتهم.
অর্থঃ- “ফক্বীহ্ বা আলিম হলের ঐ ব্যক্তি, যিনি যে দুনিয়া হতে বিরাগ, পরকালের প্রতি ঝুঁকে আছেন, গুণাহের প্রতি সতর্ক, সর্বদা মহান আল্লাহ্ পাক-এর ইবাদতে মশগুল, পরহিজগার বা সুন্নতের পাবন্দ, মুসলমানের মান-সম্মান নষ্ট করেন না, তাদের সম্পদের প্রতি লোভ করেন না এবং তাঁর অধীনস্থদেরকে নছীহত করেন।” উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, ছূফীগণই প্রকৃত আলিম বা ওরাছাতুল আম্বিয়া, কেননা একমাত্র ছূফীগণই ইলমে ফিক্বাহ ও ইলমে তাছাউফের অধিকারী। অতএব, প্রকৃত আলিমদেরই ফতওয়া হলো- জানাযার পর কাঁতার ভঙ্গ করে দোয়া করা জায়িয। সুতরাং মুনাজাত বিরোধীদের উক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা ও দলীলবিহীন এবং কুরআন সুন্নাহ বিরোধী বলেই প্রমাণিত হলো। মূলকথা মূলকথা হলো, জানাযার পর দোয়া করা যে জায়িয এ ব্যাপারে কোন দলীলেরই প্রয়োজন নেই। কেননা শরীয়তের মশহুর উছূল রয়েছে যে, শরীয়তের যে বিষয়ে কুরআন সুন্নাহর আদেশও নেই নিষেধও নেই, সে বিষয়টি মোবাহ অর্থাৎ জায়িয। মুনাজাত বিরোধীদের নিকট প্রশ্ন-জানাযার নামাযের পর দোয়া করার ব্যাপারে কুরআন-সুন্নাহর কোথাও নিষেধ করা হয়েছে কি? অর্থাৎ মুনাজাত বিরোধীরা প্রমাণ করতে পারবে কি? যে, কুরআন ও হাদীসের কোথাও জানাযার পর মুনাজাত করতে নিষেধ করা হয়েছে। যদি এরূপ কোন প্রমাণ না-ই থাকে তবে কি করে মুনাজাতকে নাজায়িয বলা যেতে পারে? মূলতঃ এটাকে নাজায়িয বলার অর্থই হলো শরীয়তের সর্বজন স্বীকৃত উছূলকে অস্বীকার করা। সুতরাং মুনাজাত বিরোধীরা যদি এটাকে নাজায়িয বলতে চায় তবে তাদেরকে অবশ্যই এরূপ কোন আয়াত বা হাদীস দলীল হিসেবে পেশ করতে হবে যেখানে জানাযার পর দোয়া করতে নিষেধ করা হয়েছে। নচেৎ তাদের বক্তব্য মোটেও গ্রহণযোগ্য হবেনা। বরং সম্পূর্ণই পরিত্যাজ্য। পরিশিষ্ট মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ১০১, ১০২, ১০৩, ১০৪, ১০৫, ১০৬, ১০৭, ১০৮, ১০৯, ১১০ এবং বর্তমান ১১১তম সংখ্যার বিস্তারিত দলীল-আদিল্লা ভিত্তিক আলোচনা থেকে এটাই প্রমাণিত হলো যে, জানাযা নামাযের পূর্বে, পরে এবং দাফনের পরে দোয়া মুনাজাত করার অস্তিত্ব, হুকুম-আহকাম কুরআন শরীফ, তাফসীর, হাদীস শরীফ, শরাহ, ফতওয়া ও ফিক্বাহ তথা শরীয়তে বিদ্যমান রয়েছে। নিম্নে এই বিশদ আলোচনার সার সংক্ষেপ উপস্থাপন করা হলো- ১. শরীয়তের দলীল হচ্ছে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াস।” ২. শরীয়তে জানাযার পর কাঁতার ভঙ্গ করে সম্মিলিতভাবে হাত উঠিয়ে নিজের ও মাইয়্যিতের জন্য দোয়া করা সুন্নত ও জায়িয। মাকরূহ, বিদয়াত, নাজায়িয ও হারাম মোটেও নয়। ৩. ইন্তিকালের পর জানাযার পূর্বে এবং দাফনের পর নিজের ও মাইয়্যিতের উদ্দেশ্যে দোয়া-ইস্তিগফার করাও সুন্নত ও জায়িয। ৪. জানাযা নামাযের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফাযাইল-ফযীলত এমন যে, এটা মু’মিন-মুসলমানগণের জন্য রহমত, বরকত ও শান্তি স্বরূপ। ৫. ইন্তিকালকৃত ব্যক্তির জন্য জানাযা আদায়কারীগণের সুপারিশসমূহ কবূল করা হয়। ৬. কমপক্ষে তিন কাঁতারে মাইয়্যিতের জানাযা পড়লে তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যায়। বেজোড় কাঁতার সুন্নত। ৭. যে ব্যক্তি শুধু জানাযা নামায পড়ল কিন্তু দাফন করা পর্যন্ত থাকল না সে এক ক্বীরাত সওয়াব পাবে। আর যে নামায পড়ার পর দাফনও সমাধা করল সে দুই ক্বীরাত ছওয়াব পাবে। আর ক্বীরাত হচ্ছে উহুদ পাহাড় পরিমাণ ছওয়াব। ৮. জানাযা নামায পড়ার কারণেই মাইয়্যিতের প্রতি পূর্ণ কর্তব্য পালিত হয়ে থাকে। ৯. জানাযা নামায ফরযে ক্বিফায়াহ। এ বিষয়ে উম্মতের ইজ্মা’ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই এটার অস্বীকারকারী কাফির হবে। যদি একজন পুরুষ বা একজন মহিলাও জানাযা আদায় করে, তবে সকলের পক্ষ থেকেই ফরযিয়াত আদায় হবে। আর যদি কেউই আদায় না করে, তবে সকলেই গুণাহ্গার হবে। জানাযা নামাযের জন্য জামায়াত শর্ত নয়। ১০. হানাফী মাযহাব মুতাবিক জানাযা নামায আদায় করার সুন্নত তরীক্বা (নিয়ম) হচ্ছে- প্রথমতঃ জানাযা নামাযের নিয়ত করতে হবে, দ্বিতীয়তঃ প্রথম তাকবীর বলে তাহরীমা বেঁধে ছানা পড়বে, তৃতীয়তঃ দ্বিতীয় তাকবীর বলে দরূদ শরীফ পড়বে, চতুর্থতঃ তৃতীয় তাকবীর বলে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া পাঠ করবে, পঞ্চমতঃ চতুর্থ তাকবীর বলে সালাম ফিরাবে, ষষ্ঠতঃ শুধু প্রথম তাকবীরেই হাত উঠাবে, আর শুধু ইমাম ছাহেব উচ্চ আওয়াযে তাকবীর দিবেন, প্রয়োজন হলে মুকাব্বিরও উচ্চ আওয়াযে তাকবীর বলতে পারেন। ১১. জানাযা মূলতঃ “ছলাত বা নামায” জানাযাকে দোয়া বলা অজ্ঞতা ও গোমরাহী। কারণ, কুরআন শরীফের আয়াত, হাদীস শরীফ, শরাহ, ফিক্বাহ ও ফতওয়ার কিতাব সমূহে জানাযাকে “ছলাত বা নামায বলেই অসংখ্য স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে। ১২. কাফির, মুশরিক, মুনাফিক ইত্যাদি লোকদের জানাযা পড়া জায়িয নেই, বরং হারাম ও নাজায়িয। কিন্তু মু’মিন, মুসলমান ও ফাসিক ব্যক্তির জানাযা পড়তেই হবে। এ বিষয়ে কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ, ইজ্মা ও ক্বিয়াসে নির্দেশ এসেছে। ১৩. কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফে দোয়ার অসংখ্য ফাযাইল-ফযীলত বর্ণিত আছে। তাই, নামাযের পূর্বে, পরে এবং দাফনের পর ক্বিয়ামত পর্যন্ত যেকোন সময় দোয়া করলেই আল্লাহ্ পাক নির্ঘাত কবূল করে নেয়ার ওয়াদা দিয়েছেন। ১৪. নামাযের পর উভয় হাত তুলে ইজ্তিমায়ী বা সম্মিলিতভাবে দোয়া মুনাজাত করা জায়িয ও সুন্নতের অন্তর্ভুক্ত। ১৫. মাইয়্যিতের জন্য ঈছালে ছওয়াব করা হলে তাতে মাইয়্যিত উপকৃত হয়। আর ঈছালে ছওয়াবের উদ্দেশ্যে কুরআন খতম, কলমা শরীফ, দোয়া-কালাম, মাহ্ফিল ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা জায়িয ও বরকতের কারণ। ১৬. হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাযা নামাযের পর দাফনের পূর্বে মাইয়্যিতের জন্য দোয়া-করেছেন বলে হাদীস শরীফে বর্ণনা পাওয়া যায়, তাই তা সুন্নত। বিদয়াত মোটেও নয়। এই সুন্নত অস্বীকারকারীরাই বিদ্য়াতী। ১৭. শরীয়তে আম দলীল দিয়ে খাছ বিষয় প্রমাণিত হয় এবং হয়েছে। যেমন, তারাবীহ, দ’ুঈদের নামাযের পর মুনাজাত করার বিষয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আমল উল্লেখ নেই। তারপরে ইমাম-মুজতাহিদগণ আম দলীলের উপর ভিত্তি করে খাছ বিষয় তথা তারাবীহ ও দু’ঈদের নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাতকে জায়িয বলেছেন। ১৮. জানাযা মূলতঃ নামায, দোয়া নয়। এর মূল উদ্দেশ্য দোয়া ধরে নিলেও এরপর দোয়া করা প্রমাণিত হয়। কারণ, শরীয়তের এমন কোথাও কি জানাযার পর দোয়াকে নিষেধ করা হয়েছে? অবশ্যই না। যদি নিষেধ না-ই থাকে, তবে দোয়া করতে বাধা কোথায়? অর্থাৎ জানাযার ভিতরে দোয়া করা হলেও এরপর দোয়া করাও জায়িয ও সুন্নত। ১৯. নির্ভরযোগ্য ফিক্বাহ্র কিতাবে জানাযার পর দোয়া করাকে জায়িয বলা হয়েছে। অর্থাৎ সালামের পর কাঁতার ভঙ্গ করা জায়িয। তবে যদি কাঁতারে দাঁড়িয়ে দোয়া করে, তবে নামাযের মুশাবাহাতের কারণে তা মাকরূহ ফতওয়া দেয়া হয়েছে। যা আমাদেরও মত। ২০. ফতওয়ার ক্ষেত্রে যারা ইল্মে শরীয়ত ও মা’রিফাতে পারদর্শী তথা আলিম ছূফী ও মুজতাহিদ তাদের কথাই গ্রহণযোগ্য। কারণ, যাঁরাই আলিম, মুজতাহিদ তাঁরাই ছূফী। আর যাঁরাই ছূফী তাঁরাই আলিম ও মুজতাহিদ। ছূফী ও আলিম আলাদা কেউ নন। যা কুরআন শরীফ, হাদীস শরীফ ও তাছাউফের কিতাবের স্পষ্ট বর্ণনা সাপেক্ষে প্রমাণিত। মহান আল্লাহ্ পাক রব্বুল আলামীন আমাদের সকলকে জানাযা নামাযের পূর্বে, পরে কাঁতার ভঙ্গ করে এবং দাফনের পরে দোয়া-মুনাজাত করা যে জায়িয ও সুন্নত এ বিষয়ে আক্বীদা শুদ্ধ করে তা আমলে বাস্তবায়নের মাধ্যমে আল্লাহ্ পাক এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ সন্তুষ্টি, রেযামন্দী, মুহব্বত, মা’রিফত ও নাজাত হাছিল করার তাওফিক দিন। (আমীন) য (সমাপ্ত)